যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
সাড়া জাগানো এই সরকারি প্রকল্পটি গ্রামাঞ্চলের পড়ুয়াদের নিত্যদিনের গাড়িভাড়া খরচও বাঁচিয়ে দিচ্ছে। অনেকের কাছেই এখন এই সাইকেলই প্রধান ভরসা। আসলে সবুজ সাথীর সাইকেল প্রদান কর্মসূচিটি হল মুখ্যমন্ত্রীর বাস্তবধর্মী চিন্তাভাবনারই ফসল। স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের সবুজ সাথী প্রকল্পে ইতিমধ্যে ১ কোটির বেশি সাইকেল বিলি হয়েছে। করোনার কারণে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সাইকেল বিলি কিছুটা কম হয়েছিল। ৮ লক্ষ। এবছর আবার তা বেড়ে হতে চলেছে ১২ লক্ষ। লক্ষ্য পরিষ্কার, একজন যোগ্য পড়ুয়াও যেন প্রকল্পের আওতার বাইরে না থাকে। ঘটনা হল, জঙ্গলমহলের ছেলেমেয়েদের দিয়ে যে প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল, কয়েক বছরেই তা প্রায় গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। বলা বাহুল্য, সবুজ সাথীর সাইকেল বিলির ব্যবস্থাটি আক্ষরিক অর্থেই মুখ্যমন্ত্রীর মাইলস্টোন প্রকল্প।
শুধু সবুজ সাথী নয়, মমতা সরকারের আর এক কীর্তি কন্যাশ্রী প্রকল্পও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত। শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে। পরিবারের কন্যারত্নটিকে নগদ সহায়তার মাধ্যমে তার জীবনগড়া ও পঠনপাঠনের ব্যবস্থা করে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই প্রকল্প। এর লক্ষ্য, মেয়েদের উচ্চশিক্ষার পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। শুধু বাংলা নয়, মমতার কন্যাশ্রী প্রকল্প গোটা দেশের সামনেই যেন মাইলফলক। তারই স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৭ সালে রাষ্ট্রসঙ্ঘ থেকে পায় সেরার শিরোপা। এই একটি সামাজিক প্রকল্পের হাত ধরে গত কয়েক বছরে বাংলায় বাল্য বিবাহ, স্কুলে মেয়েদের ড্রপ আউটের সংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটাই নেমে গিয়েছে। বস্তুত সামাজিক প্রকল্পগুলির মাধ্যমেই আপামর জনগণের নানা সমস্যার সমাধান করা প্রথম থেকেই এই সরকারের লক্ষ্য। সেই জনস্বার্থবাহী লক্ষ্যকেই পাখির চোখ করে এগচ্ছে রাজ্য সরকার। মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে নানা সরকারি পরিষেবা। এই কারণেই তৃণমূল জমানায় সবুজ সাথী, কন্যাশ্রীর মতো একগুচ্ছ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সমাজের প্রান্তিক অংশ, বিশেষত আদিবাসী ও তফসিলি সম্প্রদায়, মহিলা, প্রবীণ মানুষজন, বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিরা মমতা জমানায় নানা ধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন। সরকারেরও দাবি, রাজ্যের ৯০ শতাংশ পরিবার কোনও না কোনও রাজ্য সরকারি পরিষেবা পাচ্ছেন। এ যে শুধু কথার কথা নয় তা মেনেও নিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্পগুলির ভূয়সী প্রশংসা করে সহজ শর্তে ১০০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। রাজ্য বাজেটেও দেখা গিয়েছে, একটা বড় অংশের টাকা ব্যয় হচ্ছে এই সামাজিক প্রকল্পগুলিতে। এই প্রকল্পগুলির জনপ্রিয়তা এমন একটা মাত্রায় পৌঁছেছে যে তা রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে অন্য রাজ্যকেও উৎসাহিত করছে। কিন্তু নিন্দুকের অভাব ঘটে না কখনওই। আর তাই, সবুজ সাথীর সাইকেল নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ তোলা হয়। কিন্তু এবার অত্যন্ত নিখুঁত পরিকল্পনা নিয়েই এগতে চাইছে সরকার। যাতে অর্থের অপচয় না-হয় এবং বাড়তি সাইকেল অব্যবহৃত না-থাকে, সেদিকেও লক্ষ রাখা হচ্ছে। এবার কত সংখ্যক পড়ুয়া সবুজ সাথীর সাইকেল পাবে তার একটা পরিসংখ্যান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমগ্র কর্মকাণ্ডটি নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করাই এখন সরকারের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।