Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

অনলাইন
ঝিমলি নন্দী

রাত দশটা। মেসেঞ্জারে পিং করে একটা মেসেজ ঢুকল। মোবাইলটা মুঠোয় একটু  ধরে রাখল মণিদীপা। তারপর রোজকার মতোই পরিপাটি মশারি গুঁজতে লাগল। আবার কাল ঠিক সকাল ছ’টায় মেসেজ করবে বুদ্ধ। সুপ্রভাত! বুদ্ধের পাঠানো মেসেজে আজও ঘুমোতে যায় মণিদীপা। ‘শুভরাত্রি!’ বুদ্ধের মেসেজে ঘুম ভাঙে। উত্তর দেয় না মণিদীপা। তবু নিয়মিত মেসেজ ঢোকে। সুন্দর কথা। খুব সুন্দর সব ছবি। কখনও বাংলায়, কখনও ইংরেজিতে। যেমন— এখনই হাতে পালতোলা নৌকো দোল খাচ্ছে চাঁদনি রাতে। ঘাটের দিকে চেয়ে অপেক্ষায় আছে মাঝি। লেখা আছে—
‘The ones who
 love you will 
never leave you. 
Even if there are 
hundred
reasons to give up,
they will find
one reason to
hold on.’
সত্যি হোক মিথ্যে হোক প্রেমের কথা শুনতে ভালো লাগে। মণিদীপা হাসল। সকাল থেকে রাত নিয়মের কঠিন নিগড়ে বাঁধা। বাড়িতে সে ছাড়াও দুটি প্রাণী। বৃদ্ধা মা হেমলতা আর মানসিক অবসাদগ্রস্ত ভাই দীপ্যমান। অবশ্য সুরমাদিকেও তাদের বাড়ির লোকই বলা চলে। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা বারো মাস সুরমাদি সকাল সাতটায় তাদের বাড়িতে ঢোকে। মায়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করে। নাহলে মণিদীপা হালে পানি পেত না। সকালে উঠে টোস্টে একটু মাখন বুলিয়ে কিংবা দুধে কর্নফ্লেক্স ছড়িয়ে চটজলদি রেডি হয়ে মণিদীপা যখন আটটা বারোর লোকাল ধরতে ছোটে তার মধ্যেই সুরমাদি রুটি, আলু ছেঁচকি কখনও চিঁড়ের পোলাও এটা সেটা দিয়ে তার টিফিন গুছিয়ে দিয়ে দীপ্যকে চা বিস্কুট এগিয়ে দেয়। আহ্নিক শেষ করে মা ঠাকুরঘর থেকে নামে। মণিদীপা বের হয়। মানুষসমান বড় জানলার বিটে হাঁটু ভাঁজ করে বসে দীপ্য চায়ের প্লেট হাতে রাস্তার দিকে চেয়ে থাকে, যতক্ষণ না পর্যন্ত দিদি গলির বাঁকে হারিয়ে যায়। আবার বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যাতারাটা যেই ফুটে ওঠে দীপ্য জানলায় মুখ রাখে। যতক্ষণ না মণিদীপাকে দেখা যায় গলির মুখে সে জানলা থেকে নড়ে না। আজ পাঁচ বছর দীপ্য কথা বলে না। হাসে না। স্বপ্নের ঘোরে থাকে। বাড়িতে তার অস্তিত্ব যেন নেই-মানুষের মতোই। কেবল মণিদীপা টের পায় তার থেকে আট বছরের ছোট ভাইটি বাতাসের মতো তাকে জড়িয়ে থাকে। সুরবালা গার্লস হাইস্কুলের হেডমিস্ট্রেস মণিদীপার পড়ানো, খাতা দেখা ছাড়াও হাজারটা অফিসিয়াল কাজ। ডিআই অফিস, কমিটি মিটিং, স্কুল ফাউন্ডেশনের টাকার হিসেব, স্পোর্টস, অ্যানুয়াল প্রাইজ ডিস্ট্রিবিউশন, সরস্বতী পুজো ইত্যাদি ইত্যাদি। মণিদীপা শেষ মুহূর্তে এসে ট্রেনে উঠেই দেখল রঞ্জাবতী তার জন্য জায়গা আগলে রেখেছে। এমনটা ওরা নিত্যযাত্রীরা পরস্পর পরস্পরের জন্য করে থাকে। হলুদ কালো চেক শার্টের নীচে ডেনিমের প্যান্ট স্ট্রেট করা লম্বা চুলে রঞ্জা যেন এইমাত্র ছেড়ে আসা স্টেশনের ধারের কৃষ্ণচূড়ার আগায় বসা বসন্তবৌরি পাখিটি, মণিদীপার দিকে ঘন পল্লবভরা কালো চোখ তুলে হাসল। উত্তরে স্নিগ্ধ চাউনিতে স্নেহ ঢেলে দিতে দিতে মণিদীপা বসতেই টিউলিপের সায়েন্সের টিচার সরসী রোজকার মতো ওর সংসারের গল্প শাশুড়ির নিন্দে দিয়ে শুরু করল। ‘জানিস তো আজকে তিনি কী করেছেন! বেরব, হাতে একটা লম্বা ফর্দ নিয়ে হাজির। মাসতুতো বোন আসবে ঢাকা থেকে, তাদের সবার জন্য নতুন কাপড় জামা চাই। পয়সা তো কোনওদিন উপায় করতে হল না, ভাবে হাতের মোয়া।’ মণিদীপা হাত ঘুরিয়ে বলল, ‘হাত ঘোরালেই হাজির।’ ‘বিলিভ মি মণি। তাও আপন মাসি নয়, মাসির জায়ের মেয়ে। বাঙালদের একেবারে রাবণের গুষ্টি। যেন গোটা বাংলাদেশটাই আত্মীয়। আর সবারই আমবাগান, জামবাগান, পুকুর...’ মণিদীপা জানে রঞ্জাবতীর বাড়িও কোনও এক কালে বরিশালে ছিল। সে আড়চোখে দেখল রঞ্জা ব্যাগ থেকে ল্যাপটপ বের করে কোনও একটা জরুরি প্রোগ্রামে ডুবে গেল। এই ঘণ্টাখানেকের জার্নিতে সরসীর গসিপ মাঝে মাঝে ভালো লাগলেও আজ মণিদীপা মনঃসংযোগ করতে পারল না। কথার মনোমতো জবাব না পেয়ে ক্ষুণ্ণ সরসী এসডিও অফিসের কাজরীর দিকে ঝুঁকল। টিফিন খেতে খেতে উল্টোদিকের লীনা তীক্ষ্ণ কণ্ঠে প্রতিবাদ ছুড়ে দিল, ‘এই সরসী, সকালবেলা আমাদের নিন্দে করিস না। তোরা ঘটিরা তো এক নম্বরের স্বার্থপর। জানিস কেবল আপনি আর কোপনি। সবাই কেন জমিদার হতে যাবে, তা বলে যাদের ছিল, তারা বলবে না?’ বিরোধীপক্ষ আসা মাত্র আসর জমে গেল। সুকন্যা বলল, ‘গুল মারতে ঘটিরাও কম যায় নাকি? আমার শ্বশুর এদিকে তালপুকুরে ঘটি ডোবে না, ওদিকে কোনকালে পাথরপ্রতিমায় সাতমহলা বাড়ি ছিল লোক এলেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই গল্প বলেন।’ লীনা খুশি হল, ‘যা বলেছিস, সেই নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্প, ‘আমার পিসেমশাইয়ের মামা ছিলেন বনেদি জমিদার। ঘি দিয়ে পোলাও খেতেন, আস্ত আস্ত পাঁঠা খেতেন, ইয়া বড়া বড়া অস্ট্রেলিয়ান ঘোড়া হাঁকাতেন...’ ওদের টরে টক্কায়, ট্রেনের চলমান চাকার শব্দে, গা-ঠেসাঠেসি ভিড়েও মণিদীপা যেন কাঙ্ক্ষিত নিৰ্জনতাটুকু খুঁজে পেল। মণিদীপার প্রথম দিকের ছাত্রী রঞ্জাবতী। মেধাবী, সুন্দরী এই মেয়েটাকে মণিদীপা ছোটবোনের মতোই ভালোবাসত। রঞ্জা কাছাকাছি থাকে। এ পাড়া ও পাড়া। তখন মণিদীপা বাড়িতে টিউশন করত। রঞ্জা আসত পড়তে। একদিন সন্ধেবেলা মণিদীপা একটু দেরি করে ফিরেছিল। সেদিন তুমুল ঝড়-বৃষ্টি। বোধ হয় কালবৈশাখীই হবে। সেদিন আর কেউ আসেনি। ঘরের ভেতর কেবল রঞ্জা আর দীপ্য। বাইরে থেকে ভিজে হাপুসুটি মণিদীপা ওদের হাসির শব্দ শুনতে শুনতে আর এক দফা ভিজেছিল। তখন দীপ্য হায়ার সেকেন্ডারি দিয়েছে। জয়েন্ট হয়ে গিয়েছে। অফুরন্ত অবকাশ। এরপর কখনও স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের শেষে কৃষ্ণচূড়া গাছটার নীচে বাঁধানো বেদীতে, কখনও  নীলদিঘির পাশের ডিয়ার পার্কটায়, একবার অফিসটাইমের ভিড় বাসেও মণিদীপা দেখেছিল ওরা কেমন পারিপার্শ্বিক ভুলে স্বর্গ তৈরি করে। দু’জনের মধ্যে কিছুতেই ঢুকে যেতে পারে না ট্রেনের হুইসেল, বাসের তীব্র হর্ন, মানুষের কোলাহল বা কোনও অবাঞ্ছিত শব্দ। আঠাশে পা দিয়েও মণিদীপা তখনও মরুভূমি। দু-একটা মৌমাছি যে গুনগুন করেনি, তা নয়। তবে সস্তা ছেলেদের আমল দেয়নি সে। বুদ্ধের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল হঠাৎ। সেদিন স্কুল থেকে ফিরে মণিদীপা দেখল বাড়িতে অতিথি। বাবার ঘরে কারা যেন গল্প করছে। বেল বাজাতেই দৌড়ে এল পলা কাকিমা। বলল, ‘দীপা, তুই একবার ওপরে আয় তো আমার সঙ্গে।’ মণিদীপা অবাক। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে কাকিমা বলল, ‘আমার মামাতো দিদি-জামাইবাবু এসেছে তোর সঙ্গে ছেলের বিয়ের সম্বন্ধ করতে। ডলির বিয়ের ভিডিওতে তোকে দেখে ওদের খুব পছন্দ  হয়েছে।’ একটু সাজুগুজু করতেই হল। বিয়ের ব্যাপারে মণিদীপা খুঁতখুঁতে। ঠিক মতো ম্যাচ না করলে বিয়ে করবে না দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই দেখেশুনে বিয়ে করার পদ্ধতিটাও তার না-পসন্দ। এভাবে কি বিয়ে হয়? এটা তো একটা পরিকল্পনাকে রূপ দেওয়া মাত্র। ভালোবাসার রেখামাত্র নেই। তবু পাত্রপক্ষের সামনে তাকে যেতেই হল সেদিন। নইলে মা, কাকিমা দু’জনকেই অপ্রস্তুত করা হবে। অখুশি চোখ তুলেই সে একবার বুদ্ধের দিকে তাকাল। হ্যাঁ, সেটাই প্রথম দেখা। মণিদীপা মনে মনে স্কোরশিট তৈরি করছিল। অ্যাপিয়ারেন্স- ‘বি প্লাস’। অ্যাটিটিউড- ভদ্র ‘এ’ দেওয়া যাক। বিহেভিয়ার- সো সো। হুঁ, ‘বি প্লাস’। টোটাল ইম্প্রেশন- কুলকুল করে হাসি উঠে আসছে পেট থেকে- ‘মিস্টার ক্যাবলাকান্ত’। নিজেকে যখন প্রাণপণ সামলানোর চেষ্টা করছে তখনই গুরুজনেরা উঠে দাঁড়ালেন, ‘আমাদের তো পছন্দ বলেই এসেছিলাম। দেখাশোনাও হল। এবার ওরা ওদের ব্যক্তিগত কিছু কথা থাকে তো বলে নিক।’ মা-কাকিমার গদগদ মুখ দেখে মণিদীপার আর এক দফা হাসি পেল। ব্যস! বিয়ের সানাই বাজাটাই যা বাকি! পাত্রপক্ষ মনে করে ওদের সিদ্ধান্তই শেষ কথা! একটা আঠাশ বছরের শিক্ষিত মেয়ে তার পছন্দ-অপছন্দ নেই? সেই ওঠ ছুঁড়ি তোর বিয়ে? সবাই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলে মণিদীপা স্পষ্ট চোখে ছেলেটির দিকে তাকাল, ‘মিস্টার ইয়ে, আপনার কোয়ালিফিকেশন, ডেজিগনেশন তো মুখস্থ হল কিন্তু নামটা যে জানা হয়নি!’ তার চোখের তারায় কৌতুক ঝিকমিক। মণিদীপা দেখল ছেলেটার কপালে ঘামের বিন্দু, কেবলাকান্ত একেবারে ভেবলে গেলেন। পকেট থেকে রুমাল বেরল। মুখ মুছতে মুছতে বললেন, ‘আরে ইসে-ইসে-বুদ্ধ ইসে-বুদ্ধদেব সেন।’
‘বাঙাল?’ মণিদীপার ঠোঁটের ভাঁজে দুষ্টু হাসিটা।
‘কী করে বুঝলেন? মানে আমাদের তো ইসে টান নেই!’ 
মণিদীপা চোখ সরু করে বলল, ‘ওই ইসে মানে ইসে আর কি!’ বলেই খিলখিল। হাসি থামতে চায় না। অনেকক্ষণ দাবিয়ে রেখেছিল।
বুদ্ধের অবস্থা আরও করুণ, ‘ইসে আপনি এত হাসছেন কেন!’ বলতে বলতেই  জিভ কেটেছে, তবু থামতে পারেনি, ‘ও ইসে-এর জন্য!’ হাসি সংক্ৰমিত হল। দু’জনের প্রাণখোলা হাসি শুনে বাইরে গুরুজনরা নিশ্চিন্ত। এরপর একবারই দেখা হয়েছিল কফিশপে। আর সেদিনই বুদ্ধ শুনিয়েছিল, ‘সুইডেন যেতে হচ্ছে পরের সপ্তাহে। খবরটা হঠাৎ এল। কমসে কম এক বছর ছুটি পাওয়া যাবে না।’
বিয়েটা পিছল। মণিদীপা খুশি। গুরুজনরা বলবে, আর কত দিন বাঁচব, ছেলের বউয়ের মুখ দেখে যাই। বা একটা জামাই দেখি। ব্যস! চেনা নেই, শোনা নেই একটা ছেলের সঙ্গে দুম করে বিয়ে হয়ে যাবে— এসব ভাবতেই তার বিচ্ছিরি লাগে। তারপরও গুরুজনরা বলবে নাতি-নাতনি একটা দেখে যাই, এখনও শক্তি আছে, খাটতে পারব, আর দেরি কোরো না। ব্যস! নতুন বরের সঙ্গে বোঝাপড়া নেই, চাকরির সুবিধে-অসুবিধে চুলোয় গেল, কোলে একটা ছেলে কিংবা মেয়ে। তারপর যদি বনিবনা না হয়, বিবাহ বিচ্ছেদের কথা উঠলেই সবাই হাঁ হাঁ করে উঠবে, সমাজ ডিভোর্সিকে সম্মানের চোখে দেখে না। তোর সন্তানই বা কী পরিচয়ে বাঁচবে! বিয়ে করবে তুমি। আর পাত্র, সময় সব কিছু নির্ধারণ করবে গুরুজনেরা। এমনকী, বিচ্ছেদের অধিকারটিও সংগ্রাম করে আদায় করে নিতে হবে। যতই চাকরি কর, সাবালিকা হও। বয়স তোমায় ভোটাধিকার দেবে, কিন্তু ন্যূনতম মানবাধিকারটুকু দেবে না। সন্তান গর্ভে ধারণ কর, মানুষ কর, অথচ স্বাধীনতা নেই ইচ্ছা প্রকাশ করার যে আদৌ তুমি সন্তানধারণ করতে চাও কি না কিংবা কোন সময় চাও। সবই হবে অন্যের ইচ্ছেয়। উঁহু মণিদীপা আপন মনে ঘাড় নাড়ল। বুদ্ধদেবকে তার মন্দ লাগছে না বটে, কিন্তু  নিজেকে অমন ইঁদুরকলে সে ঢোকাবো না। সুতরাং মিস্টার কেবলাকান্তের দুঃখী মুখটা দেখে মণিদীপা একগাল হাসল।  বেতের সোফায় সোজা হয়ে বসল বুদ্ধ। 
