শরীর ও স্বাস্থ্য

চল্লিশ পেরলেই মহিলাদের হাঁটুব্যথা
সমাধান কী

চল্লিশের পরেই হাঁটু জানান দেয়, সে ভালো নেই। কী করবেন মেয়েরা? পরামর্শে মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও অর্থোপেডিক বিভাগের ডিরেক্টর ডাঃ বিকাশ কাপুর।

চল্লিশ পেরলেই চালসে হওয়ার কথা বাংলা আধুনিক গানেও ঠাঁই করে নিয়েছে! তবে শুধু চালসেই নয়, বয়স চল্লিশ পেরলে আরও অনেক অসুখই গুড়ি মেরে ঢুকে পড়ে শরীরে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে অবধারিতভাবে কমে আসে হাড়ের জোর। শুরু হয় অনন্ত হাঁটু ব্যথা। বিশেষ করে মা হওয়ার পর মেয়েদের জীবনে এক ব্যথার উপাখ্যান শুরু হয়। যার সোজাসরল কোনও ওষুধ নেই। যোগব্যায়াম ও জীবনশৈলীর পরিবর্তন ছাড়া আর কোনও সরল সমাধানও নেই। বয়স চার দশক পেরলে যেসব কারণে জন্য এই হাঁটুর ব্যথা বাড়ে তাদের চিনে নেওয়া খুব জরুরি।

১. ওবেসিটি: 
অস্ত্রোপচারের ধকল সামলাতে না সামলাতেই সদ্যোজাত শিশুর মা বুঝতে পারেন ওজন বেড়েছে। অনেক মহিলাই এরপর সেই ওজন আর কমাতে পারেন না। শরীরের পুরো ভর গিয়ে পড়ে হাঁটুর উপর। অবশ্যম্ভাবী অসুখ হিসেবে ধেয়ে আসে হাঁটুর ব্যথা। প্রতি ১০ জনে ৭ জন মহিলার এই হাঁটু ব্যথা দেখা যায়। ইদানীং মেয়েরা বেশ বেশি বয়সে বিয়ে করছেন, বেশি বয়সে সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। বয়স বেড়ে যাওয়ায় ওজন কমানো আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। 

২. অস্টিওপেনিয়া: 
এই অসুখে হাড়ের ঘনত্ব কমতে শুরু করে। হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। অস্টিওপোরোসিসের দিকে ঠেলে দেয় এই অস্টিওপেনিয়া। একজন মেয়ের ৩০ বছর বয়সের পর থেকেই হাড়ের এই পরিবর্তন শুরু হয়। ওবেসিটি ও অস্টিওপেনিয়া এই দুইয়ের যূথবদ্ধ আক্রমণে বয়স চল্লিশ পেরলেই হাঁটুতে ব্যথা মেয়েদের নিত্যসঙ্গী হয়ে যায়। 

৩. না বুঝে এক্সারসাইজ: 
বহু মহিলা এই ওজন বেড়ে যাওয়া ঠেকাতে মা হওয়ার পর থেকে কিছু উচ্চ মাত্রার ব্যায়াম শুরু করেন। যেমন— দৌড়াদৌড়ি, জিমে গিয়ে কঠিন কঠিন এক্সারসাইজ, সহজে ওজন ঝরাতে জুম্বা ইত্যাদি। মা হওয়ার পর শরীরের ভিতরে যেসব পরিবর্তন শুরু হয়, তার মধ্যে ওবেসিটি যেহেতু অন্যতম, তাই এই অবস্থায় হঠাৎই উচ্চ মাত্রার কিছু এক্সারসাইজ করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হয়। তখন পেশিও থাকে দুর্বল। তাই চাপ পড়ে শরীরের নরম হওয়া হাড়গোড়ে। হাঁটুকে সইতে হয় গোটা শরীরের ওজন, তার উপর দৌড়ঝাঁপ ও এক্সারসাইজের ধকল। ফলে ব্যথাও বাড়ে।

৪. আইটিবি (ইলিওটিবিয়াল ব্যান্ড) সিনড্রোম: 
ফাইব্রাস টিস্যুর একটি পুরু ব্যান্ড হাঁটুর অস্থিসন্ধির বাইরের অংশকে সাপোর্ট দেয়। উরু ও হাঁটুর পেশিগুলিকে নমনীয় রাখে। কিন্তু এই ব্যান্ড খুব কঠিন হয়ে গেলে তখন মেয়েদের সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে হাঁটুতে চাপ পড়ে। কন্ডোম্যালেশিয়া প্যাটেলার শিকার হন মহিলারা। তখন সোজা রাস্তায় হাঁটলে কষ্ট হয় না, কিন্তু সিঁড়ি ভাঙতে কষ্ট হয়। 

তাহলে উপায়?
এই সমস্যা প্রতিরোধের উপায় রয়েছে আপনার হাতেই। ব্যথা কমানোর ওষুধ খেয়ে এসব সমস্যা এড়ানো যায় না। বরং মেনে চলুন কিছু উপায়।
• প্রথমেই প্রোটিন ঠাসা একটি ডায়েট মেনে চলুন। শরীরে প্রোটিন বেশি গেলে খিদে কম পাবে। আজেবাজে ফাস্ট ফুড, কেনা খাবার এড়িয়ে চলতে পারবেন। ডায়েট করতে শুরু করলে ওজনও কিছুটা কমবে। ফলে হাঁটুর উপর থেকে কিছুটা চাপ এমনিই সরিয়ে নেওয়া যাবে।
• অবশ্যই এক্সারসাইজ করবেন, তবে প্রথমেই কঠিন ও ভারী এক্সারসাইজ নয়। বরং সুস্থ থাকতে বেছে নিন সাইক্লিং, হাঁটাহাঁটি, সাঁতারের মতো এক্সারসাইজ। স্ট্রেচিং করুন রোজ। কোন কোন ব্যায়াম চলবে তার পরামর্শ নিন চিকিৎসক ও ফিজিওথেরাপিস্টের কাছ থেকে। সেই অনুসারে ব্যায়াম করুন। 
এতে হাড়ের উপর বাড়তি চাপ পড়ে না। তবে ওজন বেশি থাকলে ব্রিস্ক ওয়াকিং করবেন না। সাধারণভাবে দিনে অন্তত ৪০ মিনিট-১ ঘণ্টা একটানা হাঁটাহাঁটি করুন। 
• নিত্য ওষুধের তালিকায় ক্যালশিয়াম ট্যাবলেট খেতে হবে। একটা সময় ধারণা ছিল বেশি ক্যালশিয়াম ট্যাবলেট বুঝি শরীরে পাথর তৈরি করে। এই মিথ ভুলে রুটিনে যোগ করুন ক্যালশিয়াম রয়েছে এমন খাবার ও ট্যাবলেট। অন্তত ৬ মাস একটানা ক্যালশিয়াম ট্যাবলেট খান। ভিটামিন ডি সপ্তাহে একদিন করে তিন-চার মাস একটানা খান। গায়ে রোদ লাগান। এরপর কী নিয়মে ওষুধগুলি আবার শুরু করবেন, তার পরামর্শ দেবেন চিকিৎসক। 
লিখেছেন মনীষা মুখোপাধ্যায়
 
14Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা