বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
আমরা মেয়েরা

অনলাইনে টাকা চুরি, কী করবেন?

প্রতারিত হওয়ার পরে আপনি কীভাবে টাকা ফেরত পেতে পারেন? পরামর্শে বিশিষ্ট আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। 

সাইবার ক্রাইম, হ্যাকিং, ক্রেডিট কার্ড-ডেবিট কার্ড ক্লোনিং ইত্যাদি শব্দ আর নতুন নয়। বাড়ি বয়ে এসে চুরি-ডাকাতি, রাস্তাঘাটে পকেটমারির উপদ্রব সামান্য কমে এখন নতুন করে ছেয়ে গিয়েছে সাইবার অপরাধ। অপরাধীরা আড়ালে বসেই সাধারণ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট লুঠপাট করে আড়ালেই অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে আড়ালে বসেই সাধারণ মানুষকে সর্বস্বান্ত করে ছাড়ছে একদল দুষ্কৃতী!
এদিকে ডিজিটাল না হয়েও উপায় নেই! আজকাল প্রায় সর্বক্ষেত্রে কাগজের ব্যবহার কমিয়ে, ‘ডিজিটাল মুভমেন্ট’ বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। দেশের সরকার জোর দিচ্ছে ডিজিটাল লেনদেনের উপরেও। দোকানবাজার, অ্যাপ ক্যাব বুক, রেস্তরাঁয় অর্ডার, শেয়ার মার্কেট, ব্যাঙ্কের কাজ, ট্রাভেলের লেনদেন, সবই করা হচ্ছে অনলাইনে। 
দেশের নিয়ম অনুসারে, আমাদের আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ব্যাঙ্কের যাবতীয় তথ্য মোবাইলের নম্বরের সঙ্গে লিঙ্ক করানো থাকে। আর এরই ফায়দা তুলছে অপরাধীরা। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আধার-প্যান নম্বর ধরে, গোপন পাসওয়ার্ড হাতিয়ে অপরাধীরা ঢুকে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের গভীরে। ব্যাঙ্ক কার্ড জালিয়াতি, হোটেল বুকিং, এআই-এর মাধ্যমে অন্যের গলা নকল করে টাকা চাওয়া, ভিডিও কল-এর মাধ্যমে ব্ল্যাকমেল, অনলাইন প্রতারণা, ইলেকট্রিক বিল জমা না পড়ার ভুয়ো তথ্য দেওয়া এসব তো ছিলই। এখন যোগ হয়েছে পার্সেল এসে আটকে আছে বা আপনার নামে আসা কোনও জরুরি বস্তু শুল্ক দপ্তর আটকে রেখেছে গোছের ব্ল্যাকমেলিং ও প্রতারণা। অনলাইন কেনাকাটা করেননি অথচ পার্সেল এসে হাজির হচ্ছে বাড়িতে। তাও আবার ক্যাশ অন ডেলিভারি শর্তে। একটু ঘাবড়ে গিয়ে ফেরত দিতে চাইলেও ‘ভুয়ো ডেলিভারি বয়’ বাধ্য করছে তা গ্রহণ করতে। এভাবেই নানা ছাঁদে অনলাইন প্রতারণার জাল ছড়িয়ে রয়েছে চারপাশে। 
সুতরাং সাবধান হওয়াই মূলত প্রয়োজন। কিছু নিয়ম মেনে চলুন। যেমন: ফোনে আসা কোনও ওটিপি ও ব্যাঙ্কের সিভিভি নম্বর কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। কোনও অচেনা নম্বরের ভিডিও কল ধরবেন না। পেমেন্ট স্ক্যানার যতটা পারা যায় কম ব্যবহার করুন (বদলে অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল নম্বরে লেনদেন করুন)। অচেনা কারও পাঠানো কোনও লিঙ্কে ক্লিক করবেন না।— এগুলিই স্বস্তিতে থাকার প্রথম পাঠ। 

ঝুঁকি কমাতে কী করবেন? 
 মিনিটে মিনিটে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা কাটছে। এমন হলে ইন্টারনেট বা ওয়াই-ফাই কানেকশনটা অফ করে দিন। মোবাইল ফোন সুইচ অফ করে লাভ নেই। ভিতরে ভিতরে টাকা কাটা চলতেই থাকবে। তাই, সবার আগে ইন্টারনেট ও ওয়াই-ফাই ডিসকানেক্ট করে দিন। এমনিতেও প্রয়োজন না থাকলে, অকারণে ইন্টারনেট বা ওয়াই-ফাই চালিয়ে রাখবেন না। তাতে টাকা চুরির ঝুঁকি কমে।

টাকা কাটার পর কী করবেন?
 কখনও ফোনের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা কাটলে প্রথমেই সাইবার ক্রাইম পোর্টাল (এনসিআরপি)-এ অভিযোগ নথিভুক্ত করুন। অনলাইন ফর্ম ফিল আপের মাধ্যমে এটা করতে হয়। অনলাইনে অত সড়গড় না হলে সাইবার ক্রাইমের টোল ফ্রি নম্বর ১৯৩০-তে ফোন করুন। পোর্টালে বা টোল ফ্রি-তে অভিযোগ জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই সাইবার ক্রাইম দপ্তরের পক্ষ থেকে টাকাটি আটকানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। এরপর ব্যাঙ্কের টোল ফ্রি নম্বরে অভিযোগ জানান। তারপর ব্যাঙ্কে গিয়ে বিস্তারিত জানালে একটি ফর্ম দেওয়া হবে। সেই ফর্ম ফিল আপ করে অনলাইনেই জমা দিতে হবে। এরপর ব্যবহৃত ডেবিট কার্ড বাতিল করার জন্য ব্যাঙ্কে আবেদন জানান। অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা পড়ে থাকলে সেটা দ্রুত অন্য কোনও অ্যাকাউন্টে সরিয়ে অ্যাকাউন্টটি লক করে দিন। 
 এরপর স্থানীয় থানায় আপনাকে একটি এফআইআর করতে হবে। তারা একটি ফর্ম দেবেন। সেটি ফিল আপ করে জমা দিন। তাঁরা এই অভিযোগ আপনার এলাকার সাইবার ক্রাইম দপ্তরে পাঠিয়ে দেবে। চাইলে সাইবার দপ্তরে সরাসরিও অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। আজকাল, প্রায় সব কমিশনারেট এলাকাতেই ‘সাইবার ক্রাইম সেল’ থাকে। কলকাতার বাসিন্দা হলে, লালবাজারে সাইবার থানায় অভিযোগ জানাতে পারেন। অন্য জেলার বাসিন্দা হলে, ভবানী ভবনের নিজস্ব কমিশনারেটের অধীনে থাকা সাইবার ক্রাইম সেল বা ভবানীভবন-এর ‘সাইবার ক্রাইম সেল’-এ অভিযোগ জানিয়ে রাখুন।
 যেই মুহূর্তে এই পোর্টাল ফিল আপ করলেন, সঙ্গে সঙ্গেই আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে অবৈধভাবে নিয়ে নেওয়া টাকা আটকানোর চেষ্টা করে সাইবার দপ্তর। কিন্তু টাকা আটকানো যাবে কি না, তা নির্ভর করে অপরাধীদের চুরি-পরবর্তী কার্যকলাপের উপর। 
 সাইবার দপ্তরে অভিযোগ জানানোর পর আপনার দায়ের করা কেসটির তদন্তভার বর্তাবে আপনার স্থানীয় থানার কোনও অফিসারের উপর। অভিযোগ জানানোর দিন কয়েক পর তাঁর নাম ও ফোন নম্বর এসএমএস-এর মাধ্যমে আপনার কাছে চলে যাবে। 
 টাকা আটকানো সম্ভব হলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সাময়িকভাবে চুরি যাওয়া টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে ফিরে আসবে। কিন্তু মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেই টাকা আটকে থাকায় তা ব্যবহার করা যাবে না। 
 এবার প্রয়োজন উকিলের। এই টাকা ফেরতের জন্য আদালতে আপিল জানিয়ে একটি কেস ফাইল করা হবে। ব্যাঙ্ক ও পুলিস যৌথভাবে খতিয়ে দেখবে কীভাবে টাকা চুরি হয়েছিল। শুনানির দিনগুলিতে হাজির থাকতে হবে আদালতে। যদি তদন্তে দেখা যায়, গ্রাহক অপরাধীদের ধুরন্ধর আক্রমণের শিকার এবং প্রতারণা করে তাঁর টাকা চুরি হয়েছে, তবে সেই টাকা ব্যাঙ্ককে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেবে আদালত। 
6Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পেশাগত উচ্চশিক্ষায় দিনটি বিশেষ শুভ। ধৈর্য ধরে মনোযোগ দিয়ে কাজ করুন সাফল্য পাবেন। অর্থ ও...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৫.৪৮ টাকা৮৭.২২ টাকা
পাউন্ড১০৫.০৯ টাকা১০৮.৮১ টাকা
ইউরো৮৮.৪৭ টাকা৯১.৮৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
25th     January,   2025
দিন পঞ্জিকা