বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
তেহট্ট ও পলাশীপাড়া থানা এলাকায় রাস্তার ধারে অনেক প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় আছে। ওইসব স্কুলে ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটে। এমনকী পলাশীপাড়া থানার পলশণ্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে স্কুলে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় দু’জন ছাত্রছাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। অন্যদিকে, তেহট্ট থানার সিদ্ধেশ্বরীতলা ইন্সটিটিউশনে কয়েকদিন আগে এক ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীকে দু’জন বাইক আরোহী অপহরণ করার চেষ্টা করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় ওই ছাত্রী রক্ষা পেয়ে যায়। তেহট্ট শ্রীদাম চন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের সামনেও ছাত্রছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা হয়। পুলিস কদিন ধরে অভিযান চালানোয় সেই উৎপাত বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনায় অভিভাবকরা আতঙ্কে ছিল। অন্যদিকে, স্কুলে ছেলেমেয়েদের পাঠিয়ে সব সময় আতঙ্কে থাকতেন বাবা-মা। এনিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায় অভিযোগ জানাতেন অভিভাবকারা। বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিসকে জানালে পুলিসের পক্ষ থেকে এই সমস্ত স্কুলে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেইমতো এলাকার প্রতিটি উচ্চ বিদ্যালয় ও রাস্তার পাশে যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে, সেখানে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়াররা এইসব জায়গায় ঠিকমতো ডিউটি করছেন কিনা তার প্রমাণ দিতে স্কুলের সামনে থেকে ভিডিও কল ও সেলফি তুলে আধিকারিকদের পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এমনকী সিভিক ভলান্টিয়াররা ঠিকমতো ডিউটি করছেন কিনা, পুলিসের টহলদারি গাড়ি মাঝে মাঝে এসে তা দেখে যাচ্ছে। এই ব্যবস্থা দেখে খুশি স্কুলের ছাত্রছাত্রী থেকে অভিভাবকরা। ছাত্রছাত্রীরা বলে, এই ধরনের উদ্যোগের জন্য আমরা নিশ্চিন্তে স্কুলে যেতে পারছি।
এদিন কৃষ্ণনগর-করিমপুর রাজ্য সড়কের পাশে অবস্থিত দেবনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ার হাত ধরে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের রাস্তা পার হচ্ছে। তেহট্ট উচ্চ বিদ্যালয়, শ্রীদাম চন্দ্র বালিকা বিদ্যাল্য, নাজিরপুর সারদা বিদ্যাপীঠ থেকে শুরু করে তরণীপুর উচ্চবিদ্যালয় সহ তেহট্ট থানা এলাকার ২৬টি উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে। অন্যদিকে, পলাশীপাড়া থানা এলাকায় উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয় মিলিয়ে মোট ১০টি স্কুলে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে। এমনকী রাতে যাতে স্কুলে চুরি না হয়, তারজন্য সিভিক ভলান্টিয়ার দেওয়া হবে।
তেহট্টের এক ছাত্রীর অভিভাবক প্রণব বিশ্বাস বলেন, পুলিসের এই সিদ্ধান্ত প্রশংসার দাবি রাখে। রাস্তার পাশের স্কুলগুলিতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন ছিল। তারসঙ্গে স্কুল শুরুর সময় ও শেষের সময় যেভাবে রোমিওদের উৎপাত হতো, তাতে মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে ভয় লাগত। এবার পুলিস ব্যবস্থা নেওয়ায় খুশি। এবিষয়ে দ্বাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রী বলে, আমরা স্কুল থেকে বের হলেই বেশ কয়েকজন বহিরাগত আমাদের উত্ত্যক্ত করত। সিভিক ভলান্টিয়ার আসায় সেই উৎপাত বন্ধ হয়েছে। তেহট্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানিকলাল ঘোষ বলেন, পুলিসের এই উদ্যোগে স্কুলে নিরাপত্তা বেড়েছে। তেহট্টের মহকুমা পুলিস আধিকারিক অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা স্কুলের সামনে সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়েছি। সব সিভিক ভলান্টিয়ারদের সর্তক করা বলা হয়েছে, তারা যাতে নিজেদের কর্তব্য ঠিক করে পালন করেন।