সংবাদদাতা, ডোমকল: রাস্তার দু’ ধারে কিংবা রেললাইনের পাশে পার্থেনিয়ামের বাড়বাড়ন্ত ছিলই। এবারে কৃষিজমিতে থাবা বসাতে শুরু করেছে বিষাক্ত ওই গাছ। কয়েক বছর ধরে ডোমকল মহকুমার বিভিন্ন এলাকার কৃষিজমিগুলিতে কার্যত জাঁকিয়ে বসেছে পার্থেনিয়ামের ঝাড়। পার্থেনিয়ামের দৌরাত্ম্যে বাড়ছে কৃষকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি। পাশপাশি ব্যাহত হচ্ছে ফসলের স্বভাবিক বৃদ্ধি, কমছে উৎপাদন। পার্থেনিয়াম নিয়ে অসচেতনতা ও লাগাতার নির্মূল অভিযান থমকে থাকার কারণেই এই বাড়বাড়ন্ত বলে মনে করছেন পরিবেশপ্রেমীরা। ছোট ছোট সাদা ফুলওয়ালা পার্থেনিয়াম গাছগুলি দেখতে অনেকটা ধনেগাছের মতো। বিশেষজ্ঞদের মতে, পার্থেনিয়াম থেকে নানা ধরনের অসুখ হতে পারে। পার্থেনিয়ামের রেনু শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে পৌঁছালে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, অ্যালার্জি হতে পারে। এমনকী মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। ইদানিং ডোমকল মহকুমার প্রায় সবক’টি ব্লকের কৃষিজমিতেই বাড়ছে পার্থেনিয়ামের রমরমা। তবে বাড়বাড়ন্ত বেশি রানিনগরের মাঠগুলিতে। মাঠগুলিতে ফসলের সঙ্গেও একই সঙ্গে বেড়ে উঠছে পার্থেনিয়াম। এতে ধান, গমের মতো ফসলের উৎপাদন হ্রাস হওয়ার শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। কৃষকরা আবার অনেকেই আগাছার সঙ্গে পার্থেনিয়ামের ঝাড় কাটতে গিয়ে নিজের স্বাস্থ্যঝুঁকি ডেকে আনছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনও সুরক্ষা না নিয়ে এই গাছ কাটতে গেলেও বিপদ। পার্থেনিয়ামের রেনু হাতে, চোখে মুখে লেগে ক্ষতি হতে পারে। এদিকে সরকারি ভাবেও পার্থেনিয়াম নির্মূল অভিযান অনেকটাই থমকে যাওয়ায় বিপদ আরও বাড়ছে।
রানিনগরের চাষি তাইজুল শেখ বলেন, জমি থেকে ওই আগাছা তুলে ফেলছি। কিন্তু ফের তা জন্মাচ্ছে। ওই গাছ যে ক্ষতিকর তা আমাদের কেউ জানায়নি।
সাগরপাড়ার শিক্ষক কাজিরুদ্দিন আহমেদ বলেন, পার্থেনিয়ামের রেনুতে এলার্জেন থাকে। তা থেকে শরীরে চুলকানি, শ্বাসকষ্ট হতে পারে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, পার্থেনিয়ামের ক্ষতিকারক প্রভাব নিয়ে লাগাতার সচেতনামূলক প্রচার চলছে। পাশপাশি রাস্তার পাশে গজিয়ে ওঠা পার্থেনিয়াম গাছকে নির্মূল করার ব্যবস্থা হচ্ছে।