হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্তে বিপদে পড়তে পারেন। চলচিত্র ও যাত্রা শিল্পী, পরিচালকদের শুভ দিন। ধনাগম হবে। ... বিশদ
কড়া নাড়ার আগেই যেন দরজা খুলে গেল। হাট করা দরজার ওপারে বঁড়শি, এপারে সহজ। সহজের থেকে তিন সিঁড়ি নীচে দাঁড়িয়ে মিমি। মিমির দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাল বঁড়শি, ভাবটা এমন, সঙ্গে করে এবার কাকে নিয়ে এসেছে? আগের বার তো ছিল ছাত্রী।
সহজ বলল, ‘উনি আছেন?’
মিমির দিকে অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে বঁড়শি বলল, ‘আমি আছি। আমাকে দিয়ে হবে না?’
বঁড়শির তরল কথা এড়িয়ে গেল সহজ, বলল, ‘আমার বোন, ক্যাপ্টেনের সঙ্গে একটু কথা বলবে।’
বঁড়শি তার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ঠোঁট বাঁকাল, ‘নিজের মায়ের পেটের বোন, না পাতানো।’
বঁড়শির এই বাঁকানো আর বুনো কথা শুনে পিছনে দাঁড়িয়ে নাক সিঁটকাল মিমি।
সহজ হাসল, ‘আমার একটি মাত্র বোন।’
কথাটা শুনেই একটু চমকে উঠল বঁড়শি। যে ভঙ্গিতে দরজা আটকে আড়াল করে দাঁড়িয়েছিল, দ্রুত সরে জায়গা দিয়ে মিমির দিকে তাকাল। ‘এসো বোন এসো। উনি ঘরে আছেন, এসো।’
বঁড়শি সরে গেলে সহজ ঢুকে পড়ল ঘরের ভেতর। কিন্তু মিমি ইতস্তত করছে ঢুকবে, কি ঢুকবে না। বঁড়শি কিন্তু তারমধ্যেই আবার তাকে ডাকল, ‘এসো।’ তবু মিমি আর বঁড়শির দিকে তাকাল না, সে মুখ চোখ কুঁচকে সহজকে খুঁজছিল। কী ইডিয়েট! নিজে হুড়মুড় করে ঢুকে গেল তাকে এই আনকালচার্ড মহিলার হাতে ছেড়ে।
বঁড়শি বলল, ‘তোমার দাদা ওঁর ঘরে গিয়েছে—তুমি আমার সঙ্গে এসো।’ মিমি এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বঁড়শির পিছন পিছন চলল।
ঘরের সামনে এসে মিমি একটা অদ্ভুত দৃশ্য দেখল, একটা দড়ি পাকানো চেহারার বৃদ্ধলোক শতরঞ্চির ওপর পাক খেতে খেতে গড়াচ্ছে। আর সহজ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছে। এই লোকটাই জ্যোতিষী! এ এমন মেঝেতে পাক খাচ্ছে কেন?
লোকটা বঁড়শির পিছনে মিমিকে দেখেই চিৎকার করল, ‘জিনস! জিনস! চেয়ারে বোসো। নীচে বসলেই ফেঁসে যাবে।’
ততক্ষণে শতরঞ্চির এক ধারে সহজ বসে পড়েছে। মিমি কিন্তু দাঁড়িয়েই থাকল। ওর হাত ধরে ওকে একটা চেয়ারে বসাল বঁড়শি। পুরো ব্যাপারটা মিমির ঠিক ভালো লাগছে না। এইরকম যে হবে মিমি ভাবেনি। সে গেলেই আতস কাচ দিয়ে একজন তার হাতের রেখা না দেখলেও, অন্তত একজন সভ্যভব্য মানুষ তো তার হস্তরেখা দেখবে। আর এখানে এই একটা কিম্ভূতকিমাকার লোক এমনভাবে গড়িয়ে যাচ্ছে!
বঁড়শি বলল, ‘তুমি অবাক হোয়ো না, ওকে সারা রাত ধরে পাকে পাকে ঘুম জড়িয়ে ধরেছিল, এখন ও পাক দিয়ে দিয়ে ছাড়াচ্ছে।’
মিমি বিড়বিড় করল, ‘হোয়াট!’