চিকেন পকোড়ার গরম প্যাকেটটা মণিদীপার দিকে ঠেলে দিয়ে বলে উঠল, ‘এত হাসি যে, খুব ভালো লাগল বুঝি?’ গরম পকোড়া সসে ডুবিয়ে নিয়ে খচমচ করে চিবোতে চিবোতে মণিদীপা মুখ তুলল না তবে সাড়া দিল, ‘সত্যিই ভালো, খান না খেয়ে দেখুন!’ 
‘আরে খাবারটা নয়, খবরটা? মা-বাবা পাঁজি নিয়ে বসে পড়েছিল জানেন?’ বুদ্ধের গলায় হতাশা।
‘আরে রাখুন তো মশাই গার্জেনদের কথা। হাতে পাঁজি মঙ্গলবার! বিয়েটা তো করব আমরা। চলুন, এই সময়টায় জমিয়ে প্রেম করা যাক। বিদেশে যাচ্ছেন। অথচ, পড়ে রইলেন সেই মান্ধাতার আমলে। কোর্টশিপ ছাড়া ওখানে বিয়ের কথা ভাবতে পারে কেউ?’ 
 ‘প্রেম?’ বুদ্ধ একবার চিকমিকিয়ে উঠল। পরক্ষণেই বিমর্ষ! বলল, ‘কিন্তু ইসে ছুটিই তো পাওয়া যাবে না।’
‘ইসে অনলাইন!’ পকোড়ায় মরিচ ছড়াতে ছড়াতে বাঁ হাতে উড়ে আসা চুলগুলো পিছনে ঠেলে দিল মণিদীপা। 
বুদ্ধ ছড়িয়ে হাসল। পকোড়া হাতে তুলেছে, ‘ভার্চুয়াল প্রেম বুঝি রিয়েলের মতো হয়?’
‘শুরু তো হোক তারপর...’ 
‘তারপর?’
‘ভালো লাগলে আমার ছুটিতে টিকিট কাটব।’ 
‘তাই নাকি?’
মণিদীপা হাতের মুদ্রায় উত্তর দিল। 
পাসপোর্ট, ভিসা, এমনকী টিকিটও কাটা হয়েছিল। যাওয়ার আগেই দীপ্যর হোস্টেল থেকে ফোনটা এল। দৌড়ল মণিদীপা। ভাইটা তখন জলে ভেজা পাখির মতো কাঁপছে। ভিক্টিম অব র‌্যাগিং। প্যানিক অ্যাটাক! ডাক্তার, কাউন্সেলর, অ্যান্টিডিপ্রেশন ড্রাগস— কিছুতেই ট্রমা কাটল না। মাঝেমাঝেই চেঁচিয়ে ওঠে। কথা বন্ধ হয়ে যায়। থরথর করে কাঁপে। জ্ঞান হারায়। ক্যারিয়ার নষ্ট হল। রঞ্জাবতী অনেকদিন পর্যন্ত লড়াইটায় ছিল। কোর্টঘর করেছিল মণিদীপা। ছেলেগুলোর শাস্তিও হয়েছিল। দীপ্যর বাড়াবাড়িটা কমল। কিন্তু কথা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল। রঞ্জাকে দেখলে চোখে চাপা দেয়। অস্বস্তি বোধ করে রঞ্জা। আসা কমতে কমতে একসময় বন্ধ হল। মেয়েটাকে দোষ দিতে পারেনি মণিদীপা। জীবনের হাতছানি অগ্রাহ্য করা কত কঠিন নিজেকে দিয়ে সে বুঝেছিল। বুদ্ধের বাবা-মা দু’-একদিন খোঁজ নিয়েছিল। বুদ্ধ ঘনঘন ফোন করত, কিংবা চ্যাট। যখন বোঝা হয়ে গেল দীপ্য পুরোপুরি সারবে না, মণিদীপা  জানাল এ অবস্থায় বিয়ে করা সম্ভব নয়। বুদ্ধও একসময় চুপ করে গেল। সম্পর্ক ঠেকল মেসেঞ্জারে। ‘সুপ্রভাত’ আর ‘শুভরাত্রি’। আজ এইটুকুই মণিদীপার জীবনে— ‘সকল রসের ধারা’।
অলঙ্করণ: সোমনাথ পাল
08th  August, 2021
গাছ জগবন্ধু
অভিজিৎ তরফদার

—ওই যে ঘরের মধ্যে টাকা মেশিন। বোতাম টিপলেই টাকা। —এটিএম? বেড়ে বলেছ তো! আচ্ছা জগবন্ধু, একটা কথা জিজ্ঞেস করব, কিছু মনে করবে না তো? —না না, মনে করবার কী আছে? গরিব মানুষের অত মনে করলে চলে না।  বিশদ

22nd  August, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব  ২৬
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

বোনকে নিয়ে পিশাচসাধুর বাড়িতে হাজির হল সহজ। মিমির অতীত নিয়ে এমন কয়েকটি ইঙ্গিত করলেন তিনি, যার জেরে তার সব কিছু গোলমাল হয়ে গেল। দাদার উপর সব রাগ আছড়ে পড়ল মিমির। এদিকে, সহজ ভাবতে থাকল কীভাবে উদ্ধার করা যায় বঁড়শিকে। তারপর... বিশদ

22nd  August, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব  ২৫
জয়ন্ত দে

সহজ বাবাকে জানিয়ে দিয়েছে, সে ঠাকুরদাকে আশ্রমে পৌঁছে দিতে চায়। শশাঙ্ক মিত্রের ঘরে এসে হাজির হল সে। তাঁর লেখা চিঠি যে ঠাকুমার কারসাজিতে গুরুদেবের কাছে পৌঁছয় না, সেই রহস্য ফাঁস করে দিল সহজ। সে চেয়ে নিল আশ্রমের ঠিকানা। মুক্তির আশায় শশাঙ্কের মুখে দেখা গেল হাসির রেখা। তারপর... বিশদ

15th  August, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব  ২৪
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

পরমেশ্বরের অফিসে বসে ভানুদা, সুজি, শঙ্কর। সেখানে হঠাৎ হাজির হল সহজ। পরমেশ্বর জানাল, মৈত্রেয়ী তাদের বাড়িতে এসেছিল। সুজি নিজের গোঁ ধরে থাকলে ও ডিভোর্স দেবে বলেছে। তর্কাতর্কি চরমে পৌঁছলে সুজির সঙ্গে আর ব্যবসা করবে না বলে জানিয়ে দেয় পরমেশ্বর। তারপর... বিশদ

08th  August, 2021
পিশাচ সাধু

সহজকে নিজের জীবনের গল্প শোনাল বঁড়শি। আশ্রম থেকে কীভাবে সে পিশাচসাধুর খপ্পরে পড়ল সেই গল্প। বঁড়শিকে আদতে বিয়ে করেননি ক্যাপ্টেন।
বিশদ

01st  August, 2021
ঘাম

টানটান চাদরে ঢাকা তক্তার এক কোণে বালিশ-তোশকের স্তূপ, রংচটা সিমেন্টের দেওয়ালটাকে কিছুটা আড়াল করতে একখানা আয়না বসানো।
বিশদ

01st  August, 2021
পিশাচ সাধু

সহজকে একটা ঘরে বসতে দিল বঁড়শি। সেই ঘরের উত্তর দিকের কোণে চোখ আটকে গেল সহজের। সেখানে একটা জায়গায় বালি ফেলা, পড়ে রয়েছে পোড়া কাঠ।
বিশদ

