বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
হ য ব র ল
 

ছুটির মজা

এবছর অনেকটা আগেই পড়ে গিয়েছে গরমের ছুটি। তীব্র দাবদাহ কমে কোনও কোনও জায়গায় বৃষ্টির দেখা মিলেছে। কীভাবে কাটছে ছুটি? আগেভাগেই জানিয়েছিল মালদহের শুক্রবারি আবুল কাশেম হাই মাদ্রাসার পড়ুয়ারা।

হোমওয়ার্ক আর লং জাম্প নিয়েই মশগুল
 আমার গরমের ছুটি কাটবে পড়াশোনা করেই। গ্রীষ্ম অবকাশের জন্য আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা যে হোমওয়ার্ক দিয়েছেন, সেগুলি আগে শেষ করব। সেইসঙ্গে অবসর সময়ে খেলাধুলাও করব। আমি বন্ধুদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলি। তবে আমার পছন্দের খেলা লং জাম্প। ছোটবেলা থেকেই এই খেলার প্রতি আমার আকর্ষণ। নিয়মিত এই খেলার চর্চা করি। মাদ্রাসা গেমস অ্যান্ড স্পোর্টসের জেলাস্তরের দীর্ঘ লম্ফন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে রাজ্যস্তরে খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম। সেখানে আমি তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিলাম। এবারের ছুটিতে পড়াশোনার পাশাপাশি আমি এই খেলার অনুশীলন করতে চাই।
—মাশরেফা খাতুন, সপ্তম শ্রেণি

পরীক্ষা প্রস্তুতি
 দীর্ঘ গরমের ছুটি হওয়ায় মন খারাপ করছে। স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা যেমন হয়, তেমনই বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা ও মজা করা হয়। আমাদের প্রথম পর্বের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল ২২ এপ্রিল। সেদিন থেকেই গরমের ছুটি শুরু হওয়ায় পরীক্ষা হয়নি। ছুটির পর পরীক্ষা শুরু হবে। তাই এই গরমের ছুটিতে প্ৰথম পর্বের পরীক্ষার পড়া ঝালিয়ে নেব। সেইসঙ্গে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেওয়া সামার প্রজেক্টের কাজ করব। দ্বিতীয় পর্বের মূল্যায়নের জন্য যেসব পড়া দেওয়া হয়েছে সেগুলোও পড়ব। অবসর সময়ে পাড়ার  বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে খেলাধুলা করব। তবে রোদে বাইরে বেশি ছোটাছুটি করব না। বাবা-মাকে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে কাজে সাহায্য করব। আর গরমে শরীর সুস্থ রাখতে বেশি করে জল খাব।
—তৌসিফ আহমেদ, অষ্টম শ্রেণি
বাগান করাই শখ
 গরমের ছুটি বেড়ে যাওয়ায় হাতে অনেকটা সময় পাওয়া গেল। তাই যে বিষয়গুলিতে একটু পিছিয়ে রয়েছি, সেই পড়াগুলো এগিয়ে নেব। আমি ফুলের বাগান তৈরি করতে ও গাছ লাগাতে ভালোবাসি। আমাদের প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের সুন্দর সুন্দর ফুলের গাছ রয়েছে। আমার শখ ফুলের বাগান করা। আমাদের 
মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সহপাঠীরা মিলে 
ফুল গাছ লাগিয়েছি। গাছগুলির নিয়মিত পরিচর্যাও করা হয়। ছুটিতে বাড়িতে বাগান পরিচর্যা করব। নতুন নতুন গাছ বসাতে আমার খুব ভালো লাগে। ফুলের সৌন্দর্য ও গন্ধ সকলকেই মুগ্ধ করে। তাই ফুল আমারও প্রিয়।  
—সুইটি রজক, নবম শ্রেণি

সামার প্রজেক্টের ব্যস্ততা
 প্রকৃতির কাছে আমরা চিরকালই অসহায়। তীব্র দাবদাহের কারণে ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে কিছুদিন আগে থেকেই স্কুল ও মাদ্রাসার পঠনপাঠন বন্ধ রাখা হয়েছে। অনেকেই মনে করেন বেশিদিন স্কুল ছুটি থাকলে পড়ুয়ারা লেখাপড়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিন্তু সেটা সবসময় ঠিক নয়। ইচ্ছা থাকলেও যে উপায় হয় সেটা প্রমাণিত। মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের ‘সামার প্রজেক্ট’-এর মাধ্যমে আমরা বাড়িতে বসে পড়াশোনাই চালিয়ে যেতে পারব। বাড়িতে স্কুলের রুটিনমাফিক পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকরা। যাতে আমাদের গ্রীষ্মাবকাশের পর যে পরীক্ষা হবে, তার ফল ভালো হয়। আমি ছুটিতে সামার প্রজেক্ট নিয়েই ব্যস্ত থাকব। পাশাপাশি খেলাধুলাও করব। 
—নাসরিন পারভিন, নবম শ্রেণি

সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলাই লক্ষ্য
 পড়াশোনার পাশাপাশি সমাজ সচেতনতামূলক কাজের অনুপ্রেরণা লাভ করেছি মাদ্রাসার মীনা মঞ্চ থেকে। মাদ্রাসার মীনা মঞ্চের সুগম কর্তা মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লা-হিল মামুনের নেতৃত্বে আমরা সপ্তাহে একদিন করে বিভিন্ন সমাজ সচেতনতামূলক কাজে অংশ নিতাম। গ্রীষ্মের ছুটিতে  সমাজ সচেতনতা বাড়াতে নিজের গ্রামে কিছু ছোটখাট কর্মসূচি পালন করার ইচ্ছা আছে। সেইসঙ্গে পড়াশোনাও ভালো করে করব এই ছুটিতে। সামনেই আমার দশম শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষা। তাই লেখাপড়ায় কোনওরকম খামতি রাখতে চাই না।
—হামিদুর রহমান, দশম শ্রেণি

সময় কাটাতে একমাত্র ভরসা গল্পের বই
 প্রচণ্ড গরমের কারণে আমাদের গরমের ছুটি এগিয়ে আনা হয়েছে। ছাত্র জীবনে পড়াশোনা, খেলাধুলা, অবসরযাপন নিয়ম মেনে রুটিন মাফিক করতে হয়। তবেই জীবনে সাফল্য লাভ করতে পারব। তাই এই গরমের ছুটিতে আমি রুটিন অনুযায়ী পড়াশোনা করব। ক্লাসে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে সেগুলো বাড়িতে বসে ঝালিয়ে নেব। তবে মন ভালো রাখতে কিছু গল্পের বইও পড়ব। গল্প পড়তে খুব ভালো লাগে। আমার প্রিয় গোয়েন্দা ফেলুদা। আর সময় পেলে আত্মীয় স্বজনের বাড়ি ঘুরতে যাব। গ্রামে কয়েকজন সহপাঠী আছে, তাদের সঙ্গেও দেখা করতে যাব। ছুটি থাকায় স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে অনেকদিন দেখা হবে না। তাই বন্ধুরা বাড়ি এলে বা তাদের বাড়ি যেতে পারলে মন ভালো হয়ে যাবে।
—সানোয়ারা খাতুন, 
একাদশ শ্রেণি
শুক্রবারি আবুল কাশেম হাই মাদ্রাসা, মালদহ
 মালদহের চাঁচল-২ ব্লকের শুক্রবারি আবুল কাশেম হাই মাদ্রাসা (উচ্চ মাধ্যমিক) জেলার অন্যতম এক অগ্রণী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই মাদ্রাসা বারোমাসিয়া নদীর ধারে এক মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে উঠেছে। মাদ্রাসাটি ১৯৭১ সালে পথচলা শুরু করে। তবে ১৯৭৫ সালে জুনিয়র মাদ্রাসা হিসেবে সরকারি অনুমোদন লাভ করে। তারপর ১৯৮৩ সালে মাধ্যমিক ও ২০০৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার জন্য ৫৮ শতক জমি দান করেন এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি আবুল কাশেম। তাই তাঁরই নামানুসারে মাদ্রাসার নামকরণ করা হয়েছে শুক্রবারি আবুল কাশেম হাই মাদ্রাসা। কয়েক বছর আগে এই মাদ্রাসার সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ উদ্‌যাপন করা হয়েছে। এখানে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন চলে। মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ১ হাজার ৭৪।
মাদ্রাসার ঝুলিতে ইতিমধ্যেই এসেছে অনেক পুরস্কার। ২০১৫ সালে বেস্ট স্যানিটেশন  পুরস্কার, ২০১৬ সালে নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার, ২০১৭ সালে মহকুমা পরিচ্ছন্নতম বিদ্যালয় পুরস্কার ও শিশু মিত্র পুরস্কার। ২০২০ সালে রাজ্য লৌহ বল নিক্ষেপ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় এই মাদ্রাসার পড়ুয়া। এছাড়াও ২০২২ সালে জেলাভিত্তিক স্বচ্ছ বিদ্যালয় পুরস্কার লাভ করে আবুল কাশেম মাদ্রাসা। ২০১২ সালের হাই মাদ্রাসা ফাইনাল পরীক্ষায় রাজ্যের মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে তাক লাগিয়ে দেয় এখানকার ছাত্র মহম্মদ শহিদুল্লাহ। বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক। এছাড়াও মাদ্রাসার বহু কৃতী পড়ুয়া স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।
 ডঃ ওবাইদুর রহমান,প্রধান শিক্ষক

12th     May,   2024
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