শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ভোর ৪টে নাগাদ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। ঘটনাস্থল থেকে ২৩টি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতার জেরে কারখানার ছাদ ভেঙে পড়ে। এমনকী বিস্ফোরণের কম্পনে পাশের কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে পড়ে জানালার কাচ। আতঙ্কিত মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় একাধিক গাড়ি। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে শব্দ শোনা গিয়েছিল। পাঞ্জাবের ঘটনাটিকে কেবলমাত্র বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা হিসেবে দেখা ঠিক নয়। ভারতের বহু জায়গাতেই বেআইনিভাবে বাজি প্রস্তুত হয়। ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে বিশেষত দেওয়ালির পরবে বাজির আলোকে রাঙা হয়ে ওঠে আকাশ। এছাড়াও এখনকার যে কোনও পুজোর নিরঞ্জনপর্ব, বিয়েশাদি, জন্মদিন, খেলায় জেতার মুহূর্তে বাজি ফাটানোটা যেন রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আলোর তুলনায় শব্দবাজির কদর যেন বেশি। কিন্তু, আমরা কেউ একবারের জন্যও ভাবি না, বাজি তৈরি, মজুত ও ফাটানোর মধ্যে আছে বিপজ্জনক ঝুঁকি। শুধু তাই নয়, বাজির ধোঁয়ার ফলে যে দূষণ হয়, তা মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে পরিবেশে। সে কারণেই বিধিনিষেধ মেনে বাজি তৈরি না করে বহু প্রস্তুতকারকই বেআইনি পদ্ধতি অবলম্বন করেন। বেশ কয়েকটি সমীক্ষায় এও দেখা গিয়েছে যে, এই বাজি তৈরির সঙ্গে যুক্ত করা হয় শিশু শ্রমিকদেরও। যা আরও একধাপ বেআইনি অপরাধমূলক কাজ।
সব মিলিয়ে প্রতিবার এই উৎসব মরশুম এলেই বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ যেন বাৎসরিক দুর্ঘটনাপঞ্জিতে এসে গিয়েছে। কিছুদিন আগেই কলকাতা লাগোয়া চম্পাহাটিতে একইভাবে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছিল। সেখানে কেউ মারা না গেলেও দু’জন জখম হয়েছিলেন। এর আগেও চম্পাহাটিতে দুর্ঘটনায় কয়েকজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া অন্যান্য জেলাতেও বাজি কারখানার বিস্ফোরণে বা অগ্নিকাণ্ডের জেরে প্রায়শই হতাহতের ঘটনা ঘটে। অথচ, এসবই দিনের পর দিন পুলিস-প্রশাসনের চোখের সামনে, নাকের ডগায় বহাল তবিয়তে চলে আসছে। এবারের উৎসবের মরশুমে এমন দুঃখজনক ঘটনা যাতে কোনওভাবেই না ঘটে সেজন্য সতর্ক থাকতেই হবে। আমাদের পশ্চিমবঙ্গেও বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। একথা ঠিক খুব গভীরভাবে তলিয়ে দেখলে দেখা যাবে—এর সঙ্গে আর্থ-সামাজিক বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। ফলে, পুলিস জানলেও অনেকসময় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না, বা নেয় না। কিন্তু, সংখ্যাগরিষ্ঠের আনন্দের নামে এভাবে মৃত্যু-মিছিলের দায়ও কি পুলিস এড়াতে পারে? রাতের আকাশে আলোর রোশনাই জ্বেলে সাময়িক মোহিত হয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দূষণ নামক চিরকালের অন্ধকার ডেকে আনার কি শেষ হবে না!