বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
হ য ব র ল
 

আশ্চর্য ফুল

ফুল কে না ভালোবাসে! কিন্তু আশপাশের পরিচিত ফুলের বাইরে কিছু অদ্ভুত-দর্শন ফুলের খোঁজ দিলেন রুদ্রজিৎ পাল
 
ফুল ভালোবাসে না, এরকম মানুষ পৃথিবীতে বিরল। সবার হয়তো একরকম ফুল পছন্দ নয়। কিন্তু কোনও না কোনও ফুলের প্রতি মনের টান মানুষের থাকবেই। ফুলের ব্যবহার হয় ধর্মীয় কাজে, বাড়ি বা সভা সাজাতে, উপহার হিসাবে বা সুগন্ধি জাতীয় পণ্য তৈরি করতে। আমরা যারা বাংলায় থাকি, তাদের চেনা ফুলের মধ্যে রয়েছে— জবা, টগর, শিউলি, গোলাপ, শালুক, পলাশ। বাংলার ভূপ্রকৃতি বহু অনিন্দ্যসুন্দর পুষ্পের সমাহারে ঐশ্বর্যবান। কিন্তু এইসব চেনা ফুলের বাইরেও কিছু আশ্চর্য সুন্দর ফুল রয়েছে পৃথিবীতে। আজকে সেরকম কিছু অন্যরকম ফুলের সঙ্গেই আমাদের আলাপ হবে। 
লাল চুলের বিনুনির মতো লম্বা, ঝোলা ফুলটির নাম ‘রেড ক্যাট টেইল’। মানে ফুলটি দেখে মোটা লাল রঙের বিড়ালের লেজ মনে হয়। এক-একটি ফুলের গুচ্ছ প্রায় দেড়-দুই ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এরকম লম্বা পুষ্পগুচ্ছের বৈজ্ঞানিক নাম হল ক্যাটকিন। ফুলটি দেখতে সুন্দর হলেও এই গাছের আঠা কিন্তু চামড়ায় ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। এই ফুলের আরও এক নাম হল ফিলিপাইন মেডুসা। বিষুবরেখার কাছাকাছি এশিয়ার কিছু দ্বীপ এই ফুলগাছের জন্মস্থান ছিল। কিন্তু এখন সারা পৃথিবীতেই বাগানের শোভাবর্ধনের জন্য এই ফুল লাগানো হয়। 
এবার একটা অদ্ভুত-দর্শন ফুলের কথা বলা যাক। পাপড়িগুলো পেঁচানো, নীচের দিকে হলুদ রং আর সামনের দিকে লাল। দেখে মনে হয় যেন আগুনের শিখা। এই ফুলের নাম ‘ফ্লেম লিলি’ বা অগ্নিশিখাপুষ্প। দেখতে সুন্দর হলেও এই ফুলের গাছ কিন্তু বিষাক্ত। ফলে এই গাছ বাড়িতে রাখা খুব একটা নিরাপদ নয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম হল গ্লোরিওসা সুপারবা। এই ফুল সমুদ্র সমতলে যেমন দেখা যায়, তেমনই পাহাড়ে ছ’হাজার ফুট উচ্চতাতেও জন্মাতে পারে। এই ফুলগাছের নানা অংশ ভারত সহ বিভিন্ন দেশে ভেষজ ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার হয়। 
কলার মতো উপর থেকে নীচে ঝুলতে থাকে উজ্জ্বল লাল-হলুদ রঙের ফুল। এর নাম ‘লবস্টার ক্ল ফ্লাওয়ার’। চিংড়ি মাছের দাঁড়ার মতো দেখতে বলে এরকম নাম। এর আরও একটা নাম হল ‘ফলস্‌ বার্ড অব প্যারাডাইজ’ ফুল। এই ফুল আমেরিকায় পাওয়া যায় এবং এর বৈশিষ্ট্য হল হামিংবার্ড এদের পরাগমিলনে সাহায্য করে। এই ফুলের গাছ কলাবতীর মতো শিকড়ের মাধ্যমে বিস্তারলাভ করে। অর্থাৎ, একটি গাছ লাগালেই পরপর অনেক গাছের জন্ম হতে পারে। একটি ফুলের গোছা অনেকদিন বেঁচে থাকে। এই গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হল হেলিকোনিয়া। 
অর্কিড ফুলের জগতে এক বিস্ময়। হাজার হাজার গোত্রের অর্কিডের মধ্যে এটির নাম ক্যান্ডির নর্তকী। শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডিতে যে প্রাচীন নৃত্যকলা প্রচলিত, সেই শিল্পের নর্তকীদের নাচের একটি মুদ্রার মতো দেখতে এই ফুল। 
সাইক্যাড নামে একটি আশ্চর্য গাছ আছে। সেই জুরাসিক যুগ থেকে এই গাছ পৃথিবীতে রয়েছে। মানে, আজকে বাগানে যে গাছ আমরা দেখছি, এককালে ডাইনোসররাও সেই ধরনের গাছ দেখত এবং তাদের কেউ কেউ সেই গাছের পাতা চিবিয়ে খেত! সুতরাং একে ‘লিভিং ফসিল’ বলাই যায়। খুব ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এই গাছ। সেই সাইক্যাডের ফুল একদম অন্য ধরনের দেখতে। এই সব ফুল পোলিনেট করে এক বিশেষ প্রজাতের বীটল পোকা। 
কফি গাছের ফুল! তোমাদের যাদের বাড়িতে বড়রা রোজ কফি খান, তাঁদের এটা দেখিয়ে জিজ্ঞাসা কর তো চিনতে পারেন কি না? কফি গাছে উজ্জ্বল সাদা রঙের ফুল হয় এবং তার পর হয় সেই ফুলের বীজ, যেটা কফি বিন হিসাবে ব্যবহার করা হয়। একটা মজার তথ্য জেনে নাও। এই যে কফি বিনে ক্যাফিন থাকে, সেটা কিন্তু বিবর্তনের পথে এসেছে এই গাছকে পোকার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে প্রথম দিকের কফি গাছে, মানে আজ থেকে কোটি কোটি বছর আগের সেই প্রথম প্রজন্মে, কফি বীজে ক্যাফিন থাকত না। পরবর্তীকালে বিভিন্ন পোকার এবং উদ্ভিদভোজী প্রাণীর হাত থেকে বাঁচার জন্য এই গাছ তার বীজে এই রাসায়নিক জমাতে শুরু করে। আজকে সেই রাসায়নিকের লক্ষ লক্ষ ডলারে ব্যবসা করা হয়!

28th     April,   2024
অক্ষয় তৃতীয়া ১৪৩১
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