শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
পাকিস্তানের ধড়িবাজরা যত লম্ফঝম্প করছেন, তাঁদের হাঁড়ি ততই হাটের মাঝে ভেঙে যাচ্ছে। যেমন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রাক্তন বিধায়ক বলদেব কুমার ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। পাকিস্তানের সংখ্যালঘু রাজনীতিক বলদেবের অভিযোগ, সেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন নির্যাতনের শিকার। তাতে তিনি ভীত। স্ত্রী এবং দুই সন্তান নিয়ে তিনি ভারতের পাঞ্জাবে উঠে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলদেব বলেন, ‘‘পাকিস্তানে এখন কী ঘটছে, তা সারা দুনিয়া দেখতে পাচ্ছে। আশা করেছিলাম, ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতির কিছুটা ইতিবাচক বদল হবে। কারণ, খান সাহেব নতুন পাকিস্তান গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। পরিস্থিতি আগের চেয়ে খারাপই হয়েছে। শিখ তরুণীদের অপহরণ করা হচ্ছে। এক পুরোহিতের মেয়েকে অপহরণ করে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে।’’ বলদেবের আরও অভিযোগ, ‘‘পাকিস্তানে জঙ্গিরা মদত পাচ্ছে। সাধারণ মুসলিমদেরই নিরাপত্তা নেই। সেখানে আমরা সংখ্যালঘুরা সুরক্ষিত থাকি কী করে?’’ পাকিস্তানের মুখ আর-এক দফা পুড়ল রাষ্ট্রসঙ্ঘের মঞ্চে। ইমরান খানের দেশের মুখোশ টেনে খুলে দিয়েছেন সেখানকারই এক মানবাধিকার কর্মী। বুধবার জেনিভায় কাউন্সিলের ৪২তম অধিবেশনে পাকিস্তানের মানবাধিকার কর্মী এস এইচ সেরিং বলেন, ‘‘গিলগিট-বালটিস্তান ভারতের অংশ। সাত দশক যাবৎ পাকিস্তান সেখানে অত্যাচার চালাচ্ছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদস্যদের এটা বোঝা উচিত।’’ ওয়াশিংটনের ইনস্টিটিউট অফ গিলগিট-বালটিস্তান স্টাডিজের ডিরেক্টর সেরিং বলেন, ‘‘গিলগিট-বালটিস্তান এবং কাশ্মীরের মানুষের পাশে থাকার ভান করছে পাকিস্তান। বাস্তবে কাশ্মীরের মানুষকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছে ইসলামাবাদ। গোটা বিশ্ব, বিশেষ করে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য তা ভালোমতোই জানে। ১৯৪৯ সালে করাচি চুক্তির মাধ্যমে গিলগিট-বালটিস্তানকে পাকিস্তান কাশ্মীর থেকে আলাদা করে দেয়। আর এই অন্যায় বিভাজনের আগে গিলগিট-বালটিস্তান অঞ্চলের বাসিন্দাদের কোনোরকম অনুমতি পাকিস্তান সরকার নেয়নি।’’
অর্থাৎ কাশ্মীর নিয়ে মায়া কান্না ভেস্তে তো গেলই, সেইসঙ্গে পাকিস্তান বিপাকে পড়ল গিলগিট-বালটিস্তান নিয়ে। আশা করা যায়, ভারতের প্রতিনিধি পাকিস্তানের এই ধ্যাষ্টামি যথাযথভাবেই রাষ্ট্রসঙ্ঘে তুলে ধরবেন। পাকিস্তানের কাছে সারা দুনিয়ার জবাব চাওয়া উচিত, কেন গিলগিট-বালটিস্তান অঞ্চলের বাসিন্দারা মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছেন? কেন সেখানে হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে গুম খুন করা হচ্ছে? বালুচ ও পাখতুনদের উপর পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর অত্যাচার চরমসীমা অতিক্রম করেছে কেন? কাশ্মীর নিয়ে ভারতের দিকে আঙুল তোলার আগে পাকিস্তান নিজের পোড়া মুখটি আয়নায় ভালো করে দেখুক। আর এটাও তারা জেনে রাখুক—কাশ্মীরে যাবতীয় অশান্তির নেপথ্যে শুধুই পাকিস্তান। পাকিস্তানের অতৃপ্ত আত্মাটি নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলেই কাশ্মীর সত্যিকার ভূস্বর্গরূপেই বিরাজ করবে। পাকিস্তানের ভয়টা আসলে অন্য, এপারে কাশ্মীর স্বাভাবিক হয়ে এলেই পাক-অধিকৃত কাশ্মীরেও শান্তিপ্রতিষ্ঠার দাবিটি জোরাল হবে। সেই দাবি সংক্রামিত হবে গিলগিট-বালটিস্তান অঞ্চলেও। এই পুরো অঞ্চল শান্ত স্বাভাবিক হয়ে গেলে তা হবে পাকিস্তানের নেতিবাচক রাজনীতির ঐতিহ্যে কুঠারাঘাত! হিংসা আর ঘৃণার নীতিতে সিক্ত রাষ্ট্রটি হয়তো এই পরিবর্তনের ভিতর অস্তিত্ব সঙ্কটের ইঙ্গিত খুঁজে পাচ্ছে।