শরীর ও স্বাস্থ্য

নির্বাচনী উত্তাপে সামাজিক বন্ধন  অটুট রাখবেন কীভাবে?

নির্বাচনের হাওয়া গরম। সহকর্মী, আত্মীয়স্বজন, পাড়াপড়শিরা নিজেদের হৃদয়, মন, মেজাজ রাঙিয়ে রেখেছেন প্রিয় দলের রঙে। তাহলে এতদিনকার পারস্পরিক সম্পর্ক? সেটাকে টিকিয়ে রাখবেন কীভাবে? পরামর্শ দিলেন বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রঞ্জন ভট্টাচার্য।

রাজনীতি ও মস্তিষ্কের বিজ্ঞান—বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যাগ্র মেদিনী।  সম্পর্ক নষ্ট করতে রাজনীতি আর ধর্মীয় বিভাজন যথেষ্ট। ভোট-আবহে রাজনৈতিক মেরুকরণে পারিবারিক ও বন্ধুবিচ্ছেদের ঘটনার নজির রয়েছে অঢেল। হিংসা, মারামারি এমনকী কোনও কোনও ক্ষেত্রে খুন যার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি!
মানবমস্তিষ্কে অ্যামিগডালা নামক অংশটি আবেগ নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রস্থল। রাজনৈতিক উদ্দীপনা এই অংশটিকে উজ্জীবিত করে। এই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্কের অগ্রভাগে থাকা অ্যান্টিরিয়র সিঙ্গুলেট জাইরাস নামক একটি বৃত্তচাপের মতো দেখতে অংশ। এই জাইরাস অনেকটা ক্লাসের মনিটর বা শপিং মলের সিকিউরিটি গার্ডের মতো নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের ভাবাবেগকে।
কিন্তু রাজনীতির অকথা-কুকথা সমৃদ্ধ বাগবিতণ্ডা যখন সীমালঙ্ঘন করে তখন মনুষ্যজাতির আদিম রিপু যাকে সিগমুন্ড ফ্রয়েড ‘ইড’ বলে বর্ণিত করেছেন তা জাগ্রত হয়। ভেঙে যায় ‘ইগো বাউন্ডারি’।
ভাষাসন্ত্রাস সম্পর্ক ভাঙে—রাজনীতি এখন ক্ষমতার বৃত্তে সম্পূর্ণভাবে আন্দোলিত হয়। গলার শিরা ফুলিয়ে ভাষণ, নিজেদের কর্মীদের উজ্জীবিত করতে সীমাহীন ভাষাসন্ত্রাসের কদর্যরূপ আমরা রোজ প্রত্যক্ষ করি সান্ধ্যকালীন বাগবিতণ্ডায়। প্রতিবেশীর উপরে জন্মায় প্রতিশোধ। শুধুমাত্র সে বিপরীত দলের মতাদর্শে অনুপ্রাণিত বলে তাকে চরিত্রহনন করতেও পিছপা হন না। প্রতিদ্বন্দ্বীরা মা-বাবা, ভাই-বোন, রক্তের সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয় মানুষ। ভুলে যায় তার স্থান, কর্তব্য, দায়িত্ব, চেতনা ও চৈতন্য।  রাষ্ট্রবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, দর্শন, মনোবিজ্ঞান, ইতিহাস, আইন সমস্ত শাখার তত্ত্ব একত্রিত করে বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় এই ক্রোধান্ধ মানসিকতার সুলুক-সন্ধান। ষড়-রিপুর দ্বিতীয় রিপু হলো ক্রোধ। পুরুষ ইগো মূলত চায় ক্ষমতা, প্রতিপত্তি, দম্ভ, আস্ফালন। মহিলারাও এখন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজনৈতিক আঙিনায় অবতীর্ণ। তাই নির্বাচনী প্রচারে চরিত্রহননে কুকথার পাঠ বেড়িয়ে আসে উভয়দিক থেকেই।
শুধুমাত্র আমাদের দেশেই নয়, বাগযুদ্ধে ভাষাসন্ত্রাস ছড়িয়েছে মার্কিনমুলুকে ট্রাম্প-বিডেনের নির্বাচনী বিতর্কের ও প্রচারের সময়। কিন্তু আামাদের দেশে রাজায়-রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। যাঁদের প্রাণ যায়, পরে কেউ তাঁদের আর মনে রাখে না। আবার যে দলের হয়ে সেই সাধারণ মানুষগুলো লড়াই করলো, দলও তাদের বিস্মৃত হয়। আবার যে ব্যক্তির পক্ষে বা বিপক্ষে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হল, সেও দলবদলু হয়ে বিপক্ষে যোগদান করে।
রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে কিন্তু শেষে পড়ে থাকে হতাশা। দুবৃত্তায়নের মিশেল তো অনেক আগেই রাজবীতিকে কলুষিত করেছে যার জন্য শিক্ষিত ভদ্রসমাজের একটি বড় অংশই বিতৃষ্ণায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। যার সুবিধা নিয়েছে দুর্নীতিগ্রস্ত এক শ্রেণীর মানুষেরা। পরাজয় আর কেউ এখন স্বীকার করতে চায় না, আর পরাজিত হয়ে পাঁচ বছর আদর্শ নিয়ে দিন কাটাতে চায় না। মানুষ তার ব্যক্তিস্বার্থে আঘাত আসুক তা যেমন স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে চায় না তেমনি এই চরম সর্বস্ব আত্মপ্রচারের নার্সিসিজমের যুগে পাদপ্রদীপের আলোয় থাকতে যে তিনটি আঙিনায় প্রবেশ করতে চায়, তার একটি বিনোদন জগৎ, দ্বিতীয়টি ক্রীড়াজগত এবং সর্বশেষটি হল রাজনীতির জগৎ। 
এতকিছুর পরও কীভাবে সামাজিক বন্ধন অটুট রাখবেন—
 পরিচিতজনের মধ্যে রাজনৈতিক তর্কবিতর্ক মানেই তা স্নায়বিক উত্তেজনা বাড়ায়। তাই প্রথমেই উত্তেজনা কমানো না গেলে দ্বন্দ্ব ক্রমাগত বাড়তে থাকে। ঊর্ধ্বমুখী সেই ভাবাবেগকে রোধ করতে না পারলে একসময় অবধারিতভাবে তা সম্পর্কের অবনতি ঘটাবে। বাড়বে ক্রোধ, হিংসা! প্রতিহিংসা এমনকী খুনোখুনি ঘটার আশঙ্কাও তখন এড়ানো যাবে না। এক্ষেত্রে অগ্রজ কোনও ব্যক্তি থাকলে তাঁর উচিত দ্বন্দ্ব থামাতে পদক্ষেপ নেওয়া। তবে বয়সে ছোট কারও বোধ উন্নত হলে তিনিও তত্ক্ষণাত্‍ ঝামেলা থামাতে ব্যবস্থা নিতে পারেন। 
 জানবেন, বিতণ্ডার সময় কখন থেমে যাওয়া প্রয়োজন তা বুঝতে পারাও প্রাপ্তমনস্ক হওয়ার পরিচয়।
 
2Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা