দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে লন্ডন ব্রিজ হামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূরণে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ নির্বাচনে ফায়দা তোলার খেলায় মেতেছেন তিনি বলে অভিযোগ করেছে জঙ্গিহানায় হত জ্যাক মেরিটের পরিবার। পাশাপাশি, উসমানের মতো জঙ্গিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য পূর্ববর্তী ‘বামমনস্ক সরকারকে’ দায়ী করেছে তাঁর পরিবার। একইসঙ্গে ‘লেবার পার্টিকে কালিমালিপ্ত করার নোংরা খেলায়’ মেতেছেন জনসন বলে অভিযোগ করেছেন দেশের অন্তর্বর্তী আইনমন্ত্রী রিচার্ড বার্গন। অন্যদিকে, নিরাপত্তার সঙ্গে কনজারভেটিভ পার্টি আপস করছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন লেবার পার্টি নেতা জেরেমি করবিন।
সন্ত্রাসবাদ নিয়ে বিবিএক্স ওয়ানকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জনসন। সেখানে লন্ডন ব্রিজ হামলা নিয়ে লেবার পার্টিকে দায়ী করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সাজার মেয়াদ ফুরনোর আগে জঙ্গিদের মুক্তি প্রকল্প চালু করেছিল লেবার পার্টি। যে আইনে ভর করে ছাড়া পেয়েছিল উসমান। অথচ, বাস্তব পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। জনসন আরও বলেছেন, সংশ্লিষ্ট আইন বলে প্রায় ৭৪ জন জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জনসনের বিষোদ্গারের সেই খবর প্রকাশ করেছে ডেইলি মেল ও এক্সপ্রেস পত্রিকা। তা পত্রিকা দু’টির প্রথম পাতায় স্থান পেয়েছে। সেই খবর রিট্যুইট করে জনসনের উদ্দেশে মেরিটের বাবা লিখেছেন, ‘আপনারা যেখানে ঘৃণা, বৈষম্য ও অবহেলা মতো বিষয়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে থাকেন, সেখানে আমার ছেলে এ সবের ঘোর বিরোধী ছিল।’
এদিকে, বিচারাধীন বন্দি কী করে হামলা চালাতে পারে, সে বিষয়ে তদন্তে নেমেছে গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৫। লন্ডন ব্রিজ হামলার পর অন্য একটি নাশকতার ছক কষার অভিযোগে উসমান ঘনিষ্ঠ তথা পাক বংশোদ্ভূত জঙ্গি নাজাম হুসেনকে গ্রেপ্তার করেছে ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস পুলিস। মুক্তি পাওয়া ৭৪ জন জঙ্গির মধ্যে অন্যতম নাজাম। ব্রিটিশ পত্রিকা ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ জানিয়েছে, আগামী দিনে আরও কয়েকজনকে জেলে ফেরৎ পাঠানো হতে পারে। পুলিস জানিয়েছে, উসমানের থেকে পাঁচ বছরের বড় হলেও ব্রিটেনের স্ট্রোক-অন-ট্রেন্ট শহরে তারা বেড়ে ওঠে।
আরও জানা গিয়েছে, উসমান ও নাজাম দু’জনেই বিদ্বেষ প্রচারক আনজেম চৌধুরী ও তার সংগঠন আল-মুহাজিরৌনের সংক্রিয় সদস্য। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাশ্মীরে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। ২০১০ সালে মাত্র কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ ওড়ানোর ষড়যন্ত্র করেছিল উসমান। কিন্তু, তার আগেই পুলিসের হাতে ধরা পড়ে যায় উসমান। সেই মামলায় ২০১২ সালে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে লন্ডনের এক আদালত। উসমানকে ১৬ বছরের সাজা শোনায় আদালত। কিন্তু, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গত বছরের ডিসেম্বরে প্যারোলে মুক্তি পায় উসমান। তারপর উসমান স্ট্যাফোর্ড চলে গেলেও, স্ট্রোকে নিজের বাড়ি চলে যায় নাজাম। রবিবার রাতে তাকে ফের জেলে পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে, লন্ডন ব্রিজ হামলায় নিহতদের স্মরণ করতে আজ লন্ডনের গিল্ডহলে একটি শোকসভার আয়োজন করা হয়েছিল। এছাড়াও কেমব্রিজেও একটি শোকসভার আয়োজন করা হয়। লন্ডনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী জনসন, লেবার পার্টি নেতা জেরেমি করবিন, লন্ডনের মেয়র সাদিক খান প্রমুখ। কেমব্রিজশায়ারের বাসিন্দা মেরিটের প্রতি শোক জানায় তার পরিবার। তারা জানিয়েছে, ‘ও আমাদের এবং তার বহু বন্ধু ও সহকর্মীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। আমরা ওকে খুব মিস করব। জ্যাক তার নৈতিকতায় অটুট ছিল। প্রতিশোধ নয়, ও মুক্তি, পুনর্বাসনে বিশ্বাস করত। সবসময় বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়াত।’ মেরিটের পরিবরের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ‘এই ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনার পর সরকার বন্দিদের জন্য বা তাদের প্রয়োজনের থেকে বেশি সময় গারদে আটকে রাখার জন্য আরও কঠোর আইন তৈরি করবে। কিন্তু, আমরা জানি জ্যাক তা চাইতো না।’