বঁড়শি বাঁকা গলায় বলল, ‘আমি তো ওকে জড়িয়ে ধরি না, জড়িয়ে ধরে ঘুম, সেটাই ছাড়াচ্ছে। দাঁড়াও আমি আরও ছাড়ানোর ব্যবস্থা করছি।’
মিমি গোঁজ মেরে বসে ওই বুড়োটাকে আর ঘরটা দেখছিল। ওর সবচেয়ে অবাক লাগছে এই মেয়েটাকে দেখে, ওই বুড়োটা কি এই মেয়েটার হ্যাজবেন্ড! দু’জনের বয়েসের তো অনেক তফাত। প্র্যাকটিক্যালি নাতনির বয়সি। বঁড়শির জড়িয়ে ধরার কথায় বুঝল ওরা স্বামী-স্ত্রী।
বঁড়শি যেমন দ্রুত গেল তেমন দ্রুত ফিরে এল। ওর হাতের একটা থালায় পাঁচ কাপ চা। একটা চেয়ারে থালাটা রেখে বঁড়শি বলল, ‘অনেক পাক খেয়েছ, এবার চা খাও।’
‘গুডমর্নিং, আমি তো এটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।’ ক্যাপ্টেন শতরঞ্চির পাক ছেড়ে সোজা হয়ে বসেছেন। কিন্তু বঁড়শি তাঁকে চা দিল না, প্রথম কাপটা নিয়ে সোজা চলে গেল ঘরের এক দিকে। বালির ওপর চায়ের কাপটা রেখে এল। এবার দ্বিতীয় চায়ের কাপটা বাড়িয়ে দিল ক্যাপ্টেনের দিকে। তিনি লম্বা একটা হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিয়ে লম্বা একটা চুমুক দিলেন। এত জোরে চুমুক দিলেন যে তার শব্দ প্রবলভাবে ঘরে ভেসে গেল। মিমি আবার নাক কোঁচকাল— কোথায় এলাম রে বাবা! সেই সঙ্গে সে বালির ওপর রাখা চায়ের কাপটার দিকে তাকিয়ে থাকল।
বঁড়শি একটা কাপ নিয়ে মিমির দিকে এগিয়ে দিল। ‘নাও, চা খাও।’
‘আমি চা খেয়ে এসেছি।’
‘চা দুপুরের ভাত নয়, অনেকবার খাওয়া যায়।’
অনিচ্ছুক মিমি ঘাড় ঝাঁকাল, ‘আমি দিনে দু’বার চা খাই, সকালে আর সন্ধেবেলা। মাঝে আর খাই না, সরি।’ মিমি চায়ের কাপ দেখেছে, চায়ের ওপর দুধের সর ভাসছে, ওই চা সে মুখে তুললেই বমি করে মরবে। যা মনে করার করুক, এই নোংরা কাপে সে চা খাবে না।
ওদিকে শতরঞ্চিতে আধশোয়া হয়ে ক্যাপ্টেন বললেন, ‘আহা ওকে জোর করো না, ও না-খায় না-খাবে। ও পেট নষ্ট করে এসেছে। ওকে হরলিক্স দাও।’
কথাটা খুব তুচ্ছ করে ছুড়ে দিলেন ক্যাপ্টেন। খুব সর্তক না থাকলে ক্যাপ্টেনের কথা কেউ বুঝতে পারবে না। সহজ যেমন কথাটা কথাই ভেবেছে, বঁড়শিও তাই। লোকটা তো আজেবাজে কথাই বেশি বকে। কিন্তু ক্যাপ্টেনের কথায় মিমি যেন কেঁপে উঠল। নিজের চেয়ারটাকেই সে শক্ত হাতে চেপে ধরল।
ঠিকরে উঠল বঁড়শি, ‘হরলিক্স! হরলিক্স কোথায় পাব? না গো বোন, চা না খেলে, আর কিছু নেই।’
ক্যাপ্টেন বলল, ‘ওর কাপটা আমাকে দাও। পেট নষ্ট করে করুক, চা নষ্ট করা যাবে না। আমাকে দাও।’
সহজ এবার চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেল। ক্যাপ্টেন থানইটের কথাটা আবার ছুঁড়লেন!
বঁড়শি মুখ বাঁকাল, ‘তোমার কাছে কেন সবাই আসে বুঝি না, একটা বাজে লোক, ফালতু লোক, বুড়ো হয়ে মরার বয়স হল, তবু মুখে আগল দিল না। যেন এ কেমন মানুষ, কেউ মদ না খেলে তার মদটা উনি গেলেন। আজ প্রথম দেখলাম, কেউ চা না খেলে তার চা-টাও খাবেন? ছিঃ!
মিমি নয়, বিস্ময় প্রকাশ করে বসল বঁড়শি। কিন্তু মিমির যেন নড়ার ক্ষমতা নেই। চেয়ারে কাঠ হয়ে বসে। ‘চা খেয়ে নাও বোন, এ বাড়িতে হরলিক্স নেই, মদ আছে।’
সহজ চুপ করে বসে আছে, তার মনে কটা কথা ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু খুব স্বাভাবিকভাবেই সে যেন চায়ে মগ্ন। সে কি ঠিক কাজ করল, মিমিকে এখানে নিয়ে এসে? না আনলে রোজ মিমি নানা কথা বলে যেত, জ্বালাত। ভাবত দাদা নিয়ে গেল না। বোনকে ভালোবাসে সহজ, খুব ভালোবাসে, ছোট থেকেই জুটি বেঁধে তারা ওই বাড়িতে থাকে। এ লোকটা সুজিদার মতো এমন কোনও কথা বলবে না তো মিমিকে—? লোকটাকে সতর্ক করা দরকার। সে খুব ঠান্ডা গলায় বলল, ‘আপনি কি জানেন, সুজিদার সঙ্গে পরমেশ্বরদার সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে?’
সহজের কথায় হাতের তালুকে চটাস করে চড় মেরে ক্যাপ্টেন চিৎকার করে উঠল, ‘পাপ কখনও বাপকে ছাড়ে না। এই তো শুরু, এবার মুষলপর্ব।’
‘আপনার জন্যই ওদের বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে গেল, আপনার ভালো লাগছে?’
‘ভালো লাগা, খারাপ লাগা কি আমার হাতে আছে? এই ঘরে যখন আমি বিষ গিলে পড়ে থাকব, তখন তোর একই সঙ্গে ভালো লাগবে, আবার খারাপ লাগবে। কিন্তু ওই যে পাপ কখনও বাপকে ছাড়ে না। আমাকেও ছাড়বে না।’
‘আপনাকে কে বিষ দেবে?’ বঁড়শি কর্কশ গলায় প্রশ্ন করল।
‘কেন তুই, তুই দিবি, আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। আমি তো আমার মৃত্যুবাণ সঙ্গে নিয়ে ঘুরি।’
বঁড়শি হাসে, ‘তত্ত্ব কথা কেন ঘুরিয়ে বলেন, আমরা সবাই আমাদের মৃত্যুবাণ সঙ্গে নিয়ে ঘুরি। শরীর থাকলেই ব্যাধি থাকবে। ব্যাধিতে মরণ আসবে। দেহ নাই তো মরণ নাই।’
সহজ বলল, ‘আমার সুজিদা বা পরমেশ্বরদার সম্পর্ক নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু আপনি সুজিদার স্ত্রী মৈত্রেয়ীদির খুব ক্ষতি করলেন।’
সহজের কথায় মাথা নিচু করে বসে থাকল ক্যাপ্টেন। শান্ত গলায় বিড়বিড় করলেন, ‘আমি পিশাচ। আমি সাধু নই। পিশাচ কখনও সাধু হয় না? তোরা যদি আমাকে সাধু বানাস, আমার কী দোষ?’
‘না, দোষ আপনার নয়, ন্যাকা! আর কেউ কিছু বোঝে না, আর কেউ কিছু ঠাহর পায় না। আমার বাপ সব জানতে পারত, সব বুঝতে পারত, কিন্তু কখনও মুখ ফুটে বাক্যি খসাত না।’ বঁড়শি ফুঁসে ওঠে।
‘বাক্যি খসাবে কী করে, সে তো সর্বদা হিসহিস করত। তোর বাপ তো সর্পতান্ত্রিক, তোর বাপের জিভ চেরা ছিল, তুই জানিস তোর বাপের গা থেকে চামড়া উঠত। সে খোলস বদলাত।’
‘মুখ সামলে কথা বলবেন। আমার বাপ যাই হোক, কিন্তু সে কাউকে ছোবল মারত না, বিষ ঢালত না।’ বঁড়শি ঠিকরে ওঠে।
হ্যা হ্যা করে হাসে ক্যাপ্টেন। ‘জয় তারা! কে কী করে তা একমাত্র মা জানেন! তাই যদি হবে তবে তোর বাপ বিষে মরল কেন? পাপ! পাপ!’
‘সে আমি কী করে জানব?’
‘সেটা আমি জানি।’
‘আমার বাপ বিষে মরেছে! এই যে শুনেছিলাম সাপের কামড়ে। মা তাহলে ঠিক কথাই বলত, সাপের কামড়ে তোর বাপ মরেনি। কেউ তাকে বিষ দিয়েছে। আমাকে যে পালন করল সেই কালীকঙ্কালীতলার যোগীনবাবাও বিষে মরল? সেটাও নিশ্চয়ই আপনি জানেন?’
‘আলবাত জানি।’
‘বিষ যদি জানতেন, তাহলে সেদিন কঙ্কালীতলার আশ্রমে পুলিস ডাকলেন না কেন? আশ্রমে পুলিস ঢোকা অন্যায্য কাজ বলে আপনিই গণ্ডগোল পাকিয়েছিলেন। আমি নিজে তার সাক্ষী!’