25th  July, 2021
গাছ
সাইকেল ও প্রেম

কাটারির কোপ গাছে পড়তেই গাছের আর্তনাদ ধক করে বুকে এসে লাগল অপরাজিতের বুকে। ব্যালকনিতে ডিভানে বসে সকালের কাগজ পড়ার অভ্যাস সঙ্গে এক কাপ চা।
বিশদ

25th  July, 2021
পিশাচ সাধু

সহজ বাড়ি ফিরতেই ক্যাপ্টেনের কাছে যাওয়ার জন্য ঘ্যান ঘ্যান শুরু করল মিমি। সুজির সমস্যা নিয়ে ভাবতে ভাবতে কূল-কিনারা পেল না সহজ।
বিশদ

18th  July, 2021
পিশাচ সাধু  
 

ভবিষ্যৎ জানতে সহজের সঙ্গে পিশাচ সাধুর বাড়িতে হাজির হল সৃজনী। ক্যাপ্টেন ব্যঙ্গ করে জটিলা বলে ডাকতে শুরু করলেন সৃজনীকে। ভবিষ্যৎ জানতে চাইতেই পিশাচ সাধু ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন, নীলাদ্রির সঙ্গে তার প্রেমের পরিণতি ভয়ঙ্কর। বরং, মেডিক্যালে চান্স পাওয়ার জন্য সৃজনীর পড়ায় মন বসানো উচিত। বিশদ

11th  July, 2021
পিশাচ সাধু
 

নচের মেয়ের কাছ থেকে পিশাচ সাধুর বিষয়ে জানতে পেরেছে সহজের ছাত্রী সৃজনী। সেও জ্যোতিষীর কাছে ভবিষ্যৎ জানতে চায়। তাঁর কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য সহজকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে সৃজনী। বিশদ

04th  July, 2021
কৃষ্ণাঙ্গ

সাইপ্রাস গাছের সূক্ষ্ম পাতার কোণে কোণে জলবিন্দু জমে আছে। রাতে বৃষ্টির পর সকালের মুক্তোরঙা আকাশ কমনীয় অথচ নির্ভার। নরম বালিশের কোলে পাশ ফিরল অনঘ। আলগা অপলক মেঘের গায়ে গোলাপি রঙের ছোঁয়া। বিশদ

04th  July, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

বর্ণিনীর সঙ্গে বিচিত্রদার বাড়ি গেল সহজ। আর সেখানে গিয়েই গল্প প্রকাশের রহস্যের জট কাটল। আসলে পত্রিকা অফিসে গল্পটি পাঠিয়েছিলেন বিচিত্রদা। কিন্তু সহজের মুখে পিশাচ সাধুর নাম শুনে ভীষণ খেপে গেলেন তিনি। বিশদ

27th  June, 2021
মাধুকরী  
সৌরভ মিত্র

 

 মেঘ ডাকছিল এতক্ষণ। পাকা রাস্তা ধরে কয়েক পা এগতেই বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি শুরু হল। ভালোই মেতেছে! দশহাত দূরের মানুষকেও যেন চেনা দায়! পশ্চিম কালো হয়ে আসছিল সকাল থেকেই। গুপ্ত-বৃন্দাবনের মেলার তাড়া না থাকলে হয়তো ঘর ছাড়ত না সুদাম গোঁসাই। বিশদ

27th  June, 2021
একনজরে
দীর্ঘ ১১ মাসের আইনি কচকচানির অবসান। ডেফিনেটিভ এগ্রিমেন্টে সই না হলেও আসন্ন আইএসএলে খেলবে এসসি ইস্ট বেঙ্গল। টার্মশিটের ভিত্তিতেই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে অংশ নেবে লাল-হলুদ। বুধবার ...

দেশজুড়ে সরকারি সংস্থা বিক্রির কড়া সমালোচনা চলছে। তবু মোদি সরকার অনড়। সিংহভাগ ক্ষেত্রেই সরকারের উপস্থিতি যে কমিয়ে আনা হবে, সরাসরি একথা জানিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বুধবার তিনি বলেছেন, দুটি ভাগে সরকারি সংস্থাকে বিভাজিত করা হচ্ছে। ...

হাওড়া সিটি পুলিস প্রায় ৪৫ কেজি নিষিদ্ধ চীনা মাঞ্জা উদ্ধার করল। মঙ্গল ও বুধবার জাগাছা থানার বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয় এই বিপুল পরিমাণ সুতো। ...

দুয়ারের সরকারের ক্যাম্পে ছাতা মাথায় দাঁড়িয়ে আছেন মহিলারা। অন্যান্য লাইনে হুড়োহুড়ি থাকলেও শান্ত হয়েই প্রতীক্ষায় মহিলারা। অধিকাংশের মুখেই চওড়া হাসি। কোনও তাড়া নেই তাঁদের। কারণ ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্তে বিপদে পড়তে পারেন। চলচিত্র ও যাত্রা শিল্পী, পরিচালকদের শুভ দিন। ধনাগম হবে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৭২৩ - অণুবীক্ষণ যন্ত্রের আবিষ্কারক ওলন্দাজ বিজ্ঞানী আন্তেনি ভান লিউভেনহুকের মৃত্যু
১৮৬৯ - রহস্য কাহিনীকার ও সম্পাদক দীনেন্দ্র কুমার রায়ের জন্ম
১৯১০: নোবেল জয়ী সমাজসেবী মাদার টেরিজার জন্ম
১৯২০ - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের ভোটাধিকার স্বীকৃত হয়
১৯২০: অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম
১৯২৭ - ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং কোম্পানি কলকাতায় প্রথম বেতার সম্প্রচার শুরু করে
১৯৩৪: কবি ও গীতিকার অতুলপ্রসাদ সেনের মৃত্যু
১৯৪৩ - আজাদ হিন্দ ফৌজ আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয়
১৯৫৫ - সত্যজিত্ রায়ের চলচ্চিত্র ‘পথের পাঁচালী’র মুক্তি লাভ
১৯৫৬: রাজনীতিক মানেকা গান্ধীর জন্ম
১৯৬৮: চিত্র পরিচালক মধুর ভাণ্ডারকরের জন্ম 
২০০৩ - লেখক ও ঔপন্যাসিক বিমল করের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৩.৩৭ টাকা ৭৫.০৮ টাকা
পাউন্ড ১০০.১১ টাকা ১০৩.৫৭ টাকা
ইউরো ৮৫.৫৯ টাকা ৮৮.৭১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮, ২০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৫,৭৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬, ৪৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৪, ০০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৪, ১০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৯ ভাদ্র ১৪২৮, বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট ২০২১। চতুর্থী ২৯/৪৪ অপরাহ্ন ৫/১৪। রেবতী নক্ষত্র ৪২/৫১ রাত্রি ১০/২৯। সূর্যোদয় ৫/২০/৫২, সূর্যাস্ত ৫/৫৬/১২। অমৃতযোগ রাত্রি ১২/৫৩ গতে ৩/৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৭/০ মধ্যে পুনঃ ১০/২৩ গতে ১২/৫৪ মধ্যে। বারবেলা ২/৪৭ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ১১/৩৮ গতে ১/৪ মধ্যে।
৯ ভাদ্র ১৪২৮, বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট ২০২১। চতুর্থী অপরাহ্ন ৫/৩৪। রেবতী নক্ষত্র রাত্রি ১১/৫৫। সূর্যোদয় ৫/২০, সূর্যাস্ত ৬/০। অমৃতযোগ রাত্রি ১২/৪৩ গতে ৩/৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৭/৩ মধ্যে ও ১০/১৯ গতে ১২/৪৪ মধ্যে। কালবেলা ২/৫০ গতে ৬/০ মধ্যে। কালরাত্রি ১১/৪০ গতে ১/৫ মধ্যে।
১৭ মহরম।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
তৃতীয় টেস্ট: প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড ২৯৮/৩ (চা বিরতি) 

08:49:20 PM

কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফের কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ

08:44:00 PM

কাবুল বিস্ফোরণে ১৩ জনের মৃত্যু, রয়েছে একাধিক শিশুও 

08:21:08 PM

করোনা: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত ৭১৭, মৃত ৯ 

08:03:25 PM

কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বিস্ফোরণ, হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি 

07:54:59 PM

কমতে পারে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের ব্যবধান: সূত্র 

06:01:10 PM