বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
পটাশপুর-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তাপস মাজি বলেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ধর্মতলাগামী বাস আটকাতে কর্মীদের আগের দিন প্ররোচনা দিয়েছিলেন। তাতেই উৎসাহিত হয়ে বিজেপির লোকজন শনিবার রাতে নৈপুরে আমাদের বাস লক্ষ্য করে বোমা মেরেছে। পাশাপাশি গোকুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কর্মীদের মারধর করার পাশাপাশি পার্টি অফিসে হামলা চালিয়েছে। আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কাঁথির অতিরিক্ত পুলিস সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, গোকুলপুরে পার্টি অফিসে হামলা চালানোর ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, আমাদের কর্মীরা কোথাও তৃণমূলের বাস লক্ষ্য করে বোমা মারেনি। পার্টি অফিসেও হামলা চালায়নি। তৃণমূল নেতাদের অনেকেই সরকারি প্রকল্পে উপভোক্তাদের টাকায় ভাগ বসিয়েছেন। সেই টাকার হিসেব চাইতে কেউ কেউ গিয়েছিলেন। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই।
শনিবার রাত থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে তৃণমূল-কর্মীভর্তি বাস ধর্মতলার উদ্দেশে রওনা দেয়। রবিবার সকাল থেকে জেলার নানাপ্রান্ত থেকে বাস, ছোট গাড়িতে শাসক দলের কর্মীরা কলকাতায় যান। এদিন চারশোর বেশি বাস জেলার বিভিন্ন রুট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। ছুটির দিন সত্ত্বেও সাধারণ যাত্রীরা নাজেহাল হন। মেচেদা-হলদিয়া রুটে বাসের সংখ্যা একেবারে কম ছিল। ৪১নম্বর জাতীয় সড়ক এবং ১১৬বি জাতীয় সড়কেও বাসের সংখ্যা ছিল অপ্রতুল। সকাল থেকে মেচেদা, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট সহ বিভিন্ন স্টেশনে তৃণমূল-কর্মীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কোলাঘাটে জাতীয় সড়কের ধারে ও কোলাঘাট স্টেশনে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে ক্যাম্প করে ধর্মতলামুখী কর্মী-সমর্থকদের জল, বাতাসা ও চিঁড়ে পরিবেশন করা হয়।
ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার বেরা বলেন, পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন রুট থেকে চারশোর বেশি বাস তুলে নেওয়া হয়েছিল। অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তায় বাস না থাকায় যাত্রী দুর্ভোগ ছিল। তবে, রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় অফিস, স্কুল, আদালত কিংবা হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ থাকার কারণে নিত্যযাত্রীদের সংখ্যা কম ছিল। যদিও সাধারণ যাত্রীদের সমস্যা হয়েছে।
তমলুক শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে ২০টি বাইকে ৪০জন যুবকর্মী এদিন ধর্মতলায় যান। সকাল ৮টা নাগাদ তাঁরা শহর থেকে রওনা দেন। সকাল ১১টা নাগাদ ধর্মতলায় পৌঁছে যান। তারপর সভা শেষে সন্ধ্যা নাগাদ তাঁরা তমলুকে ফিরে আসেন। যুব সংগঠনের শহর সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া বলেন, এদিন তমলুক শহর থেকে ৩০টি বাসে চেপে কর্মী-সমর্থকরা ধর্মতলায় গিয়েছিলেন। এছাড়াও যুবদের একটি বাইক র্যা লি ধর্মতলায় গিয়েছিল। অন্যান্যবারের তুলনায় শহর থেকে বেশি সংখ্যক কর্মী-সমর্থক কলকাতায় গিয়েছিলেন।
নন্দীগ্রাম আন্দোলনের শহিদ পরিবারের ৪২জন সদস্য এদিন ধর্মতলায় গিয়েছিলেন। স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী প্রতিবছর ২১জুলাইয়ের সভায় শহিদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেন। এবারও তাঁর উদ্যোগে শহিদ পরিবারের ৪২জন সভামঞ্চে যান। আগামী দিনে পথ চলার ক্ষেত্রে নেত্রী কী দিকনির্দেশ করেন, তা জানতে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে কাতারে কাতারে তৃণমূল কর্মী-সমর্থক ২১ জুলাইয়ের সভায় অংশ নিয়েছিলেন। এই মুহূর্তে অন্যান্য জেলার মতো পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেও তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি। গেরুয়া বাহিনীকে রুখতে নেত্রীর দাওয়াই শুনতে সংসদ সদস্য থেকে বিধায়ক, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্য থেকে সাধারণ কর্মী-সমর্থক, এদিন সকলেরই গন্তব্যস্থল ছিল ধর্মতলা। জেলা থেকে চারশোর বেশি বাসে কর্মী-সমর্থকরা তো গিয়েছিলেনই, পাশাপাশি এদিন হাজার হাজার তৃণমূল কর্মী-সমর্থক ট্রেনে এবং প্রাইভেট গাড়িতেও ধর্মতলা যান। প্রতিটি গাড়িতেই ছিল ঠাসা ভিড়। বেসরকারি বাসের পাশাপাশি অনেক ট্যুরিস্ট বাসও রিজার্ভ করা হয়েছিল এদিন। তাতে চড়ে রাত থেকেই দলের কর্মী-সমর্থকদের ধর্মতলার উদ্দেশে রওনা দিতে দেখা যায়।