এবার বঁড়শির কথায় পাত্তা না দিয়ে সহজের দিকে তাকাল ক্যাপ্টেন। মিটিমিটি করে হাসতে হাসতে বললেন, ‘এ আমাদের সুখ-কোঁদল! বুঝলি, এক একজনের প্রেমালাপ একেকরকম। এটা আমাদের। যেমন পায়রার বকবকম, কুকুরের কেঁউকেঁউ, আমাদের এমন—।’
বঁড়শি দু’চোখে তীব্র আগুন নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
ক্যাপ্টেন বললেন, ‘তোরা যা যা, সকালবেলাটা বড্ড খারাপ সময়। আমার তাল থাকে না, বেতাল! বেতাল! যা, যা, তোরা পালা। হাওয়া গরম — ঠান্ডা করতে হবে।’
সহজ বলল, ‘আমার বোন এসেছিল, ওর কিছু প্রশ্ন আছে।’
‘ওর প্রশ্ন থাকুক, আমার কাছে ওর প্রশ্নের উত্তর নেই। দেখলি না, কী সব বেতাল বেরিয়ে গেল। কদ্দিন লাগবে কে জানে এই ঝক্কি সামলাতে।’
সহজ বলল, ‘তাহলে আজ আমরা চলে যাব।’
‘হ্যাঁ, যেতে তো বলছি। তোর বোনের ভালো হবে। খুব ভালো হবে, প্রচুর টাকা হবে। টাকার পাহাড়ে বসে থাকবে। বাড়ি গাড়ি। তুই মা হীরে পরিস, হীরে। হীরের ঝলকানিতে টাকার ছলকানি তোদের দেখে কে? তোরা জুটিতে লুটি! তোরা লুণ্ঠন করতে বেরিয়েছিস। সব লুটে নিবি। টাকা পয়সা সোনা দানা, যা যা পালা, ভাগ্য তোর খুব ভালো। কিন্তু তোর ভাগ্যে একটাই সন্তান ছিল, তাকে ফেলে এলি। আর কুড়নোর চান্স নেই। সাতসকালে বাড়িতে ঢুকে পড়ল কোন অনামুখো আর সব গোলমাল হয়ে গেল। কী বলতে কী বললাম! যা যা তোরা পালা।’
চেয়ার ছেড়ে উঠেই মিমি একটা পাঁচশো টাকার নোট ছুড়ে দিয়ে বেরিয়ে এল। সহজ অসহায়ের মতো ক্যাপ্টেনের দিকে তাকাল। ক্যাপ্টেন টাকা হাতে দু হাত দিয়ে সমান করছেন আর হাসছেন। বললেন, ‘ভাগ, দক্ষিণা পেয়ে গিয়েছি, পরে এসে কমিশন নিয়ে যাস।’
বাইরে বেরিয়ে সহজ দেখল বাইক ধরে দাঁড়িয়ে আছে মিমি। বাইকে স্টার্ট দিতেই মিমি উঠল। কিন্তু সহজকে স্পর্শ করল না। বাড়ি এসে দু’জনেই যে যার ঘরে ঢুকে পড়ল। কিন্তু একটু পরে উল্কার গতিতে ঘরে ঢুকল মিমি। সহজের সামনে এসে দাঁড়াল। ওর মুখ ঘেন্নায় যেন বেঁকে যাচ্ছে, বলল, ‘তুই আমার মোবাইলের মেসেজ দেখিস?’
‘আমার রুচিতে বাধে।’
‘সেটা স্বাভাবিক।’ মিমি থম মেরে থাকে, বলে, ‘আমি যাওয়ার আগে কতটা ইনফরমেশন দিয়েছিস ভণ্ডটাকে?’
‘আমি কাউকেই অসম্মান করতে চাই না। আর তুই আমার বোন! আমি তোর কথা বাইরে বলব!’
‘তবে?’ মিমির চোখে জল, ‘দাদা তুই কি সত্যি বলছিস?’
সহজ ম্লান হাসল, ‘মায়ের ঘরে চ। আমি মায়ের পায়ে হাত দিয়ে তোকে বলি। কিংবা ঠাকুরদার পায়ে হাত রেখে—এঁরাই আমার দেবতা।’
কেঁদে ফেলার আগে মিমি নিজেকে সামলে নিল। বলল, ‘আমি মনে হয় ভুল করছি, না রে দাদা?’
‘আমি আমার কথা বলতে পারি। তোর কথা কী করে বলব?’
‘আমাকে ভাবতে হবে বুঝলি। খুব ভাবতে হবে—।’ কথাটা নিজের মনেই বলতে বলতে ঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছিল মিমি। কিন্তু সে আবার ঘুরে দাঁড়াল, বলল, ‘তুই আর ওখানে যাস না। এত হেঁয়ালি! মানুষটা ভালো নয়।’
‘তাই জন্যই তো আমাকে যেতে হবে।’
‘কেন?’
‘ওখানে বঁড়শি আছে! এই শহরে আমি ছাড়া ওর কেউ নেই।’
অঙ্কন: সুব্রত মাজী