শরীর ও স্বাস্থ্য

শ্রবণযন্ত্রের  ইতিহাস

‘অ্যাঁ, কী বললি?’
ঠাকুরমার প্রশ্ন শুনে খানিক হাসল অবন্তিকা। সারাদিন একটা কথা কানের কাছে তিনবার বললেও ঠাকুরমার ‘কানছাড়া’ হয়ে যাচ্ছে। চতুর্থবার সে আবার বলে, ‘তোমার জন্য একটা জিনিস এনেছি।’ 
‘কী জিনিস রে?’, ঘুরিয়ে প্রশ্ন করেন ঠাকুরমা।
‘বলব, তার আগে একটা গল্প বলি, মন আর কান দিয়ে ভালো করে শোনো’, চেঁচিয়েই বলল অবন্তিকা।
‘অ্যাই, আস্তে বল। আমি কি কালা নাকি!’
ঠাকুরমার ‘ধমক’ শুনে হেসে অবন্তিকা বলে, ‘শিঙা দেখেছ তো? আগেকার দিনে যাঁদের শুনতে সমস্যা হতো, তাঁদের ওরকম যন্ত্রের সাহায্যে শুনতে হতো। এটা সপ্তদশ শতকের কথা..।’ 
‘অ্যাই মেয়ে, আমাকে এসব গল্প শোনাচ্ছিস কেন?’ 
‘আহা শোনোই না।’ বলে ফের শুরু করে অবন্তিকা, ‘এগুলিকে ইয়ার ট্রাম্পেট বলা হতো। ১৮০০ সাল নাগাদ লন্ডনে ফ্রেডরিক সিরেনের হাত ধরে ইয়ার ট্রাম্পেটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। ১৮১৯ সালে পর্তুগালের রাজা জন (ষষ্ঠ) এর জন্য একটি বিশেষ চেয়ার ডিজাইন করার দায়িত্ব পান সিরেন। সফলভাবে তৈরি করেন তিনি। এই চেয়ারে বসে একটি নলের সাহায্যে যে কোনও শব্দ স্পষ্টভাবে শুনতে পেতেন রাজা। এই শতকের শেষদিকে ‘অ্যাকোস্টিক হর্ন হিয়ারিং এইড’ নামক একটি বিশেষ যন্ত্র বাজারে আসে। এই যন্ত্রের একপ্রান্তে কথা বললে, অন্যপ্রান্তে শোনা যেত। মূলত যাঁদের শ্রবণশক্তি দুর্বল, তাঁদের জন্য তৈরি হয়েছিল এই যন্ত্র। কী গো শুনছ?’ 
হকচকিয়ে উঠে ঠাকুরমা বললেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ বল।’ 
‘টেলিফোন আবিষ্কার হওয়ার পর শ্রবণযন্ত্র নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা আরও বাড়ল। ১৮৯৮ সালে মিলার রিস হাচিসন প্রথম বৈদ্যুতিক শ্রবণযন্ত্র আবিষ্কার করলেন। তবে সেই শ্রবণযন্ত্র বয়ে নিয়ে যাওয়া যেত না। অর্থাৎ এখন যেমন কানে লাগিয়ে ঘোরাঘুরি করা যায়, তেমনটা ছিল না।’ 
‘তারপর কী হল রে দিদিভাই?’
‘তারপর এলেন থমাস এডিসন। তাঁরও শ্রবণশক্তি দুর্বল ছিল। কার্বন ট্রান্সমিটার তৈরি করলেন তিনি। এই কার্বন ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে শ্রবণযন্ত্র আগের থেকে উন্নত হল। এরপর সিমেন্স সংস্থার তরফে বাজারে এল বিশেষ ধরনের শ্রবণযন্ত্র। ১৯২০ নাগাদ আর্ল হ্যানসন নামক একজন নৌপ্রকৌশলী তৈরি করেন ভ্যাকুয়াম-টিউব হিয়ারিং এইড। এটাও বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বাজারে এল আজকের মতো পোর্টেবল হিয়ারিং এইড।’ 
‘মানে তোরা যেটা কানে গুঁজিস?’
‘না ঠাকুমা, ওটা ব্লুটুথ হেডফোন। ১৯৬০-এর পর ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে শ্রবণযন্ত্র আরও উন্নত হয়েছে। আরও ছোট হয়েছে।’ 
ঠাকুরমা প্রশ্ন করেন, ‘তুই যে বললি কী একটা দিবি...।’
‘দেবই তো। এই নাও, ডাক্তারবাবুর সঙ্গে কথা বলে তোমার জন্য এই কাস্টমাইজড হিয়ারিং এইড তৈরি করিয়েছি। এখন হিয়ারিং এমন উন্নত হয়েছে দেখ। আজ তো তোমার জন্মদিন। এটা আমার তরফ থেকে উপহার। এবার থেকে আর কোনও কথা শুনতে গেলে বারবার হোঁচট খেতে হবে না।’ চোখে জল এল ঠাকুরমার। বাক্সটা হাতে নিয়েই জড়িয়ে ধরলেন আদরের নাতনিকে।
লিখেছেন শান্তনু দত্ত
3d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

হস্তশিল্পীরা বিশেষ স্বীকৃতি ও সুনাম পেতে পারেন। পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। ব্যয় কিঞ্চিৎ বাড়তে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৫৮ টাকা৮৪.৩২ টাকা
পাউন্ড১০৩.৮৩ টাকা১০৭.৩০ টাকা
ইউরো৮৭.৯০ টাকা৯১.০৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা