বিকিকিনি

রিভার রাফটিং রোমাঞ্চ  

কাকলি পাল বিশ্বাস: বেড়াতে গিয়ে অনেকেই আজকাল অ্যাডভেঞ্চার খোঁজেন। তারই অন্যতম রিভার রাফটিং। এই বিষয়ে একটা আবছা ধারণা আমার আগেই ছিল। কিন্তু তা চাক্ষুষ করিনি কখনও। সম্প্রতি একটি বাংলা ছবি দেখতে গিয়ে প্রথম নিজের চোখে দেখলাম রিভার রাফটিং। সেখানে দেখানো হয়েছিল নায়ক একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে একটি খরস্রোতা পাহাড়ি নদীর মধ্যে দিয়ে টিউবের বোর্ডে করে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে এগিয়ে চলেছে সামনের দিকে। নদীর জল ভিজিয়ে দিচ্ছে সবাইকে। সকলেই  মজায় মশগুল। সিনেমায় এমন দৃশ্য দেখে রিভার রাফটিংয়ের প্রতি আকর্ষণ তো অনুভব করিইনি, উল্টে বিরূপ হয়েছিলাম। মনে মনে ভেবেছিলাম আর যাই করি না কেন, রিভার রাফটিং কখনওই করব না। আমার মনে একটা ভয় হয়েছিল, রিভার রাফটিং করতে গিয়ে হয়তো পাথরে ধাক্কা খেয়ে আমার বোটটাই উল্টে যাবে। তাহলে আমি ওই নদীতেই ভেসে যাব। সাঁতার না জানার নানা বিড়ম্বনার একটা, এই ভেসে যাওয়ার ভয়। 
কিন্তু এই সব ভাবনা, ভয় একেবারে ওলটপালট হয়ে গেল যেদিন আমরা সিমলা থেকে কুলু হয়ে মানালির দিকে রওনা হলাম। কুলু থেকে মানালি যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটা রিভার রাফটিং-এর স্পট পড়ে। আমাদের ড্রাইভার তারই মধ্যে একটিতে নিয়ে গেলেন। সেখানে গিয়েও আমি রিভার রাফটিং করব না বলে জেদ ধরলাম। কিন্তু জেদ শেষ পর্যন্ত ধোপে টিকল না। স্বামী ও পুত্রর জোড়াজুড়ির কাছে হার মানলাম। ওরা চরম পন্থা নিলেন। স্বামী বললেন, ‘তুমি বরং থাকো আমরা দু’জন রাফটিং করে আসি।’ ওদের একা ছাড়তে মন সায় দিচ্ছিল না। বাধ্য হয়েই রাজি হলাম।
আমাদের গাড়ি অ্যাডভেঞ্চার গেমস-এর অফিসে গিয়ে দাঁড়াল। সেখান থেকে একটি অন্য গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হল রাফটিং স্পটে। তার আগে ছিল ড্রেস পর্ব। অফিসে গিয়ে নিজেদের নাম লেখাতেই ওঁরা তিনজনকে ড্রেস দিলেন। সেগুলো নিয়ে দ্বিতীয় গাড়িতে চড়ে বসলাম এবং ড্রাইভারের পরামর্শ অনুযায়ী পোশাকগুলো গাড়িতে যেতে যেতেই পরে নিলাম। জামাকাপড়ের উপরেই। বিশেষ এই পোশাকটি ওয়াটারপ্রুফ। জলের তোড়ে ভিজে গেলেও যাতে সমস্যা না হয় সেই কথা ভেবে এই পোশাক পরা। মিনিট পাঁচেকের মধ্যে আমরা রাফটিং স্পটে গেলাম। গাড়ির মাথা থেকে নামানো হল বোট। তাতে চড়েই আমরা অ্যাডভেঞ্চার শুরু করব। বোটে ওঠার আগে ওয়াটার প্রুফ পোশাকটির উপর লাইফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরতে দেওয়া হল। বোট  চালাবেন পাইলট। আমাদের বোটে বসিয়ে তাঁর গায়ে লাগানো দড়িটা চেপে ধরতে বললেন পাইলট। আমরাও ‘জয় মা’ বলে শুরু করলাম অ্যাডভেঞ্চার। 
প্রথম দিকে একটু ভয় ভয় লাগলেও কিছু সময় পর থেকে উপভোগ করতে শুরু করলাম। অসম্ভব রোমাঞ্চ যেন পেয়ে বসল আমাদের। পাহাড়ি নদী বিয়াস-এর স্রোতে পাথরে ধাক্কা খেতে খেতে ভেসে চলল আমাদের বোট। বিয়াসের হিমশীতল জল ডিসেম্বরের পড়ন্ত বেলায় গায়ে এসে লাগতেই ঠান্ডায় হাড়ে কাঁপন ধরছিল। তবে কম্পন হার মানছিল অদ্ভুত রোমাঞ্চের কাছে। ভাসতে ভাসতেই আমরা এন্ডিং পয়েন্টে চলে এলাম। মন খারাপ হয়ে গেল বোট থেকে নামার সময়। যে ভয় থেকে এমন রোমাঞ্চে শরিক হব না ভাবছিলাম, সেই রোমাঞ্চের স্বাদই তখন আরও বেশি মাত্রায় চাইছিল মন। যাইহোক সব শেষে আমাদের আবার গাড়ি করে অ্যাডভেঞ্চার অফিসে পৌঁছে দেওয়া হল। রিভার রাফটিং করার শেষে মনে হয়েছিল সত্যি যদি এই অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ না নিতাম তাহলে হয়তো জীবনটা অপূর্ণ থেকে যেত।
মনে রাখবেন: রিভার রাফটিং করার সময় এমন পোশাক পরা উচিত যেটা ভিজলে অসুবিধা হবে না এবং এই অ্যাডভেঞ্চার করার সময় সঙ্গে ঘড়ি মোবাইল রাখা যাবে না। বোটের পাইলটের হেলমেটের সঙ্গে ক্যামেরা লাগানো থাকে। ওরা ছবি তুলে দেয়। ছবি ও ভিডিও তোলার জন্য অতিরিক্ত মূল্য নিয়ে থাকে। ছ’জনের নৌকোয় এই অভিযানের খরচ ৩০০০ টাকা।  
17Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা