যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
কিন্তু এমএলএ বা এমপি হওয়ার পর ভুললে চলবে না যে তিনি ভোটদাতাদের অনুগৃহীত একজন মানুষের ঊর্ধ্বে নন। তাঁর টার্ম যতদিন না শেষ হচ্ছে ততদিন তিনি তাঁর ভোটদাতাদের স্বার্থ রক্ষা করেই চলবেন। ভোটপ্রচারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনেও তিনি দায়বদ্ধ। একটি দল বা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠ বিবেচিত হয় সর্বাধিক সংখ্যক জনপ্রতিনিধির সংগ্রহের মাধ্যমে। নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠ দল বা জোটকেই সরকার গড়ার অধিকার দিয়েছে ভারতের সংবিধান। সেক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যেকোনও একপক্ষ নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হলে সমস্যাটি বড় আকার নেয়। তখনই শুরু হয় ঘোড়া কেনাবেচার খেলা। এমনকী সংখ্যাগরিষ্ঠের সরকার ফেলার ছকও এদেশের রাজনীতিতে পুরনো নোংরামি। তবে, সাধারণ মানুষ থেকে আদালত—সকলেই তার নিন্দায় সরব। কারণ, অন্য দলের বিধায়ক বা সাংসদ কিনে দল ভারী করার থেকে অনৈতিক রাজনীতি আর কিছু হতে পারে না। এই ঘটনা সরাসরি ভোটদাতাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা এবং যুগপৎ রাজনীতির অর্থায়ন ও দুর্বৃত্তায়ন চিহ্নিত করে। তাই গণতন্ত্রের স্বার্থে এমন কারবার সর্বৈব পরিত্যাজ্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, এই ঘৃণ্য রাজনীতির অনুশীলন মোদিযুগে অনেক বেড়ে গিয়েছে। অথচ, বিজেপি নিজেকে ‘পার্টি উইথ আ ডিফারেন্স’ বলে বুক বাজিয়ে থাকে! কিছুদিন আগে মহারাষ্ট্রে উদ্ধব থ্যাকারের সরকার ফেলে দিয়ে সিন্ধে-ফড়নবিশ সরকার বসিয়ে দিয়েছে বিজেপি।
সম্প্রতি বিহার এবং ঝাড়খণ্ডে জোড়া চপেটাঘাত খাওয়ার পরও ক্ষান্ত দেয়নি গেরুয়া শিবির। অপারেশন লোটাস ফের চাগিয়ে উঠেছে দিল্লি, গোয়া ও পাঞ্জাবে। বিজেপির নিশানায় এখন আপ এবং কংগ্রেস। ২০২৪ যত নিকটবর্তী হচ্ছে তত তেড়েফুঁড়ে ময়দানে নামছে যেন পদ্মগোখরো! তাহলে কি ধরে নিতে হবে, মানুষের মন জয়ের আশা ছেড়েই দিয়েছেন মোদি-শাহ জুটি? অন্য দলের হয়ে ভোটভিক্ষা করে যাঁরা এমএলএ, এমপি হয়েছেন তাঁদেরকেই কিনে নেওয়ার অতি তৎপরতার অন্যকোনও ব্যাখ্যা যে পাওয়া যাচ্ছে না। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে, নানা ছলাকলায় বাংলার শাসক দলের কয়েকজন কাগুজে বাঘকে পকেটে পুরেছিল বিজেপি। ভেবেছিল, এবার তাদের পায় কে! তাদের মাথাতেই ছিল না, দু-চারজন গদ্দার জনপ্রতিনিধিকে বগলদাবা করা মানে সংশ্লিষ্ট ভোটাররাও পকেটে চলে আসা নয়। দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন সত্তা। অথচ এই ভ্রমেরবশেই হুঙ্কার ছেড়েছিলেন অমিত শাহ স্বয়ং—‘২০০ প্লাস’ সিটের দখল নেবেন। হায়, ১০০-র অনেক আগেই মুখ থুবড়ে পড়েছিল মোদির অশ্বমেধের ঘোড়া। বাংলার কাছ থেকে তাহলে কোনও পাঠই নেয়নি বিজেপি! না-জানা অপরাধ নয়, কিন্তু জেনেবুঝে বারবার ভুল করলে তার জন্য অত্যন্ত চড়া মাশুলই বরাদ্দ থাকে। এই বিচারের কাছে তৃণ, মহীরুহে তফাত নেই কোনও।