দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
মাল্টা না মিললেও শীতের স্বল্প আমেজে বর্তমানে মালদহের বাজার নাগপুরের কমলালেবুতে ছেয়ে গিয়েছে। জেলার দুই শহরের সব বড় বাজারের ফলের দোকানগুলিতে এখন কমলা কিনতেই ভিড় উপচে পড়ছে ক্রেতাদের। তবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দার্জিলিংয়ের সুস্বাদু ভালো কমলা জেলায় আসতে এখনও একটু দেরি আছে। ভালো মানের কমলা বাজারে উঠতে উঠতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। ততদিন কমলাপ্রিয়দের ভরসা জোগাচ্ছে এই নাগপুরের লেবুই। বর্তমানে ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদহের বাজারগুলিতে ৭০-৮০ টাকা দরে মিলছে এই নাগপুরের কমলালেবু।
নাগপুরের কমলালেবু দার্জিলিয়ের কমলালেবুর মতোই। এই দুই ধরনের লেবুরই আকার ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কাছাকাছি। বিশেষ কোনও পার্থক্য নেই। তবে মাল্টা তাদের চাইতে একটু আলাদা। এর আকার এখানকার কমলালেবুর থেকে একটু বড় ধরনের হয়। এর কোয়া ছাড়িয়ে খাওয়ার সুযোগ কম থাকে। কমলালেবুর তুলনায় মাল্টায় আঁশ বেশি হয়। বাড়িতে খাওয়ার জন্য অনেকেই মাল্টা কেনেন ঠিকই, তবে এর খুবই কদর ফলের রস বিক্রেতাদের কাছে। আপাতত মূলত উত্তর ও পশ্চিম ভারত থেকে মাল্টা আমদানি করা হলেও, মালদহে এর ব্যাপক চাহিদা দেখে স্থানীয়ভাবেও উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। জেলা উদ্যানপালন দপ্তর ইংলিশবাজারের মাটিতে এই মাল্টা ফলানোর প্রাথমিক চেষ্টা করছে। গাছ লাগানোও হয়েছে। তবে সেই গাছগুলিতে এখনও ফল আসেনি। যদি প্রাথমিক এই উদ্যোগে সাফল্য পাওয়া যায়, তাহলে জেলায় আরও বেশি করে মাল্টা চাষের উদ্যোগ ভবিষ্যতে নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
মালদহ জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের উপ অধিকর্তা কৃষ্ণেন্দু নন্দন বলেন, এখন বাজারে ভিনরাজ্যের কমলালেবু এসেছে। তবে আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দার্জিলিংয়ের লেবু বাজারে এসে যাবে। জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে মাল্টা চাষের উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। মাল্টার কোয়া ছাড়িয়ে খাওয়া কঠিন। রস বিক্রি করতেই এই ফল বেশি বিক্রি হয়। আকারে বড়। স্বাদে মিষ্টি। আমাদের এখানে এর ফলন আগে কখনও হয়নি। আমি বিদেশে এই মাল্টা খেয়েছি। কমলালেবুর চাইতেও মিষ্টি হয়। মালদহে কেমন হবে জানি না। তবে পরীক্ষামূলক উৎপাদন সফল হলে, আগামী দিনে এনিয়ে এগনো যেতেই পারে।
পুরাতন মালদহের ফল ব্যবসায়ী গৌতম পাল বলেন, দার্জিলিংয়ের কমলালেবু এখনও মালদহের বাজারে আসেনি। তবে নাগপুরের কমলা এখনই চলে এসেছে। মানুষ কিনছে। দাম ওই ৭০-৮০ টাকার মধ্যেই থাকছে। স্বাদে এই নাগপুরে কমলাও কিছু খারাপ হবে না। ভালো মিষ্টি কমলালেবু বাজারে এখনও সেই ভাবে আসেনি। ডিসেম্বর মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ভালো কমলা চলে আসে। তবে এখন থেকেই মানুষ দোকানে এসে কমলার খোঁজ করছেন। চাহিদা ভালোই আছে। ক্রেতাদের সেই চাহিদা অনুযায়ী আমাদের নাগপুরের কমলা বিক্রি হচ্ছে। আর বাজারে মাল্টা এখনও আসেনি। ওই ফলটা আরও দেরিতে ওঠে।
ইংলিশবাজারের এক ফল বিক্রেতা রাজু হালদার বলেন, কিছুদিন ধরেই কমলা ভালো বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এখন নাগপুর কমলা রয়েছে। মানুষ এটাও নিচ্ছে। কিন্ত ক্রেতাদের মন পড়ে থাকে দার্জিলিংয়ের কমলালেবুর দিকে। তার স্বাদ পেতে গেলে এখনও দুই থেকে তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতেই হবে। তবে নাগপুরের লেবুর বিক্রিও ভালোই হচ্ছে।