পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি কর্মে ব্যস্ততা। ব্যবসা সম্প্রসারণে অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা। ... বিশদ
তবু কেন সব্জিসহ অধিকাংশ খাদ্যদ্রব্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে? মোদি সরকার এনিয়ে স্পিকটি নট। সদ্য সমাপ্ত সাধারণ নির্বাচনে দেশের বেশিরভাগ জায়গায় শাসক দল রামধাক্কা খাওয়ার একটি বড় কারণ জিনিসপত্রের দুর্বিষহ দাম। সব মহল প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে। বারবার উত্তাল হয়েছে সংসদ। কিন্তু সরকার একটি বারের জন্যও নড়েচড়ে বসেনি, কেবলই গেয়েছে অন্যায্য সাফাই। ভোটযন্ত্র সবক শেখাবার পরেও সংবিৎ ফেরেনি মোদি সরকারের। এই সরকার কি অনুভূতিশূন্য এবং জনসংযোগহীন হয়ে গিয়েছে? জবাবহীনতা যখন মানুষকে বিভ্রমে রেখেছে তখনই বিষয়টি পরিষ্কার করে দিয়েছেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দামবৃদ্ধি মোটেই স্বাভাবিক নয়। অন্যায় মুনাফা লুটতে কারসাজি করছে একটি বড় চক্র। মঙ্গলবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এসব আর বরদাস্ত নয়। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তাঁর কড়া হুঁশিয়ারি, ‘আমি রাশ টানার চেষ্টা করলে তার ফল ভালো হবে না খারাপ হবে, সেটা বুঝে নেবেন’! মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, অন্যায় মুনাফা লুটতেই বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য মজুদ করা হচ্ছে। রাজ্যের টাস্ক ফোর্সের প্রতি তাঁর নির্দেশ, দাম ১০ দিনের মধ্যেই কমাতে হবে। মঙ্গলবারের বৈঠকে শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, সব্জির দাম এতটা বাড়ল কেন? তাঁর উপলব্ধি যথার্থই, ‘এমন অবস্থা হয়েছে যে, লোকে বাজারে যেতেই ভয় পাচ্ছে’! তাপপ্রবাহ পরিস্থিতির জন্য সব্জির দামবৃদ্ধির যুক্তি পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মোদি সরকার কিছুই করছে না। নতুন সরকার আসার পর বরং দাম আরও বেড়েছে। পার্টি ফান্ডের জন্য চাঁদা আদায় এবং শেয়ার কেনাবেচার সঙ্গে এই ঘোলাজলের কোনও যোগসূত্র আছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন এই পোড়-খাওয়া রাজনীতিক।
রাজ্যে আলু এবং পেঁয়াজের মজুতে যে কোনও ঘাটতি নেই, তাও পরিষ্কার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মনে করেন, মজুত যথেষ্ট থাকা সত্ত্বেও আলু ও পেঁয়াজের দামবৃদ্ধির পিছনে কলকাঠি নাড়ছে একটি বড় চক্র। মুখ্যমন্ত্রী ওইসঙ্গে আরও সতর্ক করেছেন যে, দামের উপর নজরদারি চালাবার নামে যদি কেউ অন্যায়ভাবে টাকা তোলার চেষ্টা করে তবে তাকে ভুগতে হবে। মাত্র একদিন আগে, সোমবার নবান্নে অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক বৈঠকে পরিবহণ দপ্তরের কাজকর্ম সম্পর্কে ভয়ানক অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার সেখানেই বৈঠক করেন তিনি জিনিসপত্রের দামবৃদ্ধি মোকাবিলার জন্য। এদিন তার তোপের মুখে পড়ে মৎস্য দপ্তরও। দপ্তরের ভিতরে টাকা কামানেওয়ালাদের তিনি সরাসরি সতর্ক করেন। মুখ্যমন্ত্রীর পরিষ্কার নির্দেশ, কোনও অজুহাত নয়, মাছ এবং সব্জির চাহিদা মেটাতে প্রশাসনকে অবিলম্বে উদ্যোগী হতে হবে। তাঁর সরকার থাকতে রাজ্যবাসী কষ্টে থাকবে, এটা তিনি কোনোভাবেই হতে দেবেন না। কেন্দ্রের তরফেও অনুরূপ কঠোর অবস্থান গ্রহণ কাম্য। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কেন্দ্র এবং রাজ্যের যৌথ উদ্যোগই সর্বাধিক সুফলদায়ক।