শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহ বৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে ... বিশদ
কলাকুশলীদের সংগঠন ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ান্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার অভিযোগ, এই ধারাবাহিকগুলির শ্যুটিং বাড়ি থেকে করার নাম করে আদতে হোটেল, গুদামঘর, ভাড়া বাড়ি, অতিথিশালা ও নদীর পাড়ে সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করেই করা হয়েছে। ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘কলাকুশলীরা এইসব ধারাবাহিকের সঙ্গে কোনও রকম সহযোগিতা করবে না।’ প্রযোজকদের তরফে জানানো হয়েছিল, এই সময়ের মধ্যেও কলাকুশলীরা পারিশ্রমিক পাবেন। এ বিষয়ে স্বরূপবাবুর বক্তব্য, ‘পারিশ্রমিক ইতিমধ্যেই কয়েকজন ফিরিয়ে দিয়েছেন। বাকিরাও ফিরিয়ে দেবেন। কারণ, কাজ না করে কোনও কলাকুশলী পারিশ্রমিক নেবেন না।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, এই শ্যুট ফ্রম হোমের সঙ্গে কোনও কলাকুশলী কোনওভাবে যুক্ত ছিলেন না। এদিকে, প্রযোজকদের সংগঠনের তরফে শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘আমাদের কিছুই জানানো হয়নি এই শ্বেতপত্রের ব্যাপারে। বুধবার থেকে স্টুডিওতে কল টাইম মেনে ডাকা হবে। কেউ না এলে তার জায়গায় অন্য কেউ কাজ করবেন।’ ইতিমধ্যেই রাজ্যে মুখ্যসচিব জানিয়ে দিয়েছেন, আউটডোর ও ইন্ডোর শ্যুটিং ৫০ জনের উপস্থিতি নিয়ে করা যেতে পারে। অর্থাৎ, বুধবার থেকে শ্যুটিংয়ে ছাড়পত্র মিলেছে টলিপাড়ায়। আর তার আগেই প্রযোজক বনাম ফেডারেশন দ্বন্দ্ব চরমে।
সোমবার টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে সাংবাদিক সম্মেলনে করে প্রযোজকদের সংস্থার কাছে শ্বেতপত্র দাবি করেছে ফেডারেশন। এই শ্বেতপত্রের জন্য আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। ফেডারেশনের মূল প্রশ্ন হল, এক, প্রযোজকদের শ্বেতপত্র দিয়ে জানাতে হবে, তাঁরা বাড়ির বাইরে কোথাও শ্যুটিং করেননি। দুই, সাম্প্রতিককালে শ্যুট হওয়া ধারাবাহিকে উপযুক্ত সিনে লাইট প্রয়োগ করা হয়েছে বলে ফেডারেশনের দাবি। বাড়ি থেকে এই পেশাদার আলো কীভাবে ব্যবহৃত হল, তার উত্তর দিতে হবে। তিন, ফেডারেশনের দাবি, অভিজ্ঞ ভিডিওগ্রাফাররা তাঁদের জানিয়েছেন সম্প্রচারিত হওয়া এপিসোড অনেকটাই মোবাইল ক্যামেরায় শ্যুট করা নয়। বরং উন্নততর ক্যামেরায় শ্যুট করা। পেশাদার ভিডিওগ্রাফার ছাড়া এই শ্যুট বাড়ি থেকে কীভাবে সম্ভব জানাতে হবে। চার, শব্দগ্রহণের ক্ষেত্রেও পেশাদারিত্বের ছাপ পেয়েছে ফেডারেশন। পেশাদার ব্যক্তি ছাড়া কীভাবে শব্দগ্রহণ সম্ভব হল জানাতে হবে। পাঁচ, মেকআপ ও হেয়ার স্টাইলের ক্ষেত্রেও পেশাদারিত্বের ছোঁয়া পাওয়া গিয়েছে বলে ফেডারেশনের অভিযোগ। ছয়, অভিনেতাদের সুনির্দিষ্ট প্রপ ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে। সেগুলি তাঁরা কোথা থেকে পেয়েছেন, সেটাও জানাতে হবে। সাত, ধারাবাহিক সম্পাদনার কাজ কোথা থেকে করা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্বরূপ বিশ্বাসরা।
এমনকী, এদিন পর্দায় ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করে তাঁরা প্রশ্ন করেছেন, ‘জীবনসাথী’ ধারাবাহিকে সমুদ্রের ধারে কীভাবে শ্যুটিং হল? ‘ধ্রুবতারা’ ধারাবাহিকে ১০ বছরের কম বয়সি শিল্পীকে নিয়ে কীভাবে শ্যুটিং করা হয়েছে? ফেডারেশনের প্রশ্ন, এই মুহূর্তে টেলিভিশনের পর্দায় নিম্নমানের কাজ সম্প্রচারিত হচ্ছে। চ্যানেলের টেকনিক্যাল চেকিং সিস্টেম কেন সেই মানকে ছাড়পত্র দিচ্ছে? পাশাপাশি, তাঁদের আশঙ্কা, কলাকুশলীদের ছাড়া যদি এভাবে কাজ চলতে থাকে, তাহলে টলিপাড়ার বিপুল সংখ্যক কলাকুশলীর কাজ হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে। অথচ, ধারাবাহিকের টাইটেল কার্ডে যে কলাকুশলীদের নাম দেখানো হচ্ছে, তাঁরা এই মুহূর্তে কাজ করছেন না।
আর্টিস্ট ফোরামের কাছে ফেডারেশনের প্রশ্ন, আর্টিস্ট ফোরাম বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, প্রযোজকদের কাছ থেকে সকল কলাকুশলী বকেয়া মাসিক বেতন পাবেন। তবে প্রযোজকদের তরফে ফেডারেশনকে এই বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি বলে দাবি স্বরূপ বিশ্বাসদের। ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক শিল্পী দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কাজ করেন। তাঁদের ক্ষেত্রে কী হবে, প্রশ্ন ফেডারেশনের।