বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
পুলিস জানিয়েছে, গণ্ডগোলের ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়। যদিও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বসন্তপুরে বিশাল পুলিস বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বসন্তপুর এলাকায় বিজেপির একটি কার্যালয় রয়েছে। তার বেশ কিছুটা দূরেই রয়েছে তৃণমূলে একটি দলীয় কার্যালয়। ২১ জুলাই উপলক্ষে কলকাতার সমাবেশে যাওয়ার জন্য ওইদিন রাতে তৃণমূলের কার্যালয়ে দলের কর্মীরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই সময় কয়েকজন বিজেপি কর্মী তৃণমূলের কার্যালয় এসে গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। তারপরেই দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায় বলে অভিযোগ। আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, শনিবার রাত তখন সাড়ে ১১টা হবে। আমাদের কর্মীরা কলকাতা যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বিভিন্ন বাজার করে তারা জড়ো করা হচ্ছিল দলীয় কার্যালয়ে। সেই সময় বিজেপির একদল দুষ্কৃতী আমাদের কার্যালয়ে এসে তৃণমূলের কর্মীদের ব্যাপক মারধর করে। আমরা যাতে কলকাতার সমাবেশে উপস্থিত থাকতে না পারি তার জন্য পরিকল্পিত ভাবে আক্রমণ করা হয়। পরে পুলিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর আবারও রবিবার সকালে আমাদের বেশ কয়েকটি বাস আরামবাগ শহর থেকে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলে বিজেপি তাতেও বাধা দেয়। আগামী বিধানসভা ভোট ইভিএম মেশিনের পরিবর্তে ব্যালটে করবার দাবি তুলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরাও সেই দাবি অনুযায়ী বিভিন্ন মিটিং মিছিল করেছি। তাতেই ভীত-সন্ত্রস্ত হয়েছে বিজেপি। তাই ওরা ভয় পেয়ে আমাদের আক্রমণ করছে। মারধরের ঘটনায় তৃণমূলের বেশ কয়েকজন কর্মী জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অন্যদিকে, গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে পাল্টা অভিযোগ আনা হয়েছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। বিজেপির অভিযোগ, ওই রাতে প্রথমে তৃণমূলের কর্মীরাই তাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিস এলেও তাদের সামনেই চলে দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর। ঘটনায় পুলিস আবার দুই বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয় বিজেপি নেতা সুমন তেওয়ারি বলেন, রাতে শাসক দলের কর্মীরা আমাদের কার্যালয়ে রীতিমতো তাণ্ডব চালায়। পার্টি অফিসের ভিতরে থাকা দলীয় ফ্লেক্স, ফেস্টুন, আসবাবপত্র সমস্ত কিছু তছনছ করা হয়েছে। কলকাতার সমাবেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৃণমূল কোনও লোক খুঁজে পাচ্ছিল না। তাই ওরা এভাবে অশান্তি করে অযথা বিজেপির উপর অভিযোগ আনছে। আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী জখম হয়েছে। স্থানীয় মানুষ সত্যি ঘটনা জানেন। তাই পুলিসের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরও এদিন সকালে পুলিসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মনে করছে, লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় অব্যাহত রয়েছে শাসক-বিরোধী সংঘর্ষ। শুক্রবার রাতেও গোঘাটে রাজ্য সড়কের উপর তৈরি করা তৃণমূলের তোরণে লাগানো ফ্লেক্স ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। এরপর জেলার বেশ কিছু জায়গায় ২১ জুলাই উপলক্ষে শাসকদলের কর্মীদের কলকাতাগামী বাসের ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মূলত নব্য বিজেপিতে আসা একাটা গোষ্ঠীই এমন হিংসার ঘটনা ঘটাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে আরামবাগের এসডিপিও নির্মল কুমার দাস বলেন, শনিবার রাতে দুই রাজনৈতিক দলের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর আসে। খবর পেয়েই এলাকায় পুলিস যায়। রবিবার সকালে শাসকদলের নেতাকর্মীরা একটি বাসে চেপে কলকাতা যাওয়ার জন্য রওনা দেয়। সেই বাস আটকে দেওয়ার চেষ্টা হয়। পরে পুলিসের উপস্থিতিতে সেই বাসটি যাত্রা শুরু করে। পাশাপাশি বিরোধী রাজনৈতিক দলের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সকালের পর থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।