দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
সূত্রের খবর, সম্প্রতি এক অভিভাবক রানিগঞ্জের এক ভুয়ো নার্সিং স্কুলের অনুমোদনের জন্য জারি করা রাজ্য নার্সিং কাউন্সিলের একটি ভুয়ো নির্দেশনামা নিয়ে কাউন্সিলের দ্বারস্থ হন। মেয়েকে সেখানে ভর্তি করিয়ে যে ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন, সেই কাগজও নিয়ে আসেন। সেসব দেখে মাথায় হাত পড়ে রাজ্য নার্সিং কাউন্সিলের কর্ত্রীদের। দেখা যায়, কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার কেয়াদেবীর সই, লেটারহেড সবই জাল করে একটি ভুয়ো শংসাপত্র ছাপানো হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, রানিগঞ্জের সেই নার্সিং স্কুলটি নাকি ইন্ডিয়ান এবং রাজ্য নার্সিং স্কুলের অস্থায়ী অনুমোদন পেয়েছে। খোঁজখবর নিয়ে কাউন্সিল জানতে পারে, একজন-দু’জন নয়, বহু ছাত্রী এই প্রতারণার শিকার। এরপরই বিধাননগর উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ জানান রাজ্য নার্সিং কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার কেয়াদেবী। সোমবার এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কেয়াদেবী বলেন, এসব প্রতারণাচক্রের কারবার। আমরা পুলিসে জানিয়েছি। বাবা-মায়েদের এবং ছাত্রছাত্রীদেও বলব এই চক্রের ফাঁদে পা না দিতে। আমাদের ওয়েবসাইট দেখলে স্পষ্ট হয়ে যাবে কোন নার্সিং কলেজ ও স্কুলের অনুমোদন আছে, কাদের নেই। রাজ্য নার্সিং কাউন্সিলের প্রধান উপদেষ্টা ডাঃ নির্মল মাজি বলেন, গরিব-নিম্নবিত্ত পরিবারের ছাত্রীদের সারল্যের সুযোগ নিয়ে প্রতারণা চক্র চালাচ্ছে একদল অসাধু লোক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় এইসব চলতে দেওয়া হবে না। বিষয়টি পুলিস ও প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, অত্যন্ত গর্হিত কাজ। রাজ্য নার্সিং কাউন্সিল পুলিসে অভিযোগ জানিয়েছে। বিষয়টি আমাকেও জানিয়েছে।
সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের এক আদিবাসী ছাত্রীও এভাবে প্রতারণার শিকার হয়ে অভিযোগ করেছিলেন। লিখিত অভিযোগপত্রে নার্সিং শাখার আধিকারিকদের তিনি জানিয়েছিলেন, টাকার বিনিময়ে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের নার্সিং সুপারের ইস্যু করা একটি ভুয়ো সরকারি নির্দেশনামা তাঁকে দিয়েছে নার্সিং চক্রের দালালরা। সেটি নিয়ে নার্সিং পড়ার খরচের জন্য আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরে ঋণ চাইতে গেলে বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন তিনি। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে লেখালেখি হলে নার্সিং শাখার তরফে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজকে পুলিসে অভিযোগ জানাতে বলা হয়।
প্রসঙ্গত, রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন মহল থেকে স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে বিভিন্ন ধরনের নার্সিং চক্রের একাধিক খবর আসছে। কোনও চক্র বিভিন্ন সরকারি নার্সিং কলেজ ও স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নামে এককালীন সাত থেকে আট হাজার টাকা নিচ্ছে। আবার কোনও চক্র দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় অননুমোদিত এএনএম, জিএনএম নার্সিং পড়তে পাঠাচ্ছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীর ওই ছাত্রী এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের নার্সিং ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষাকে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, হাসপাতালেরই কর্মী পরিচয় দেওয়া জনৈক ‘মহেশবাবু’কে নার্সিং পড়তে ভর্তির জন্য সাত হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই লোক লিখিতভাবে টাকার প্রাপ্তিস্বীকার করেনি। তিনিও নার্সিং কলেজে ভর্তি হতে পারেননি।
বিশ্ব বাংলা লোগো জাল করে ছাপানো ওই নির্দেশনামায় ‘জিএনএম/এএনএম অথরিটি’ বলে উল্লেখ করে ছাত্রীটির জন্য একটি ভুয়ো সরকারি নির্দেশ ছাপানো হয়েছিল। সেখানে জয়া মণ্ডল নামে স্বাক্ষর করেছেন এনআরএসের নার্সিং সুপার। ১১ অক্টোবর জারি করা ওই জাল নির্দেশে ছাত্রীটিকে ২৮ নভেম্বর এনআরএসের অ্যাকাডেমিক বাড়িতে ভেরিফিকেশনের জন্য আসতেও বলা হয়েছিল। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এভাবে নির্দেশ জারি করা হয় না। তাছাড়া মেমো নম্বর না থাকা ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করা জয়া মণ্ডল নামে এনআরএসের কোনও নার্সিং সুপারই নেই। ভর্তিও হয়নি।