আমরা মেয়েরা

প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে বদলাচ্ছে প্রতিরোধও

২০০৭ সাল থেকে কাজ শুরু করেছিল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ডেস্টিনি। নারীপাচারের বিরুদ্ধে বহুদিন কাজ করছে তারা। কথা বললেন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য স্মরিতা সেনগুপ্ত।  

 সময়ের সঙ্গে পাচার প্রক্রিয়া এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ কীভাবে বদলেছে?
পাচারের বিরুদ্ধে বহুদিন ধরে লড়াই করে আমাদের মতো অনেকেরই অভিজ্ঞতা বাড়ছে। সেটা একটা বড় সুবিধা। পাশাপাশি আইন পাল্টাচ্ছে। এই কাজের অনেকটাই সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে মিলিতভাবে করতে হয়। সেইদিক থেকে অনেক নীতি ও আইন পরিবর্তিত হয়েছে, কাজ সহজ হয়েছে। তবে তার জন্য অপরাধের মাত্রা কমে গিয়েছে, এমনটা কিন্তু বলা যাচ্ছে না। পাচার প্রক্রিয়ায় জড়িত যারা, তারাও সময়ের সঙ্গে নতুন নতুন পথ বের করছে চক্র চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। 

 ডিজিটাল উন্নতিতে কি এটা আরও জটিল হয়েছে?
একেবারেই তাই। অপরাধের নকশা পাল্টে গিয়েছে মূলত প্রযুক্তির হাত ধরেই। আমাদের যেমন যোগাযোগে সুবিধা হয়েছে, দ্রুত অপরাধীকে খুঁজে বের করা যাচ্ছে তেমনই অপরাধীরা অনেক বেশি সুযোগ ও পরিসর পাচ্ছে কাজটা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে। ফেসবুক মেসেঞ্জারে সব কথা হয়ে যাচ্ছে। এই চক্রের আরও অনেক দিক থেকে সুবিধে হয়েছে কারণ অনলাইনে টাকাপয়সার লেনদেনে সুবিধা পাচ্ছে ওরা। এতে ব্যবসা লাভজনক হয়েছে। এতে লোক নিয়োগও সহজ হয়ে গিয়েছে। 

 গ্রামে বা প্রত্যন্ত এলাকায় সচেতনতা বাড়ানোর নানা প্রকল্প তো থাকে?
তা তো থাকেই। কিন্তু এক্ষেত্রে আবেগ নিয়ে ছেলেখেলা করার একটা দিক রয়েছে। মেয়েদের মানসিকভাবে বিশ্বাস করানো হয় পাচারকারী তার বয়ফ্রেন্ড, তাকে বিয়ে করবে, সংসার পাতবে। মেয়েটি কি আর সবসময় সন্দেহ করতে পারে? সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু প্রত্যেকটি মেয়ের গল্প আলাদা। প্রতিটি জীবনের জন্য আলাদা করে যত্ন দরকার। সমাজ থেকেও একটা চাপ তৈরি করতে হবে। শুধু গ্রাম নয়, শহর থেকেও পাচার হয়। 

 উদ্ধার হওয়া মেয়েদের কীভাবে সুরক্ষা দেওয়া হয়?
যখন আমাদের সংস্থা শুরু হয়েছিল, তখন দেখা গিয়েছিল যেসব নাবালিকা মেয়েকে উদ্ধার করা হচ্ছে, তাদের আর পরিবারের কাছে ফেরানো যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে পরিবার তাকে নিতে রাজিও হয় না। বাড়িতে থাকা তখন তার পক্ষে নিরাপদ নয়। তাই হোম-এ রাখা হয়। সেখানে মেয়েরা অভিযুক্তকে শনাক্তও করে। তাদের নানা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পাশে দাঁড়ায়। মেয়েটির ১৮ বছর বয়স পেরিয়ে গেলে তার কী হবে, সে বিষয়টা স্পষ্ট ছিল না। সেই ভেবে আমরা পুনর্বাসনের জন্য একটা সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ এবং অলাভজনক মডেল তৈরি করি। প্রথমে আমরা কর্মসংস্থানে দিকে মন দিয়েছিলাম। ১৮-র পরে ওই মেয়েদের যাতে একটা দিশা থাকে, তারা যাতে হারিয়ে না যায় তার ব্যবস্থা করেছিলাম। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিতে হয়। প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা কাজের সুযোগ পায়। থাকার জায়গা, চাইল্ডকেয়ার, আর্থিক দিক — সবটাই দেখা হয়। মেয়েরা পুনর্ব্যবহারযোগ্য শাড়ি নিয়ে ব্যাগ তৈরি করে যা পরিবেশবান্ধব। সেই ব্যাগ দশটি দেশে আমরা রপ্তানি করি। এগুলো বানিয়ে তারা উপকৃত হচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় নাবালিকা, মাত্র ১৬ বছরে মা হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে মা ও শিশু দু’জনেরই পাশে থাকি আমরা। খিদিরপুর মুন্সিগঞ্জ এলাকায় আমাদের কাজ হয়। সরকারি হোমেও কাজ করি। 

 এই মেয়েরা পরে অন্যদের প্রশিক্ষণ দিতে পারে?
এই মেয়েদের তৈরি করতে প্রচুর ধৈর্য রাখতে হয়। কারণ এত নির্যাতন পেরিয়ে এসে ওদের স্বাভাবিক হতে সময় লাগে। পরবর্তীকালে ওরা কাজ শিখে রোজগার তো করেই। ওদের মতো আরও যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের জন্য কাজ করতে চায়। স্থানীয়ভাবে মেয়েদের নেতৃত্ব দেওয়ার কাজ শেখানো হয়।

 আগে পরিবার মুখ ফিরিয়ে থাকত। এখন কি সময় বদলেছে?
জটিল বিষয়। কিছু ক্ষেত্রে হয়তো দেখা যাচ্ছে পরিবার পাচার থেকে উদ্ধার হওয়া মেয়েকে ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী। সকলে নয়। সমাজ তো বদলায়নি। গ্রামে প্রতিবেশীদের মুখ বন্ধ করা সহজ নয়। বাড়ি হয়তো মেনে নিল। কিন্তু চারপাশে আপত্তি উঠল। তখন বাবা-মা নিরুপায়। ১৬ বছর বয়সে কারও মেয়ে বাচ্চা কোলে বাড়ি ফিরবে, সেটা কলঙ্কের মতো। তবে এতদিনে মেয়েদের লড়াই করার জায়গা তৈরি হয়েছে, এটা বলা যায়। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সংখ্যাও বেড়েছে। অনেক বাবা-মা এমনও চান মেয়েটি গ্রাম থেকে বেরিয়ে যাক, অন্য কোথাও উন্নতি করুক, ভালো জীবন পাক। সেই মেয়ে সম্মান অর্জন করে আবার গ্রামে ফিরে আসে। 
অন্বেষা দত্ত
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৩২ টাকা১১১.৮৭ টাকা
ইউরো৯১.২৫ টাকা৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা