শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
তবুও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বিবাদ মিটিয়ে ফেলার জন্য কূটনৈতিক শিষ্টাচার দেখাতে কার্পণ্য করেনি ভারত। গত সাত দশকে দু’দেশে অনেক দল ও মতের সরকার এসেছে। ভারতের কোনও সরকারের বিদেশনীতি বদলায়নি। কিন্তু, পাকিস্তান শোধরায়নি কোনোদিন। ভারতের গোলাপের জবাবে তারা বার বার চোরাগোপ্তা গোলাই নিক্ষেপ করেছে। নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয় সরকার সার বুঝেছে, যে-দেশ যে-ভাষা ভালো বোঝে সেই দেশের সঙ্গে শুধু সেই ভাষাতেই কথা বলা হবে। কাশ্মীরে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় উৎপাত ঠেকাতে ভারত সাহসী পদক্ষেপই করবে। সেইমতো ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীর প্রদেশের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এবং, পরিচালানার সুবিধার্থে প্রদেশটিকে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে। আমরা দেখেছি, ভারতের একান্ত অভ্যন্তরীণ এই বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানের শাসককুলের কতখানি মাথা খারাপ অবস্থা হয়েছে। মোদি সরকারের এই ‘ধৃষ্টতা’র হেস্তনেস্ত করার আবদার নিয়ে ইমরান খান অ্যান্ড কোম্পানি বিশ্বজুড়ে মুরুব্বি ধরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু, পাকিস্তানের দাবি প্রথমেই খারিজ করে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্সসহ বৃহৎ শক্তিধর দেশগুলি। এমনকী বহুকালের বন্ধু চীনের মতিগতিও পাকিস্তানের মাতব্বরদের এইযাত্রায় ভালো ঠেকছে না। পাকিস্তানের পক্ষে আরও পরিতাপের বিষয় হল, আরবের মুসলিম রাষ্ট্রগুলিও পাকিস্তানের মায়াকান্নায় ভুলতে নারাজ। বেশিরভাগ মুসলিম রাষ্ট্র বরং গণতান্ত্রিক ভারতের প্রতিই আস্থা জ্ঞাপন করেছে।
অবশেষে মঙ্গলবার জেনিভায় রাষ্ট্রসঙ্ঘে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মহম্মদ কুরেশি স্বীকার করে নিয়েছেন যে জম্মু ও কাশ্মীর ভারতেরই অঙ্গরাজ্য। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরকে ‘ভারতীয় রাজ্য’ বলেই উল্লেখ করেন তিনি। যে-দেশ ‘ভারত অধিকৃত’ কাশ্মীর ছাড়া এতদিন বলেনি সেই দেশের বিদেশমন্ত্রীর মুখে এমন স্বীকারোক্তি সত্যিই বিস্ময়কর। তাই পাকিস্তানের অভ্যন্তরে এবং তাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলির যেন ঘোর কাটছে না। সংশ্লিষ্ট মহলে স্বাভাবিক প্রশ্ন উঠেছে, এটা কি পাকিস্তানের কাশ্মীরনীতিতে বদলের কোনও ইঙ্গিত? নিঃসন্দেহে এ এক গুরুত্বপূর্ণ চর্চার বিষয়। এই প্রশ্নের জবাব পেতে আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে, এটুকু বলা যায়, পাকিস্তানের কাশ্মীরনীতি বদলের শুভবুদ্ধি সত্যিই যদি জাগ্রত হয় তবে তাতে আর কারও না হোক অন্তত পাকিস্তানের মঙ্গল সূচিত হবে। একটি সুস্থ সবল প্রতিবেশীর অনিষ্ট করার জন্য যে সময়, মেধা ও উদ্যম তারা সাত দশক যাবৎ নষ্ট করেছে, তাতে ছেদ পড়বে। এগুলি পাকিস্তানের কল্যাণে নিয়োজিত হলে অবশ্যই দেশটির উন্নতির পথ সুগম হবে। বাড়তি পাওনা হবে কাশ্মীরের মানুষের। তারাও সুখে শান্তিতে ভারতে বাঁচতে বাড়তে পারবে। কারণ, কাশ্মীরের অশান্তির এক ও একমাত্র কারণ পাকিস্তানের কালো হাত। সর্বোপরি ভারত এবং পাকিস্তান ধীরে ধীরে সুন্দর প্রতিবেশী হয়ে উঠতে পারবে। বন্ধুবৃদ্ধির থেকে ভালো আর কী হয় একটি জীবনে?