শরীর ও স্বাস্থ্য

ডক্টরস ডে: ভালো ব্যবহারেই বাজিমাত

কেবল ভালো ব্যবহার। তা দিয়েই নাকি হারিয়ে দেওয়া যায় রোগকে। কীভাবে? জবাব দিলেন প্রবীণ ফিজিশিয়ান ডাঃ সুকুমার মুখোপাধ্যায়।

ঘটনা এক
কদিন ধরেই শরীরটা ভালো লাগছে না সুমনের। ‘কী হয়েছে?’ বাড়ির লোকের ঘনঘন প্রশ্নও বিরক্তির উদ্রেক করছে। কারণ কী হয়েছে, স্পষ্ট উত্তর তার কাছেও নেই। ‘পঞ্চায়েত’ সিজন থ্রি-এর জগমোহনের আম্মার মতো তাঁরও যেন ‘মন থেকে কিছুই ভালো লাগছে না।’ আমতা আমতা করে চিকিৎসকের কাছে গেল সুমন। অনেকক্ষণ কথা বলে চিকিৎসক বুঝলেন, কিছুই হয়নি। কেবল মনের মধ্যে একটা শারীরিক অসুবিধা হয়েছে, এমন খেয়াল চেপে রয়েছে। অফিসে অতিরিক্ত কাজের চাপ, ব্যক্তিগত জীবনে সম্পর্কের নানা সমীকরণ এর নেপথ্য কারিগর। চিকিৎসক পরামর্শ দিলেন, ‘ঘুরে আসুন। দেখবেন মন, শরীর দুই’ই ভালো হয়ে যাবে।’
ঘটনা দুই
অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে সুস্মিতার স্বামীর। আইসিইউতে শুয়ে বেঁচে থাকার লড়াই চালাচ্ছে। দিন-রাত এক করে হাসপাতালে বসে রয়েছে সুস্মিতা। কেঁদে চলেছে অকাতরে। চিকিৎসককে দেখতে পেয়েই ছুটে গেলেন। অমন ফুটফুটে একটা মেয়ে কেঁদেকেটে কী দশা করেছে নিজের! দেখেই ধমক দিলেন! ‘কী হাল করেছ নিজের? ওরে মা... স্বামীর সঙ্গে এই লড়াইটা তো তোরও। তুই নিজের এমন দশা করলে চলবে কী করে? যা খেয়ে নে।’ মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেলেন ডাক্তার। মনে বল পেল সুস্মিতা। পেল লড়াই করার শক্তি। 
প্রাণ খুলে কথা বললে রোগ ধরতেও সুবিধা—আদর্শ চিকিৎসকের সংজ্ঞা খোঁজা বোকামি। তবে রোগীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রে বাড়িয়ে দিতে পারে তাঁর ও পরিবারের সদস্যদের মনোবল। পেশাদার সম্পর্কের পাশাপাশি ডাক্তার ও রোগীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠা ভীষণ দরকার। আগেকার দিনে তো এত পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল না। সেই সময় কেবল রোগীদের সঙ্গে কথা বলেই অনেক রোগ নির্ণয় করতেন চিকিৎসকরা। তা সবসময় ঠিক হতো, এমনটা জোর দিয়ে বলা চলে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যেত রোগীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলে চিকিৎসক তাঁর অসুবিধাগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খ উপলব্ধি করতে পারছেন। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে রোগ নির্ণয়ের সুবিধা হয়েছে। অনেক রোগ দ্রুত বোঝা সম্ভব। তবে এর মাধ্যমে রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকের সরাসরি কথা বলা অনেকাংশে কমে গিয়েছে। এতে আখেড়ে চিড় ধরছে রোগী ও চিকিৎসকের খাঁটি সম্পর্কে। 
ভালো ব্যবহারেই অর্ধেক সুস্থ—রোগীরা অনেক আশা নিয়ে আসেন চিকিৎসকের কাছে। ভরসা করে মন খুলে কথা বলতে শুরু করেন। তখন যদি রোগীকে থামিয়ে বলা হয়, তাড়াতাড়ি শেষ করুন। তাহলে কখনওই রোগী খোলামেলাভাবে নিজের সমস্যা সম্পর্কে বলতে পারবেন না। ভালো ব্যবহার, বন্ধুর মতো আচরণের পাশাপাশি প্রয়োজন রোগীকে সময় দেওয়া। এতে মানসিকভাবে তিনি আশ্বস্ত থাকেন। ভাবেন ভরসাযোগ্য কেউ সঙ্গে রয়েছেন।  
প্রযুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসা জগতের প্রভূত উন্নতি হয়েছে। এ কথা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। তবে তার খরচও বেড়েছে। সকলের পক্ষে তার ব্যয়ভার নেওয়া সম্ভব হয় না। এখানেও যদি চিকিৎসক বন্ধুর মতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন। তাতেও অনেক রোগীর উপকার হয়। একটা কথা মনে রাখা প্রয়োজন, চিকিৎসা ব্যবস্থা যতই উন্নত হোক, চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর সুসম্পর্ক অবীনশ্বর। কিংবদন্তী চিকিৎসক ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় বলতেন, ‘আমি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র বুঝি না। শুধু বুঝি সাধারণ মানুষকে কত বেশি সুবিধা দেওয়া যায়।’ 
লিখেছেন শান্তনু দত্ত
1d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পেশাগত উচ্চবিদ্যার শিক্ষায় শুভ। সাহিত্যচর্চায় মানসিক আনন্দ। কর্মোন্নতি ও আয় বৃদ্ধির যোগ। ...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৬৯ টাকা৮৪.৪৩ টাকা
পাউন্ড১০৩.৮৪ টাকা১০৭.৩০ টাকা
ইউরো৮৮.১২ টাকা৯১.২৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা