পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি কর্মে ব্যস্ততা। ব্যবসা সম্প্রসারণে অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা। ... বিশদ
আমেরিকা বোধহয় বিশ্বের একটি অন্যতম দেশ যেখানে রাষ্ট্রনেতারা বারবার হামলার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে আব্রাহাম লিঙ্কন, জেমস গারফিল্ড, উইলিয়াম ম্যাককিনলে, জন এফ কেনেডি এবং তাঁর সহোদর রবার্ট এফ কেনেডিকে আততায়ীর হামলায় প্রাণ দিতে হয়েছে। আবার ট্রাম্পের মতো অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট, হ্যারি ট্রুম্যান, জেরাল্ড ফোর্ড, রোনাল্ড রেগান, থিওডোর রুজভেল্ট, জর্জ বুশের মতো প্রেসিডেন্ট বা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। দেখা গিয়েছে, রাষ্ট্রনেতাদের হত্যা বা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকে ডিভিডেন্ড দিয়েছে। যেমন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন আক্রান্ত হওয়ার পর রোনাল্ড রেগানের জনপ্রিয়তা কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছিল। আবার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী রবার্ট এফ কেনেডি আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারানোর পর সেই নির্বাচনে তার ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ভারতেও দেখা গিয়েছে, নিজের দেহরক্ষীর হাতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যু কিংবা আততায়ীর আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর সহানুভূতির ভোট ঢেলে পড়েছে কংগ্রেসের বাক্সে। এই সহানুভূতির ভোটের ইঙ্গিত করেই ট্রাম্পের ছেলে এরিক ট্রাম্পকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘এই ফাইটারকেই চাইছে আমেরিকা।’
কিন্তু ভোটের এই লাভ-ক্ষতির হিসেবের বাইরেও ফের আমেরিকার অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র, নিরাপত্তার ব্যর্থতা এবং গুলি-বন্দুকের রমরমার অভিযোগ সামনে চলে এসেছে। ভোটের মরশুমে একজন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীকে প্রকাশ্যে গুলি করে মেরে ফেলার চেষ্টা শুধু আমেরিকা নয়, গোটা বিশ্বের কাছেই সতর্কবার্তা। পাশাপাশি এই ঘটনায় ট্রাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের ব্যর্থতার দিকে জোরালো অভিযোগ উঠেছে। ট্রাম্প শুধু প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী নন, তিনি ওই দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টও। সুতরাং তাঁর নিরাপত্তায় একচুলও ফাঁক থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। সেখানে জনসভা মঞ্চের একশো-দেড়শো ফুট দূরে এক যুবক বন্দুক নিয়ে একটি ছাদে উঠে পড়ল, তারপর ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালাল— এটা কীভাবে সম্ভব! এর একটাই অর্থ, আমেরিকার বর্তমান, প্রাক্তন কোনও প্রেসিডেন্টই নিরাপদ নন। তাঁদের উপর হামলা চালাতে কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী নয়, দেখা যাচ্ছে, মাত্র একজন বন্দুকধারীই যথেষ্ট! দ্বিতীয়ত, আমেরিকায় যে গুলি-বন্দুক খেলনার মতো ব্যবহৃত হয় তা আবারও পরিষ্কার। এই সেই দেশ যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-শপিংমল-সিনেমাহল-কাফেতে বন্দুকবাজদের হামলা, নিরীহ মানুষের মৃত্যুর খবর আর কোনও নতুন মাত্রা যোগ করে না। এর কারণ নাকি আমেরিকার ভ্রান্ত ‘বন্দুকনীতি’। ক্ষমতায় থাকাকালীন ট্রাম্প এই নীতি বদলাতে কোনওদিনই আগ্রহী ছিলেন না। তবে কয়েকদিন ধরে মার্কিন বন্দুকনীতি বদলের সওয়াল করছিলেন। আবার বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বন্দুক নিয়ন্ত্রণে কড়া আইন তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন, ট্রাম্প-কাণ্ডের পর এটাই একমাত্র আশার কথা বলা যায়।