শরীর ও স্বাস্থ্য

কোন কোন শাকসব্জি ও ফলে থাকে ভিটামিন-ডি?

পরামর্শে বাঁকুড়ার পাত্রসায়র ব্লক হাসপাতালের আয়ুর্বেদ মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ সুমিত সুর।

শুধু সূর্যালোক নয়, বেশ কিছু ফল ও শাকসব্জিতেও থাকে ভিটামিন ডি। নিরামিষাশীরা তাই নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখুন এগুলি। ভিটামিন ডি থাকে এমন কয়েকটা ফল ও সব্জি হল পাকা কলা, কমলালেবু, পালং শাক ও মাশরুম।
কলা: অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল কলা।  প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে এতে। আছে উচ্চ মাত্রায় পটাশিয়াম। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি এবং একাধিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস-এর উৎসও হল কলা। ১০০ গ্রাম কলায় থাকে ৮৯ কিলো ক্যালোরি এনার্জি। জল থাকে ৭৫ শতাংশ। প্রোটিন ২২.৮ গ্রাম। সুগার ১২.২ গ্রাম। ফাইবার থাকে ২.৬ গ্রাম। ফ্যাট থাকে ০.৩ গ্রাম।
প্রচুর ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীর জন্য কলা অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া কলায় থাকা শর্ট-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড হজমতন্ত্রের পক্ষে বিশেষ উপকারী। অন্যান্য ধরনের ফাইবারের খুব ভালো উৎস হল কলা। যেমন পেকটিন। পেকটিন জলে দ্রবণীয় ফাইবার। মল নরম রাখতে সাহায্য করে। কলায় যথেষ্ট মাত্রায় ডোপামিন ও ক্যাটেচিন আছে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এছাড়া কলায় ভিটামিন ডি থাকে ৭৫ আইইউ। যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
মাশরুম: ক্যালোরির মাত্রা কম অথচ পুষ্টিগুণে ঠাসা মাশরুম নিয়মিত খেলে স্বাস্থ্যের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়। মাশরুমে একাধিক খনিজ এবং ভিটামিন তো রয়েছেই, সঙ্গে রয়েছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় প্রোটিন। এছাড়া রৌদ্রে বেড়ে ওঠা মাশরুমে রয়েছে ভিটামিন ডি। প্রতি ১০০ গ্রাম  মাশরুমে আছে ২৩০০ আইইউ  ভিটামিন ডি। দেখা যাক, মাশরুমকে কেন এত উপকারী বলা হচ্ছে—
মাশরুমে আছে জিঙ্ক, যা রোগপ্রতিরোধী ক্ষমতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। বাচ্চাদের সার্বিক বৃদ্ধিতেও মাশরুম অত্যন্ত উপকারী। আছে পটাশিয়াম যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা নেয়। ক্যালোরি অত্যন্ত কম থাকা সত্ত্বেও মাশরুম খেলে দীর্ঘসময় পেট ভরে থাকার অনুভূতি মেলে। ফলে ডায়েটে মাশরুম যোগ করলে উলটোপালটা খাওয়ার মাত্রা কমে। ওজন ঝরাতেও সুবিধা হয়। কলার মতো মাশরুমেও প্রচুর ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূরে রাখে। এতে প্রোটিনের মাত্রাও থাকে যথেষ্ট। ফলে পেশিগঠন ও ক্ষতপূরণে মাশরুমের বিশেষ ভূমিকা আছে। মাশরুমে থাকা অন্যান্য খনিজের মধ্যে আছে সেলেনিয়াম, কপার, থায়ামিন, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি। একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য টুকরো করে কাটা এক কাপ মাশরুমই যথেষ্ট।
পালং শাক: উপকারী শব্দটির যদি কোনও প্রতিশব্দ হতো, তাহলে তা একমাত্র ‘পালং শাকই’ হতো। পালং-এর উপকারের সীমা নেই। এই শাকে ক্যালোরির মাত্রা রয়েছে অত্যন্ত কম। অথচ বাকি সমস্ত উপকারী উপাদান রয়েছে ভরপুর মাত্রায়, যা বিবিধ রোগ দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। 
প্রথমত, পালং শাকে জলের মাত্রা যথেষ্ট। তাই পালং ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষা করে। এছাড়া এই শাকে থাকে ক্যালশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং ভিটামিন কে এবং ই। এই ভিটামিন ও খনিজ হাড়ের স্বাস্থ্যরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা নেয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও উপরিউক্ত ভিটামিন ও খনিজের উল্লেখযোগ্য যোগদান জরুরি।  আবার পালং-এ রয়েছে প্রভূত মাত্রায় আয়রন, যা রক্তাল্পতা প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা নেয়। উপযুক্ত মাত্রায় ফোলেট থাকায় সন্তানসম্ভবা মা’কে এই শাক খাওয়াতে পারলে গর্ভস্থ ভ্রূণের নিউরাল টিউব বার্থ ডিফেক্ট বা স্পাইনা বাইফিডার মতো অসুখ প্রতিরোধ করা যায়। এছাড়া পালং-এ থাকা বি৬ বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশের জন্যও উপকারী। আছে লিউটিন, জিয়াজ্যান্থিন এবং ভিটামিন এ, যা দীর্ঘকাল ধরে চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। আবার পালং-এ থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি শরীরের ফ্রি র‌্যাডিকেলস ধ্বংস করে। তাই বয়স ধরে রাখতে, হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও স্ট্রোক প্রতিরোধে পালং নিয়মিত পাতে রাখা দরকার। আর হ্যাঁ, প্রতি ১০০ গ্রাম পালং-এ আছে ৩১ আইইউ ভিটামিন ডি। 
লেবু: এ যেন পাওয়ার হাউজ! সব ধরনের লেবুর যে কী উপকার তা বলে বোঝা যাবে না। ভিটামিন সি রয়েছে একেবারে ভরপুর মাত্রায়। এছাড়া আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং একাধিক উপকারী উপাদান। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভিটামিন সি যুক্ত খাদ্য খেলে হার্ট ও স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণ কমে। এছাড়া ভিটামিন সি নিজে একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই রক্তবাহী নালীতে প্লাক জমাও প্রতিরোধ করে। দূর করে ক্যান্সারের আশঙ্কাও। বিভিন্ন ধরনের লেবু যেমন মুসাম্বি ও কমলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। তাই গোটা ফল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর হয়। এছাড়া পেটও দীর্ঘসময় ধরে ভরে থাকে। এছাড়া লেবুতে থাকে সাইট্রিক অ্যাসিড যা বিভিন্ন ধরনের কিডনি স্টোনের গঠনে বাধা দেয়। এছাড়া শরীরে আয়রনের শোষণে সাহায্য করে ভিটামিন সি। তাই নিয়মিত লেবু খেলে দেহে আয়রনের শোষণ ভালো হয়। অ্যানিমিয়া প্রতিরোধেও লেবু বিশেষ ভূমিকা নেয়। প্রতি ৫০ এমএল লেবুর রসে ভিটামিন ডি থাকে ১০০আইইউ।
একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্যে এই পরিমাণ যথেষ্ট হলেও, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্য তালিকা বানান।
লিখেছেন সুপ্রিয় নায়েক
 
18Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা