বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
টলিউডের গ্ল্যামারক্যুইন কোয়েল মল্লিক ইদানীং অন্য ধারার ছবিতে মনোনিবেশ করেছেন। সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের মতো পরিচালকদের সঙ্গেই কাজ করতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। সায়ন্তন, অভিমন্যুর মতো নবীন পরিচালকও রয়েছেন কোয়েলের পছন্দের মধ্যে। এবার সেই তালিকায় এসে গেলেন আর এক নবীন পরিচালক সৌকর্য্য ঘোষাল। ‘রেনবো জেলি’ দেখে সৌকর্য্যের কাজ পছন্দ হয় কোয়েলের।এরপর সৌকর্য্য নিজে যখন চিত্রনাট্য নিয়ে হাজির হন কোয়েলের কাছে তখন পছন্দ হয় অভিনেত্রীর। অতএব আর না ভেবে সৌকর্য্যের ছবিতে কাজ করতে রাজি হন। ‘পেন্ডুলাম’, ‘লোডশেডিং,’ ‘রেনবো জেলি’র পর সৌকর্য্যের নতুন ছবি রহস্যে ঘেরা-রক্তরহস্য। সৌকর্য্য নিজে অবশ্য ছবিটিকে ইমোশনাল থ্রিলার বলছেন। ছবির শেষদিনের শ্যুটিং দেখতে আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম সেটে। দক্ষিণ কলকাতার বিবেকানন্দ পার্ক সংলগ্ন রাস্তায় চলছিল শ্যুটিং পর্ব। রাস্তার ধারে চায়ের দোকান ও মন্দিরকে কেন্দ্র করে চলছিল কাজ। সেখানেই শটের ফাঁকে পরিচালক শোনালেন ছবির গল্প সহ প্রথমবার একজন স্টারের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতার কথা। ‘গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র স্বর্ণজা- পেশায় রেডিও জকি। ওর জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করেই গল্পে রহস্য দানা বাঁধে। নিজেই বুদ্ধি দিয়ে সেই রহস্য ভেদ করে মেয়েটি। তবে স্বর্ণজা কোনওভাবেই ডিটেকটিভ নয়,বদলে খুব আবেগপ্রবণ। একজন স্টারকে নিয়ে ছবি করার ক্ষেত্রে চরিত্রটাও তেমনি তৈরি করতে হয়। স্বর্ণজাকে আমি যেভাবে ভেবেছিলাম কোয়েল তাতে নিজের ভাবনা,অভিনয় যোগ করে চরিত্রটাকে আরও জীবন্ত করে তুলেছেন।’ শেষদিনের শ্যুটিংয়ে বেশিরভাগ দৃশ্যই ছিল কোয়েলের। সিনের বিরতিতে মেকআপ ভ্যানে সাক্ষাৎকার দিলেন স্বভাবসিদ্ধ হাসিখুশি মেজাজে। ‘ছবিটা ইমোশনাল থ্রিলার। এই ধরনের বিষয়ে বাংলায় খুব একটা কাজ হয় না। সৌকর্য্য চিত্রনাট্যে যেভাবে চরিত্রগুলোকে বিশ্লেষণ করেছেন সেটা আমার খুব পছন্দ হয়। কাজটা করতে গিয়ে সৌকর্য্যর দক্ষতাও দেখলাম। দৃশ্যের মাঝে আমাকে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক অবধি বলে দিয়েছেন। আমরা অভিনেতারা সাধারণত ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক কি হবে সেটা শ্যুটিংয়ের সময় জানতে পারি না।’ ছবির গল্প পাঁচ বছর বিস্তৃত।এই সময়ে স্বর্ণজা চরিত্রের নানা ওঠাপড়া ধরা হয়েছে গল্পে। ‘যে কোনও শিল্পীর মতোই আমারও নিজের শিল্পসত্ত্বাকে নানা ভাবে মেলে ধরার খিদেটা রয়েছে। এতো বছর ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছি,অসংখ্য গ্ল্যামারাস চরিত্রে অভিনয় করেছি। কিন্তু এখনও অনেক ধরনের কাজ করা বাকি আছে। তেমনই কিছু কাজ এখন করছি। স্বর্ণজা চরিত্রটা করতে গিয়ে অনেক সময়ই আমার আমিটাকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। এই ছবির গল্প বা তার চরিত্র কোনওটাই আমার আগের কাজের সঙ্গে মিলবে না।’ নিশপাল সিং রানের স্ত্রী কোয়েল। সেই অর্থে সুরিন্দর ফিল্মস প্রযোজিত ‘রক্তরহস্যে’র প্রযোজকও কোয়েল। অভিনেত্রী- প্রযোজক, তাই দায়িত্ব ছবিতে কিছুটা হলেও বেশি। বললেন কোয়েল নিজেই,‘ক্যামেরার সামনে কোনও পার্থক্য নেই। অন্য প্রযোজনাতে যে কাজটা করি এখানেও সেটাই করছি। তবে নিজের ঘরের ছবি হলে মনের টানটা একটু হলেও বেড়ে যায়। সেটে সবকিছু ঠিকঠাক চলছে কিনা সেটা একটু বাড়তি টেনশন থাকে। আসলে প্রযোজক হিসাবে আমি এখনও নার্সারির ছাত্রী।’ ছবিতে অন্যান্য ভূমিকায় দেখা যাবে চন্দন রায় সান্যাল, বাসবদত্তা, লিলি চক্রবর্তী, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় প্রমুখকে। ছবি মুক্তি পেতে এখনও বেশ কিছুটা সময় বাকি। তবে কোয়েল-সৌকর্য্য যুগলবন্দিতে দর্শক যে নতুন রহস্যের সন্ধান পাবে তা এখন থেকেই আঁচ করা যাচ্ছে।