কর্মপ্রার্থীদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। প্রেম-প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। নিকটস্থানীয় কারও প্রতি আকর্ষণ বাড়বে। পুরোনো কোনও বন্ধুর ... বিশদ
জনঘনত্ব এবং নিয়মকে তোয়াক্কা না করার বেপরোয়া মনোভাবেই আমাদের দেশ আগ্নেয়গিরির মুখে। এখনই সতর্ক না-হলে এই সপ্তাহে তৃতীয় পর্যায়ে, অর্থাৎ স্টেজ থ্রি-তে পৌঁছে যাওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা আছে। আর এই কারণেই সবাইকে বাড়ি থেকে না বেরনোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ ভাইরাস মানুষের শরীর ছাড়া বাঁচতে পারে না। এই মুহূর্তে আক্রান্ত এবং সন্দেহজনক মানুষজন-সহ কেউ কারও সংস্পর্শে না এলে ভাইরাস আর ছড়িয়ে পড়তে পারবে না। ভয়ানক মহামারির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অভ্যেসে পরিণত করতে হবে। শুধু করোনা ভাইরাস নয়, যে-কোনও রোগ–জীবাণু প্রতিহত করার এটাই দাওয়াই। পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকা, নাকে–মুখে অকারণে হাত না দেওয়া এবং হাত ধুয়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস তো প্রত্যেকের ক্ষেত্রে সারা জীবনের জন্য দরকার। অভ্যেস করতে হবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে খাবার খাওয়ার। এতে জীবাণু–ঘটিত পেটের রোগ থেকে বাঁচা যাবে। ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে বারবার সাবান–জলে হাত পরিষ্কার করার কথা বলা হচ্ছে। হাত ধোয়ায় বাতিকগ্রস্ত না-হয়ে প্রয়োজনমতো হাত ধোয়ার অভ্যাস অনেকাংশে ভালো। করোনা ভাইরাস অন্যান্য ভাইরাসের মতোই প্রোটিনের একটি কণামাত্র। এক একটি ভাইরাসকে পরিভাষায় ‘ভিরিয়ন পার্টিকল’ বলে। এই ভিরিয়ন–এর দেহটি অত্যন্ত সরল। প্রোটিন খোলকের মধ্যে রয়েছে একখণ্ড রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড বা আরএনএ। আর খোলকের বাইরে স্নেহ পদার্থের একটি চাদর। খোলকের বাইরের দিকে বেরিয়ে আছে পেরেকের মতো ‘স্পাইক’ প্রোটিন। সাবান–জলে হাত ধুলে হাতের তালুর উপর স্তরে থাকা ভাইরাস কণাগুলো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভেঙে যায়। এভাবে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা আর সংক্রামক থাকে না। ইথাইল অ্যালকোহল দ্রবণেও এই কণা বিনষ্ট হয়। অ্যালকোহলযুক্ত ‘হ্যান্ড–রাব’ (স্যানিটাইজার) ব্যবহার করার উদ্দেশ্য এটিই। স্বাস্থ্য বিষয়ক সঠিক তথ্য জেনে ও বিধি অনুসরণ করে তা নিজেদের দৈনন্দিন অভ্যাসে রপ্ত করতে পারলে আমরা অনেক রোগ–সংক্রমণকেই এড়াতে পারব। ভুললে চলবে না, প্রত্যেক ভারতীয়কে যক্ষ্মা, জলাতঙ্ক, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, ভাইরাল ডায়ারিয়ার মতো মারণক্ষম রোগের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়তে হচ্ছে। এই সমস্ত রোগের প্রাণঘাতী ক্ষমতা বর্তমান করোনা ভাইরাস সংক্রমণের থেকে বহুগুণ বেশি। তাই অযথা আতঙ্কিত না-হয়ে সাবধানতা বজায় রাখুন। নিয়ম মেনে চললেই করোনা জয় সম্ভব। ভয় না-করে করোনা দমনে লড়ে যাব, রাজ্যবাসীর উদ্দেশে রোজ বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে সব দলের উচিত তাঁর পাশে দাঁড়ানো। সমালোচনা দূরে সরিয়ে রেখে রাজ্য সরকারের উদ্দেশে আপাতত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া মানবতার পরিচয়। মানুষকে বাঁচানোই এখন সব রাজনৈতিক দলের গুরু দায়িত্ব হওয়া উচিত। এই উদারতা তারা দেখাতে পারবেন কি না এখনও স্পষ্ট নয়, তবে বাংলার মানুষ কিন্তু করোনা–যুদ্ধে প্রস্তুত।