দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদি আয়কর দপ্তরের বড়কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে কোনও দ্বিধা না রেখেই তিনি জানিয়েছিলেন, অর্থমন্ত্রকের আওতায় থাকা এই দপ্তর আদতে দুর্নীতির আখড়া। মোদির সেই কথায় অবশ্য চটেছিলেন কর্তাদের একাংশ। কিন্তু হাল ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী। তিনি ফের হুঁশিয়ারি দেন, স্বচ্ছতার প্রশ্নে কোনওভাবেই ছাড় পাবেন না দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মী-অফিসাররা। এমনকী যাঁদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া বা কোনওরকম দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআইকে তদন্তে নামাতে কোনও কার্পণ্য করছে না দপ্তর।
সম্প্রতি একটি তালিকা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকার, যেখানে ‘রুল ৫০ জে’- কে কাজে লগিয়ে ২১ জন অ্যাসেসিং অফিসারকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় আয়কর দপ্তর। মোট পাঁচ দফায় এভাবে ৮৫ জনকে সরানো হয়েছে। যোধপুর, মুম্বই, বিশাখাপত্তনম, হায়দরাবাদ, রাজকোট, নাগপুর, বিকানির, উজ্জয়িনী, ভোপাল থেকে ওই অফিসারদের সরানো হয়েছে। এঁদের মধ্যে সিংহভাগ অতি উচ্চপদে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী হিসেবে চাকরির যে গ্যারান্টি এতদিন ছিল, তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত। যাঁদের চাকরি যাচ্ছে, তাঁদের বরখাস্তের চিঠি ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে তিন মাসের মাইনের সঙ্গে। পিএফ বা গ্র্যাচুইটির মতো পাওনাগুলি বাদ রেখে আর কোনও আর্থিক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না বরখাস্ত হওয়া অফিসারদের। এত অল্প সময়ে একসঙ্গে এতজনের চাকরি যাওয়া কার্যত নজিরবিহীন, বলছেন কর্তারা। দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগেই যেভাবে শাস্তির খাঁড়া নেমে আসছে, তা নিয়েও চিন্তিত তাঁরা।
কলকাতা আয়কর ভবনের এক কর্তার কথায়, সিবিআই যে কেসগুলির তদন্ত করছে, সেগুলির কথা আলাদা। কিন্তু সম্প্রতি এখান থেকে এমন এক অফিসারের চাকরি চলে গিয়েছে, যাঁর বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। প্রশাসনিক গাফিলতির কারণ দেখিয়ে তাঁকে সরানো হয়েছে। ফলে কাকে কোন অভিযোগে সরানো হবে, তা নিয়েই বেশি চিন্তা কর্তাদের। তাঁদের একাংশের কথায়, চাকরি যাওয়া তো একরকমের বিষয়। কিন্তু যেভাবে অল্প কর্মী ও অফিসার দিয়ে কাজ চলছে, তা না চলার মতোই। করদাতার সংখ্যা ও কর আদায় বাড়ছে। তার সুষ্ঠু হিসেব কষার জন্য যে পরিকাঠামো থাকা দরকার, তা নেই। কর্মী না থাকায় বিপুল আউটসোর্সিং হচ্ছে। করদাতাদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তাও সেক্ষেত্রে বড় প্রশ্নের মুখে। সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্সেস-এর তরফে নতুন নতুন নিয়ম চালু হচ্ছে। সেখানে নিয়োগ করা হচ্ছে কর্মী ও অফিসরদের। ফলে রুটিন কাজের লোকবল নেই। গোটা দপ্তরের যেমন কোমর ভাঙা অবস্থা, তার সঙ্গে যুঝে ওঠা যাবে কী করে, সেটাও বড় চিন্তা বড়কর্তাদের।