শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই আইন রাজ্যে বলবৎ করা হবে না। সামান্য বা অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্যও সংশোধিত মোটর ভেহিকেলস আইনে যে বিপুল অঙ্কের জরিমানা ধার্য করা হয়েছে, তা বহু গরিব মানুষকেই ভাতে মারার জন্য যথেষ্ট। প্রভাবশালী লোকজন যদি ‘ভুল’ করেও ফেলেন, তাহলে তাঁদের এখানে ওখানে ফোন করে মুক্তিলাভের প্রবল সম্ভাবনা থাকে। সাধারণ মানুষ বা আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে গরিব মানুষের ক্ষেত্রে সেই সুযোগ প্রযোজ্য হয় না। সেই যুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গের নয়া আইন কার্যকর না করার জোরদার যুক্তি রয়েছে। বরং পথ দুর্ঘটনা এবং রাতের বেলায় মদ্যপ অবস্থায় দু’চাকা-চার চাকা চালানোর প্রবণতা তিনি কমিয়ে দিয়েছেন শহরে নাকা চেকিং বাড়িয়ে। তার উপকার কিন্তু ইতিমধ্যেই মিলতে শুরু করেছে। এবার যেটা হতে শুরু করেছে তা হল, অন্য বহু রাজ্যই অনুসরণ করতে শুরু করেছে মমতার রাজ্যকে। মোটর ভেহিকেলস আইন কার্যকর করার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে রাজ্যগুলির। তাই কোথাও সাধারণ মানুষ, আবার কোথাও ভোটের কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু রাজ্য এই আইন চালু করা থেকে বেঁকে বসেছে। কোনও রাজ্য পুরনো আইনই বজায় রাখছে, আবার কেউ কেউ জরিমানার অঙ্ক নিজেদের মতো করে লঘু করে নিচ্ছে। দায়টা গিয়ে চাপছে কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গাদকারির কাঁধে। কারণ, এই কঠোর জরিমানা সর্বস্ব আইনের গোটাটাই তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত। এক্ষেত্রে বিজেপির অন্দরেও তিনি একা হয়ে গিয়েছেন। আপাতত তিনি আশা করে চলেছেন, যদি রাজ্যগুলি তাঁর এই পদক্ষেপের মর্ম বোঝে!
তা অবশ্য দেশজুড়ে হওয়ার খুব একটা সুযোগ দেখা যাচ্ছে না। মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। তাই বিজেপি সরকার হওয়া সত্ত্বেও এই দুই রাজ্য কিন্তু ঝুঁকি নিতে চাইছে না। যদি তারা কার্যকর করেও, তাহলে জরিমানার অঙ্ক কমানো হবে।
অর্থাৎ ঘুরেফিরে সেই রাজনীতিতেই এসে ঠেকতে হচ্ছে। পথ দুর্ঘটনা এবং যান চলাচল সংক্রান্ত গাফিলতি ঠেকানোর জন্য সবার আগে প্রয়োজন সচেতনতার। মানুষের মধ্যে সেটা ঢুকিয়ে দিতে না পারলে শুধু জরিমানা দিয়ে খুব একটা কিছু হওয়ার নেই। ভোটের স্বার্থে দলগুলিই বাধ সাধবে। বা সাধারণের পকেটে চাপের আতঙ্কে। তাই আপাতত মোটর ভেহিকেলস রাজনীতির দ্বন্দ্বযুদ্ধের এই রাউন্ডে অ্যাডভান্টেজ মমতারই।