বিকিকিনি

রান্নাঘরের ভোলবদল

বাড়ি হোক বা ফ্ল্যাট, রান্নাঘরটা একটু সুন্দর সাজানো থাকলে গৃহিণীর মন ভালো থাকে। মডিউলার কিচেনে আধুনিক প্রজন্মের অনেকেই এখন অভ্যস্ত। কিন্তু রান্নাঘর যদি মডিউলার নাও হয় তবু তার সাজগোজে কোনও সমঝোতা করবেন না। ছোট থেকে মাঝারি রান্নাঘরের সাজ নিয়ে পরামর্শ দিলেন ইন্টিরিয়র ডিজাইনার মীনাক্ষী রায়।

রান্নাঘর ছোট হলে
ছোট রান্নাঘরের ডিজাইন শুরু করুন একেবারে সিলিং থেকে, বললেন ইন্টিরিয়র ডিজাইনার মীনাক্ষী রায়। একটু উঁচু করে ক্যাবিনেট বানিয়ে নিন। প্লেট, বাটি, গ্লাস, রান্নার সামগ্রী রাখার জার ইত্যাদির মাপে বানান এই ক্যাবিনেট। এই ধরনের রান্নাঘরে একটা রট আয়রনের হ্যাঙ্গিং ল্যাডার রাখবেন। সিলিং থেকে হুক দিয়ে ঝোলানো এই মইগুলো টেনে নামানো যায়। আবার প্রয়োজন মিটলে ভাঁজ করে তুলেও দেওয়া যায়। একটু উজ্জ্বল রঙের মই রান্নাঘরের দেওয়াল  বা টালির রঙের সঙ্গে কম্বিনেশন অথবা কনট্রাস্টে রাখতে পারেন। সিলিংয়ের মতোই রান্নাঘরের মেঝে থেকেও পাল্লা দেওয়া তাকের ব্যবস্থা রাখবেন। রান্নার ভারী বাসন, যেমন হাঁড়ি, কড়া, স্যসপ্যান রাখার জন্য এই তাকগুলো কাজে লাগবে। 
ছোট রান্নাঘরের একটা দেওয়ালে সুদৃশ্য বেশ কিছু তাক বানিয়ে নিন। এই তাকগুলোর সঙ্গে প্লাগ পয়েন্টের সংযোগ রাখবেন। এগুলো হল রান্নাঘরের বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি রাখার জন্য, জানালেন মীনাক্ষী। তাঁর মতে, এমনভাবে এই যন্ত্রগুলো রাখতে হবে যাতে যে কোনও সময় তা ব্যবহার করা যায়। এছাড়া রান্নাঘরের কাউন্টার এমনভাবে করবেন যাতে গ্যাস আভেন রাখার পরেও ইন্ডাকশন কুকার ও মাইক্রো আভেন রাখার জায়গা থাকে। 
জায়গার অভাব থাকলে রান্নাঘরের সিঙ্কের সঙ্গেই বাসনের জল ঝরানো, তরকারি ধোয়ার ড্রেনবোর্ড ইত্যাদি লাগিয়ে নিন। এমনভাবে লাগাবেন যাতে তা খুলে রাখা যায়। এই ধরনের ডিট্যাচেবল বোর্ড থাকলে বাড়তি জায়গা নষ্ট হয় না। এক্ষেত্রে কলের ধরনটাও একটু ভিন্ন হবে, বললেন মীনাক্ষী। আজকাল আধুনিক কিছু কল পাওয়া যায় বাজারে যাতে দু’তিন রকম জলের ফ্লো থাকে।  অর্থাৎ যখন কিছু ধুচ্ছেন তখন রেনওয়াটার নজেল চালান। যখন বাসন মাজবেন তখন নর্মাল মোডে চালান, এইভাবে কাজের ধরন অনুযায়ী বদলে বদলে জলের ব্যবহার করলে অযথা জল নষ্ট হবে না।   

মাপ যখন মাঝারি
মাঝারি রান্নাঘরের ক্ষেত্রে জায়গাটা আর একটু বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে গ্যাস, ইন্ডাকশন কুকার এবং মাইক্রোআভেন রাখার পরেও যদি অতিরিক্ত জায়গা থাকে রান্নাঘরের স্ল্যাবে তাহলে সেখানে একটা ড্রেনিং ইউনিট বানিয়ে নিন। ধোয়া বাসনপত্র থেকে জল ঝরিয়ে নিতে পারবেন অনায়াসে। এক্ষেত্রে মোটামুটি হাতের নাগাল পাওয়া যায় এমন উচ্চতায় ক্যাবিনেট রাখুন। তবে তাতেও দুটো ভাগ করে নিন। উপরের ক্যাবিনেটগুলো প্লেট, বাটি, গ্লাস ইত্যাদি রাখার জন্য বরাদ্দ রাখুন। আর নীচে যে পাল্লাওয়ালা তাক লাগাবেন তাতে রান্নার ভারী বাসন রাখুন।
কাপের ক্ষেত্রে ছোট বড় দু’ধরনের রান্নাঘরেই হুকের ব্যবস্থা করুন। উপরের ক্যাবনেটের তলা থেকে নানা মাপের হুক লাগাবেন। তার থেকে ঝুলিয়ে দেবেন কাপগুলো। এক্ষেত্রে একটা নকশা মেনে চলতে পারেন। কাপের নানারকম রং পরপর সাজান। সেটের কাপ পরপর না রেখে বরং বিভিন্ন সেট মিলিয়ে মিশিয়ে রাখলে সাজে রঙের বৈচিত্র্য আসবে। কাপের রং শুধু নয়, মাপের ক্ষেত্রেও এই বৈচিত্র্য মেনে চলতে পারলে ভালো।  নানা মাপের কাপ, ছোট বড় মিলিয়ে মিশিয়ে রাখবেন।  

বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম
আধুনিক রান্নাঘরে যে ধরনের বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম রাখা দরকার তার মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে মিক্সার গ্রাইন্ডার। আজকাল একই যন্ত্রে নানারকম ব্লেডযুক্ত জার পাওয়া যায়। কমবেশি সব মাপেই বাটা সম্ভব হয় তার সাহায্যে। কেনার সময় দেখে কিনবেন। এছাড়া মাইক্রো আভেন, ওটিজি, এয়ার ফ্রায়ার, মাল্টি কুকার, জুসার, কফি মেশিন, ইলেকট্রিক কেটল, টোস্টার, স্যান্ডউইচ মেকার, ছোট ইলেকট্রিক গ্রিলার ইত্যাদিও রাখবেন রান্নাঘরে। এবং প্রতিটিই যেন প্লাগে লাগানোর ব্যবস্থা থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। মাল্টি কুকার আসলে রা‌ইস কুকারেরই উন্নত সংস্করণ। ভাত ছাড়াও পোলাও, খিচুড়ি, বিরিয়ানি সহ নানাধরনের ভাতের পদ রান্না করা যায়। 
সিঙ্ক সংলগ্ন দেওয়ালে জলশোধক যন্ত্র লাগাতে পারেন। অনেকে আবার বিল্টইন জলশোধক যন্ত্রও ব্যবহার করছেন রান্নাঘরে। সেগুলো সিঙ্কের নীচে ফিট করা থাকে। উপরের দিকে পাইপের মুখটা থাকে, তাই জল নিতে সমস্যা হয় না। 
রান্নাঘর যদি মাঝারি থেকে বড় হয় তাহলে তার মাঝামাঝি একটা ক্যাবিনেট সরিয়ে গ্রিল বা তন্দুর আভেন ঢোকাতে পারেন সেখানে।  যদি ইলেকট্রিকের সাহায্যে এই ধরনের আভেন চালানোর ব্যবস্থা করতে চান তাহলে তার প্লাগটা রান্নাঘরের উপরের অংশে কোনও দেওয়ালে রাখুন। নাহলে চালাতে অসুবিধে হবে। 

টুকটাক সাজগোজ
গরম বাটি বা প্লেট আভেন অথবা ইনডাকশন থেকে বের করতে একটু মোটা কাপড়ের গ্লাভস ব্যবহার করুন। এই ধরনের হাতমোজায় বিভিন্ন রং থাকে। ফুলেল নকশা, চেকস, জ্যামিতিক আকার ইত্যাদি পাবেন। উজ্জ্বল রঙের হাতমোজা রান্নাঘরের একপাশে কোনও হুক থেকে ঝুলিয়ে রাখুন। গরম হাঁড়ি বা কড়া‌ই গ্যাস থেকে স্ল্যাবের উপর না নামিয়ে তা রাখার জন্য ব্যবহার করুন কাউন্টার ম্যাট। এই ম্যাট বাঁশের, বেতের বা কাপড়ের হতে পারে। অনেকে সিলিকন বা ফাইবারের ম্যাটও পছন্দ করেন। সিলিকন, কাপড় বা ফাইবারের ম্যাট হলে তার রং যেন রান্নাঘরের ডেকরের সঙ্গে মানানসই হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। এই ম্যাটগুলো রান্নাঘরের কাউন্টারের একধারে সাজিয়েও রাখতে পারেন।
বাসন মাজার জন্য সাবান রাখার নানারকম সোপ ডিসপেনসার পাওয়া যায়। সেরামিকের নকশা করা ডিসপেনসার সিঙ্কের পাশে রাখতে পারেন। অথবা দেওয়ালে লাগানো সোপ ডিসপেনসারও ব্যবহার করতে পারেন। আধুনিক প্রযুক্তির সিঙ্কে অনেক সময় ইনবিল্ট সোপ ডিসপেনসার থাকে। রান্নাঘরে মোছামুছির জন্য কাপড়ের বদলে টিস্যু রোল ব্যবহার করুন। এই রোল ঝোলানোর জন্য একটা হাতলের ব্যবস্থা রাখুন সিঙ্কের আশপাশে।  

সবুজের ছোঁয়া
রান্নাঘরের জানলার কাছে ইন্ডোর প্লান্ট রাখুন। আর তার গ্রিলে ঝুলিয়ে দিন হ্যাঙ্গিং কিচেন গার্ডেন। সেখানে পার্সলে, ধনে, পুদিনার মতো গাছ রাখুন। ছোট্ট এই  বাগানগুলো রঙিন টব সহযোগে পাওয়া যায় অনলাইন স্টোরে। নিজের চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী কিনুন। ছোট রান্নাঘরের ঝুলন্ত টব থেকে একটা বা দুটো গাছই যথেষ্ট। 
কমলিনী চক্রবর্তী
 
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৩২ টাকা১১১.৮৭ টাকা
ইউরো৯১.২৫ টাকা৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা