আমরা মেয়েরা

ফ্যাশন ডিজাইনিং: বাঁধা গতের বাইরে চাকরির সুযোগ

চলতি বিষয় না পড়লে চাকরি বা আয়ের সুযোগ কেমন? তা নিয়েই চলছে এই বিভাগ। মতামত জানালেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন-এর শিক্ষক শ্রমণা মল্লিক। 

মধ্যবিত্ত পরিবারের চাকরিজীবী পিতা চেয়েছিলেন পুত্র ডাক্তার হবে। পুত্রর আবার বরাবরই সৃষ্টিশীল কাজের দিকে ঝোঁক। তাই ভিন্ন পথে হেঁটে হয়ে গেলেন ফ্যাশন ডিজাইনার। গতানুগতিক পোশাকে নতুন কিছু করাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। ২০০২ সালে ইন্ডিয়া ফ্যাশন উইকে অংশগ্রহণ করেন। রোজগেরে মেয়েদের রোজকার পোশাকের একটি কালেকশন শোকেস করেছিলেন সেখানে। কাজের জাত চেনাতে সেটাই ছিল যথেষ্ট। তিনি আর কেউ নন, ফ্যাশন ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়। 
ফ্যাশন ডিজাইনিং। প্রচুর সুযোগ রয়েছে এই ক্ষেত্রটিতে। তবে তার জন্য নিজস্ব কিছু প্রবৃত্তি থাকা জরুরি। ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে কারা পড়াশোনা করতে পারেন? প্রথাগত বিদ্যা কতটা প্রয়োজন? পড়াশোনার পর রোজগারের সুযোগই বা কেমন? এই বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন-এর ফ্যাশন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শ্রমণা মল্লিক। 

প্রথাগত পড়াশোনা
মাধ্যমিক বা সমতুল্য পরীক্ষা পাশ করার পরেই ফ্যাশন ডিজাইনিং বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে দেওয়া যায়, জানালেন শ্রমণা। সেক্ষেত্রে বেসিক ফ্যাশন ডিজাইনিং কোর্সে ভর্তি হওয়া সম্ভব। সেটা ডিপ্লোমা কোর্স। এছাড়া বারো ক্লাস পাশ করার পর দু’ধরনের কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়, অ্যাডভান্সড ডিপ্লোমা এবং বি-ডেস (ব্যাচেলর অব ফ্যাশন ডিজাইনিং)। প্রথমটি দু’বছরের কোর্স আর দ্বিতীয়টি চার বছরের। অনেকে গ্র্যাজুয়েশন পর্যন্ত জেনারেল লাইনে (প্রথাগত বিদ্যা) পড়াশোনা করেও এই কোর্স করতে পারেন। পড়াশোনা এবং ডিগ্রি অনুযায়ী কোর্সের বিভিন্ন ভাগ রয়েছে। প্লাস টু-তে সায়েন্স থাকলে ফ্যাশন ডিজাইনিং অথবা টেক্সটাইল ডিজাইনিং নিয়ে বিএসসি করা সম্ভব।   

প্রবৃত্তির কথা
 প্রথমত সৃষ্টিশীল মন থাকা জরুরি। সৃজনশীলতা এই কাজের ক্ষেত্রে খুবই দরকার। মনে রাখতে হবে এটা হাতেকলমে করার কাজ, ফলে শুধুই বই পড়ে রেজাল্ট ভালো করা এক্ষেত্রে সম্ভব নয়।  
 দ্বিতীয়ত পোশাক ডিজাইনিংয়ের দিকে সহজাত একটা আকর্ষণ থাকা চাই। ফ্যাশনে কেমন ট্রেন্ড চলছে, কোন পোশাকে কেমন কাট মানাবে, রোজকার পোশাকের সঙ্গে অনুষ্ঠানের পোশাক কোথায় এবং কীভাবে আলাদা— এগুলো খুঁটিয়ে জানতে এবং বুঝতে হবে।
 তৃতীয়ত রঙের ব্যাপারে একটা নিখুঁত ধারণা থাকা প্রয়োজন। কেমন পোশাকে কী রং ব্যবহার করতে হবে, কোন রঙের সঙ্গে কোন রং মেশালে পোশাক উজ্জ্বল হবে এগুলো নিজের মনে মনেই জানা দরকার।    

পড়াশোনার কথা
একেবারে গোড়া থেকেই এই কোর্স শুরু হয়। প্রথম দিকে ফ্যাশন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয় ছাত্রদের। এই সময়ই ছাত্রদের নিজেদের ভাবনাগুলোর দিকে জোর দিতে বলা হয়। নিজের মনে নকশা আঁকা, একটা পোশাককে বিভিন্ন রূপে কল্পনা করতে পারা—এগুলো দরকার। প্রাথমিক পর্যায়ের পর রয়েছে ইলাস্ট্রেশন। অর্থাৎ পোশাকে রূপদান। এর জন্য চাই কল্পনাশক্তি। প্রথমে পোশাকের নকশা কাগজে আঁকা হয়। তারপর তা কাপড়ে তৈরি করা হয়। তবে এই যে কাগজে আঁকা, তার অনেকগুলো পর্যায় রয়েছে। সেটাকে বলে মুড বোর্ড তৈরি। একটা পোশাককে বিভিন্নভাবে দেখা হয়। অনুষ্ঠানে পরার পোশাক, রোজকার ব্যবহারের পোশাক ইত্যাদি থেকে আবার আরও ছোট ছোট ভাগ করা হয়। যিনি পরবেন তাঁর গায়ের রং, উচ্চতা, সব দিকেই খেয়াল রাখতে হয়। এরপর আসে প্যাটার্ন মেকিং। সেক্ষেত্রে নানারকম স্টাইল নিয়ে কাজ করা হয়। কোন রঙের সঙ্গে কেমন প্যাটার্ন মানানসই অথবা কেমন ফ্যাব্রিকে ঠিক কোন কাট ভালো লাগবে এগুলোই এই পর্যায়ে বিচার্য। 

ধারণা কেমন হবে
সৃজনশীলতা থাকা যেমন জরুরি তেমনই কাট, ডিজাইন সম্বন্ধে ধারণা থাকাও দরকার। একটা পোশাক যখন বানানো হচ্ছে তখন বিভিন্ন কাপড় কেটে জুড়ে তাতে লাগানো হয়। সেই ক্ষেত্রে মনে মনে একটা নিখুঁত হিসেব করতে হয়। কোন কাপড় কতটা কাটা হবে, কোন জায়গায় কেমন সেলাই পড়বে এগুলো যদি নিজের মনে হিসেব না করা যায় তাহলে কখনওই ভালো পোশাক তৈরি করা সম্ভব নয়। এই যে হিসেব করার ক্ষমতা এটা শুধুই সায়েন্স-এর ছাত্রদের থাকে, তা কিন্তু নয়। একটা পোশাক তৈরি হলে তা কেমন দেখতে লাগবে তা মানস চোখে দেখতে পেতে হবে। অনেকে আবার আরও একটু এগিয়ে পোশাকটা বিভিন্ন লোক পরলে কেমন লাগবে সেটাও কল্পনার করতে পারে। তাঁদের জন্য এই কোর্স আদর্শ।

চাকরির সুযোগ
শ্রমণা বললেন, ‘কোনও ডিজাইনারের জুনিয়র হিসেবে কাজ শুরু করা সম্ভব। কোনও ব্র্যান্ডের অধীনে ফ্যাশন স্টাইলিস্ট হিসেবে কাজ করতে পারে। নিজস্ব স্টুডিও শুরু করা যায়। এছাড়াও স্টোর ভিস্যুয়ালাইজারের কাজও করা যায়। অর্থাৎ দোকানে পোশাক সাজানোর ধরন নির্বাচন করা। কোনও দোকানে একরকম পোশাক সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়, কোথাও পোশাক সাজানোর একটা নির্দিষ্ট কালার স্কিম বাছা হয়। অর্থাৎ হালকা, গাঢ় আবার হালকা—এই রকম। অনেক জায়গায় আবার রোজকার পোশাকের পাশে জমকালো পোশাক সাজানো হয়। কেউ বা অফিসওয়্যার, ক্যাজুয়াল, ফর্মাল, এথনিক, ওয়েস্টার্ন, ফিউশন ইত্যাদি ভাগে পোশাক সাজান। এই যে সাজানোর নানা ধরন, এগুলো একজন নির্ধারণ করে দেন। কেমনভাবে সাজালে ক্রেতার চোখে পড়বে সেটা নির্ভর করে দোকানের লেআউট, স্পেস ইত্যাদির উপর। এই কাজটাও অনেকে করে ফ্যাশন ডিজাইনিং-এর কোর্স করার পর। এছাড়া আছে প্রোডাকশন ম্যানেজারের কাজ। কোন পোশাক কেমনভাবে তৈরি করা হবে এবং কত পরিমাণে তৈরি করা হবে এগুলো ঠিক করার জন্যও নির্দিষ্ট পড়াশোনা ও জ্ঞান লাগে। ফ্যাশন ডিজাইনিং কোর্স করার পর সেই জ্ঞান তৈরি হয়। যদি নিজস্ব পথে কাজ করার ইচ্ছে থাকে তাহলে বিভিন্ন ফ্যাশন শো-তে যাওয়া দরকার। সেগুলো দেখে আধুনিক ডিজাইন সম্পর্কে ধারণা করা প্রয়োজন। এবং নিজের তৈরি পোশাক নিয়ে ফ্যাশন শো করতে হবে। এই ধরনের শো-তে যত বেশি অংশগ্রহণ করবেন রোজগারের সুযোগ ততই বাড়তে থাকবে।    
কমলিনী চক্রবর্তী
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সঞ্চীয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৫০ টাকা১১২.০৬ টাকা
ইউরো৯১.০৪ টাকা৯৪.২২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     October,   2024
দিন পঞ্জিকা