বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
প্রসঙ্গত, শনিবার বিকেলে ওন্দার জনসভায় বক্তব্য রাখার সময় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কর্মীদের বলেন, সভায় যোগ দিতে বের হওয়া নেতাদের রাস্তায় আটকে কাটমানির টাকা ফেরত নিয়ে তারপর কলকাতায় যেতে দিন। তারপরেই ওইদিন রাতে ইন্দাসের চেকপোস্ট মোড়ের কাছে বাগিচাবাঁধ এলাকায় প্রায় ৩০ থেকে ৪০জন বিজেপি কর্মী মুখে গামছা ও কাপড় বেঁধে লাঠি, ইট নিয়ে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও ছাতনা থেকে আসা পরপর ১০টি বাসে হামলা চালায় বলে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ। তৃণমূল কংগ্রেসের ইন্দাস ব্লক কোর কমিটির সদস্য শেখ রবিয়োল হোসেন বলেন, ওইদিন রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আমাদের ব্লক থেকে ৩০টি বাসকে পরপর লাইন দিয়ে ছাড়া হয়। সবক’টি বাস লাইন দিয়ে আকুই হয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেয়। পুলিস থাকায় কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও ছাতনার বেশ কিছু বাস চেকপোস্টের দিকে আসার সময় বিজেপির দুষ্কৃতীরা আটকে ভাঙচুর চালায়। এরপর বাস থেকে নেমে তৃণমূলের কর্মীরা একজোট হয়ে বিজেপি কর্মীদের তাড়া করে। গণ্ডগোলের খবর পেয়ে চেকপোস্ট এলাকায় পুলিসের টহলদারি ভ্যান ঘটনাস্থলে হাজির হলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিসের সাহায্যে বাসগুলি নিরাপদে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেয়। যদিও পুলিসের দাবি, ১০টি নয়, দু’টি বাসের সামনের কাচ ও আরও তিনটি বাসের জানলার কয়েকটি কাচে ভাঙচুর হয়েছে।
যদিও ইন্দাসে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তাঁদের দলের কেউ যুক্ত নয় বলে দাবি করেছেন বিজেপির ইন্দাস-১ মণ্ডল সভাপতি দশরথ মল্লিক। তিনি বলেন, আমাদের দলের বদনাম করার জন্য তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই বাইরের এলাকার বাসে ভাঙচুর চালিয়েছে।
অন্যদিকে, শনিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ওন্দা থানার কাঁটাবাড়ি এলাকায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা কলকাতায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তৃণমূলের অভিযোগ, কর্মীসমর্থকরা জড়ো হতে শুরু করার পরই বিজেপির কিছু লোক লাঠিসোঁটা হাতে এসে কলকাতার সভায় যাওয়া যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেয়। পরে বিজেপি কর্মীরা তাদের মারধর করে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিস কাঁটাবাড়ি গ্রামে হাজির হলে তাদের সঙ্গেও বিজেপি কর্মীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরে পুলিস মৃদু লাঠিচার্জ করে বিজেপি কর্মীদের সরিয়ে দেয়। বাসটিও কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেয়। ঘটনায় পুলিসের কাজে বাধা দেওয়া ও চড়াও হওয়ার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
কাঁটাবাড়ির পাশাপাশি মাজডিহা গ্রামেও তৃণমূল সমর্থকদের বাস আটকে রাখে বিজেপি কর্মীরা। খবর পেয়ে রাত ১টা নাগাদ সেখানেও পুলিসকর্মীরা হাজির হন। সেখানে পুলিসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি সমর্থকরা। পুলিস বিজেপি কর্মীদের সরিয়ে দিতে গেলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ওই ঘটনায় পুলিস ৭ বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
ওন্দার বিধায়ক অরূপ খাঁ বলেন, ক্ষমতায় আসার আগেই বিজেপি গায়ের জোরে ও মানুষকে ভয় দেখিয়ে তার মত পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে। গায়ের জোরে মানুষকে মিটিং মিছিলে যেতে বাধা দিচ্ছে। আর এই উস্কানিমূলক নির্দেশ দিচ্ছেন তাঁদের দলের রাজ্য সভাপতিই। এরকম একটা উচ্ছৃঙ্খল দল ক্ষমতায় এলে কী করতে পারে, মানুষ তা এখনই টের পাচ্ছে। দু’টি ঘটনাই পুলিসের সামনে হয়েছে। আমরা পুলিসকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।
বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক অমরনাথ শাখা বলেন, তৃণমূল নেত্রীর ঘোষণা শুনে আমাদের কর্মীরা স্থানীয় নেতার কাছ থেকে কাটমানির টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছিল। আমাদের কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিল। সেই সময় শাসকের দালাল পুলিস এসে কোনও কথা না শুনেই আমাদের কর্মীদের উপর কাঁটাবাড়ি ও মাজডিহায় লাঠিচার্জ করে। শুধু তাই নয়, কাঁটাবাড়িতেই ৩১ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন সহ একাধিক ধারায় মিথ্যা মামলা করেছে। তারমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া মাজডিহাতেও ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি। তাঁরা যে নির্দেশ দেবেন সেইমতো মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা কর্মীদের জামিনের দাবিতে আন্দোলনে নামব।