শরীর ও স্বাস্থ্য

বিয়ের আগে পাত্রপাত্রী কোন কোন রক্ত পরীক্ষা করাবেন

সুপর্ণার বিয়েটা এই বৈশাখেও হল না। অথচ সব ফাইনাল হয়ে গিয়েছিল মাসকয়েক আগেই। আসলে পাত্রর ব্যবসায়ী বাবার হাতে তিনি তুলে দিয়েছিলেন একটি প্রেসক্রিপশন। যাতে পাত্রপাত্রী দু’পক্ষেরই বিয়ের আগে অবশ্য করণীয় কয়েকটি পরীক্ষার কথা লেখা ছিল। সেটা পড়ে ব্যবসায়ী বাবা রাধাকান্তবাবু তো খেপে লাল! ছেলের এইডস পরীক্ষা হবে, সঙ্গে আরও হাবিজাবি! তার মানে ছেলের চরিত্র নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে। অতএব এই বিয়ে বাতিল!
প্রদীপ আর অদিতির সংসারে নতুন অতিথির আগমনে সারা বাড়ি জুড়েই খুশির হওয়া। কিন্তু বছর দুয়েকের মধ্যেই সবাই খেয়াল করলেন, শিশুটি ঠিকমতো বাড়ছে না। কপালটা চওড়া হচ্ছে। নাক বসে যাচ্ছে। ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। পেটটাও ফুলছে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতেই তিনি কয়েকটি রক্তপরীক্ষা করাতে বললেন। আর তাতেই ধরা পড়ল বাচ্চাটি থ্যালাসেমিয়ায় ভুগছে।
একবিংশ শতাব্দীতে পা রেখেছি আমরা অনেক আগেই। ইন্টারনেট আর ওয়াই জেনারেশনের যুগ এটা। বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। ভাঙছে আমাদের অনেক ধ্যানধারণাই। কোষ্ঠীবিচার যেমন করাচ্ছেন করান বা না করান, সে আপনার নিজস্ব বিশ্বাস-অবিশ্বাসের ব্যাপার। কিন্তু বিয়ের আগেই পাত্র-পাত্রীর রক্তপরীক্ষা করাতে ভুলবেন না যেন! বিবাহিত জীবনকে সুখে রাখার জন্য, ভাবী সন্তান-সন্ততিকে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন দেওয়ার জন্য রক্তের মামুলি কিছু পরীক্ষা বিয়ের আগেই করিয়ে নিতে দোষ কোথায়!
কোন কোন পরীক্ষা—
চাইলে তো আপনি মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত হাজার একটা পরীক্ষা করাতেই পারেন। কিন্তু নানা কারণেই সেটা সম্ভব নয়, প্রয়োজনও নেই। আমাদের উদ্দেশ্য পাত্র-পাত্রীর মধ্যে কোনও দুরারোগ্য বা বংশগত রোগ আছে কি না, সে সম্বন্ধে একটা ধারণা করে নেওয়া, যাতে তাঁদের বিবাহ পরবর্তী জীবন নীরোগ হয়। আরেকটা কথা, এই পরীক্ষাগুলো করিয়ে কারও কোনও অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ার অর্থ এই নয় যে, বিয়েটা তখনই ভেঙে দিতে হবে। আসল উদ্দেশ্য হল সাবধানতা—ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এগনো। 
আবার এই পরীক্ষাগুলো করলেই যে সব অসুখ জেনে ফেলা যাবে, তাও নয়। বহু পরিবারে নানা ধরনের মানসিক রোগের ইতিহাস থাকে। পাত্র বা পাত্রী সেই রোগের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন ওষুধ খাচ্ছেন, তাও হতে পারে। কিংবা কারও কোনও শারীরিক অক্ষমতা আছে, যা পরবর্তীকালে সন্তান জন্ম দেওয়ার বেলায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে পারে। এইসব বিষয়ে অনেকে গোপন করেন। অনেকে ভালো করে জানেনও না। প্রেমের বিয়ে হলে জানা বোঝার ব্যাপারটা একটু বেশি থাকে। তবে পাশ্চাত্য দেশগুলোর মতো সব ব্যাপারটা তো এদেশে এতটা খুল্লামখুল্লা হয়ে যায়নি যে বিয়ের আগেই পাত্র-পাত্রী পরস্পরের দেহ-মনের সব অলিগলিতে হানা দিয়ে বেড়াবেন!
প্রথমত রক্তের কিছু পরীক্ষা করে নিলেই বিয়ের আগে সাবধান হওয়া যায়। এছাড়া ব্লাড প্রেশার, চেস্ট এক্স-রে, ইসিজি, রুটিন আই চেকআপ করিয়ে নিলেও মন্দ হয় না। পাত্র-পাত্রী উভয়েরই কিন্তু এগুলো করাতে হবে। তাছাড়া দুই পরিবারে মৃগীর মতো কোনও স্নায়ু রোগের ইতিহাস আছে কি না, জেনে নিলে ভালো হয়।
রক্তপরীক্ষাগুলোর মধ্যে রয়েছে রক্তের গ্রুপিং, আর এইচ ফ্যাক্টর, থ্যালাসেমিয়া, হিমোফিলিয়া, এইডস, সুগার, উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস থাকলে লিপিড প্রোফাইল। এছাড়া লিভার ফাংশন টেস্ট ইত্যাদি। ক্রোমোজোম স্টাডি করে অনেক বংশগত রোগের সুলুকসন্ধান করা যায়। তবে বিয়ের আগে এটা না করলেও চলে। বরং মাতৃকুল কিংবা পিতৃকুলে যদি কোনও দুরারোগ্য বংশগত রোগের ইতিহাস থাকে, তাহলে সন্তান জন্ম দেওয়ার আগে যে কোনও দম্পতির উচিত কোনও জেনেটিক এক্সপার্টের পরামর্শ নেওয়া এবং প্রয়োজনে গর্ভধারণের পর গর্ভস্থ শিশুর জিন সংগ্রহ করে স্টাডি করে দেখে নেওয়া যে শিশুটি কোনও রোগ নিয়ে জন্মাবে কি না!
সেইদিন হয়তো খুব বেশি দূরে নেই, যেদিন নিছক কোষ্ঠী বিচার নয়, জিন বিচার করেই বিয়ের সানাই বাজবে। ক্রেডিট কার্ডের মতো জিন কার্ড পকেটে নিয়েই পাত্র-পাত্রী ঘুরে বেড়াবেন। কম্পিউটারে ফেললেই জানা যাবে, কার সঙ্গে কার বনবে। ভাব-ভালোবাসার ফাঁদে পড়ে বড়জোর প্রেম-ঘনিষ্ঠতা হতে পারে। কিন্তু বিয়ে? তা হয়তো তখন হবে জিন মিলিয়েই! 
লিখেছেন: ডাঃ অমিতাভ ভট্টাচার্য
3d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

হস্তশিল্পীরা বিশেষ স্বীকৃতি ও সুনাম পেতে পারেন। পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। ব্যয় কিঞ্চিৎ বাড়তে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৫৮ টাকা৮৪.৩২ টাকা
পাউন্ড১০৩.৮৩ টাকা১০৭.৩০ টাকা
ইউরো৮৭.৯০ টাকা৯১.০৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা