শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহ বৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে ... বিশদ
ফলের রাজা আম। সর্বজনবিদিত এই ফলের মোহময়ী স্বাদের ফাঁদে প্রায় প্রতিটি মানুষই বন্দি। তবে আমকে কেবল স্বাদের বাঁধুনিতে বেঁধে ফেললে চলবে না। এই ফলের খাদ্যগুণও কিন্তু কম নয়। আমে রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, পটাশিয়াম ইত্যাদি। তাই শরীরের স্বাভাবিক পুষ্টিতে এই রসাল ফলের যথেষ্ট অবদান আছে। এছাড়া আমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই রোগ প্রতিরোধেও এর বড় ভূমিকা রয়েছে।
ডায়াবেটিস ও আম (Diabetes and mango)
একজন ডায়াবেটিস আক্রান্তের সবথেকে বেদনার বিষয় হল খাবারে বিধিনিষেধ। সুগারে আক্রান্ত হওয়ার পরেই একর পর এক জিভে জল আনা খাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ যেতে শুরু করে। এই ‘না’-এর তালিকায় রয়েছে আমও। আসলে এই ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোড অনেকটাই বেশি। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৫৬ থেকে ৬০ এর মধ্যে এবং গ্লাইসেমিক লোড ১৮ থেকে ১৯-এর ভিতর। পুষ্টিবিজ্ঞানের এই বিশেষ অঙ্ক বুঝিয়ে দিচ্ছে, আম খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে। তাই সুগার রোগীকে এই ফল থেকে দূরে থাকতে বলা হয়। এমনকী যাঁদের সুগার হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি (প্রিডায়াবেটিক) তাঁদেরও আমের সঙ্গে খানিকটা দূরত্ব রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সুগার রোগী কি একদমই আম খাবেন না?
এই প্রশ্নের উত্তর হল, রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকলে পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো মাসে কয়েকবার অনায়াসে আম খাওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে এই কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে—
ডায়াবেটিস (Diabetes) রোগীর রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য সারাদিনে গৃহীত ক্যালোরির উপর সতর্ক নজর রাখতে হয়। রোগীর রক্তে সুগারের মাত্রা ও তাঁর কাজের ধরন দেখে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ মতো পুষ্টিবিদ রোগীর ক্যালোরির চাহিদা নির্দিষ্ট করেন। সেই ক্যালোরি চাহিদা অনুযায়ীই তৈরি করতে হয় ডায়েট প্ল্যান। এবার কোনও ব্যক্তির ডায়েট প্ল্যানে কোনও একটি সময়ে আম রাখা হলে তখনকার খাবারের তালিকা থেকে সমপরিমাণ কার্বোহাইড্রেট বাদ দেওয়া হয়। এই উপায়েই করতে হয় ব্যালেন্স। একটা উদাহরণ দেওয়া যাক— ধরুন কোনও ডায়াবেটিস রোগী সকালে একফালি আম খাবেন বলে মনস্থির করলেন। এক্ষেত্রে একফালি আম খেলে তাঁকে একটা রুটি কম খেতে হবে।
দুপুরে বা রাতের খাবারের সঙ্গে আম না খাওয়াই ভালো। বরং সকালের ব্রেকফাস্টে আম রাখা যেতে পারে। প্রাতঃরাশে আম খেতে হলে ডায়েটের যোগ করতে হবে হাই ফাইবার ফুড। এক্ষেত্রে সব্জি সহযোগে ওটসের উপমা, ডালিয়া খাওয়া যেতে পারে। সঙ্গে এক টুকরো আম খাওয়া যায়। পুষ্টিবিদের পরামর্শ মতো এই পদ্ধতিতে আম খাওয়া যেতে পারে।
এই ঋতুতে আমের ব্যবহার সর্বত্র। আমের চাটনি, আমপান্না, আমদই...। তবে দুঃখের বিষয় হল, এই ধরনের খাবার তৈরির সময় আলাদা করে চিনি মেশানো হয়। তাই সুগার রোগীকে এই ধরনের খাবার থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
আম সস্তা বলে বা আম খেতে ভালো লাগে বলে কেবল আমের দিকে মনোযোগ দিলেই চলবে না। সঙ্গে অন্যান্য মরশুমি ফলও খেতে হবে। তবে মিলবে পুষ্টি।
আর অবশ্যই আম খাওয়ার আগে একজন চিকিৎসক বা ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিন। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো চললেই রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।