সম্পাদকীয়

সেরা ‘পরিষেবা’

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে খুন হয়ে যাওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে গত প্রায় তিন মাস ধরে উত্তাল রাজ্য। সিবিআইয়ের পেশ করা প্রথম চার্জশিটে একজন অভিযুক্তের নাম রয়েছে। ওই তরুণী চিকিৎসককে একজনই খুন ধর্ষণ করেছে, নাকি এই নৃশংস ঘটনার পিছনে একাধিক ব্যক্তি জড়িত সেই প্রশ্নের উত্তর যদিও এখনও অধরাই রয়েছে। কিন্তু এই একটি প্রশ্নেই এখন আর প্রতিবাদ আন্দোলন থেমে নেই। সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবার আড়ালে একাধিক গুরুতর অভিযোগও সামনে চলে এসেছে। এর মধ্যে অনেক অভিযোগের যথার্থতা মেনে নিয়ে রাজ্য সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। আশা করা যায়, নিকট ভবিষ্যতে জুনিয়র ডাক্তারদের তোলা কিছু দাবি সুবিচার পাবে। কিন্তু এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রাম-বামের মতো বিরোধী দল সহ নাগরিক সমাজের নামে স্বার্থান্বেষীদের একটি অংশ যেভাবে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে ‘গেল গেল’ রব তুলেছে, তাকে কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদির কেন্দ্রীয় সরকার। খুব সম্প্রতি তারা তথ্য প্রমাণ সহযোগে জানিয়েছে, সরকারি হাসপাতালের গুণগত মানের বিচারে দেশে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বাংলা। লক্ষণীয় বিষয় হল, এই জাতীয় স্বীকৃতি মেলার কৃতিত্ব মুখ্যমন্ত্রী সব স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন। এতটুকু আত্মতুষ্টি না দেখিয়ে হাসপাতাল-পরিষেবায় যে কোনও অব্যবস্থা সমূলে উৎপাটিত করতে তিনি আলোচনার দরজাও খোলা রেখেছেন। 
এই জাতীয় স্বীকৃতির আওতা থেকে অবশ্য বাদ রাখা হয়েছে দেশের সব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে। মূলত জেলা থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত সব স্তরের হাসপাতালকে এই সমীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। পরিষেবা ব্যবস্থা, অর্থ খরচ, রোগীদের অধিকার, সহায়তা পরিষেবা, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, ক্লিনিকাল কেয়ার, কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট এবং আয়— হাসপাতাল পরিচালনায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে এই আটটি ক্ষেত্র যাচাই করে গুণমানের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। পারফরম্যান্স বিচার করতে রাজ্যগুলিকে নিয়ে একটি প্রতিযোগিতামূলক কর্মসূচি নিয়েছিল কেন্দ্রের জনস্বাস্থ্য কল্যাণ মন্ত্রক। সেই মতো রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে বিভিন্ন পরিষেবার গুণমান যাচাই করে দেখতে কয়েকমাস আগে রাজ্যে বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে গ্রামীণ, মহকুমা ও জেলা স্তরের হাসপাতাল পরিদর্শন করে তাঁরা পরিষেবার মান খতিয়ে দেখেন। সব রাজ্যেই এই পদ্ধতিতে সমীক্ষা চালানো হয়। তার ভিত্তিতে দেওয়া হয় শংসাপত্র। কেন্দ্রের এই শংসাপত্রের পোশাকি নাম ন্যাশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স স্টান্ডার্ডস বা এনকিউএএস। দেখা যাচ্ছে, গুণমানের বিচারে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পরিষেবা কেন্দ্র হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে তালিকায় শীর্ষে। অধিকাংশ বিজেপি শাসিত রাজ্যের মতো প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্য গুজরাতও পিছিয়ে রয়েছে অনেকটাই। 
এনকিউএএসের বিচার অনুযায়ী, এ রাজ্যে জেলাস্তর থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র পর্যন্ত মোট ১২,৮৫৯টি পরিষেবা কেন্দ্রে গুণমান বিচারের পরীক্ষা চালান বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে ৩০৩৯টি কেন্দ্র শংসাপত্র লাভ করে, শতকরা হারে যা ২৩.৬ শতাংশ। বাংলার পরেই রয়েছে দক্ষিণের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ। তাদের স্বীকৃত কেন্দ্রের সংখ্যা ২১৭২টি, তালিকায় তৃতীয় মধ্যপ্রদেশ। সেখানে স্বীকৃতি পেয়েছে ১৯৫২টি কেন্দ্র। তার পরেই রয়েছে গুজরাত, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক ও ওড়িশা। এই সাফল্যের কারণ হিসেবে মমতা সরকারের দাবি, রাজ্যে নতুন স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন, আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা, প্রাথমিক স্তরে ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া নিশ্চিত করা হয়েছে গত তেরো বছরে। প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নের উপর বিশেষভাবে মনোনিবেশ করেন। বলাবাহুল্য, এই সরকারের পরবর্তী লক্ষ্য হল, যেসব স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র এখনও নির্ণায়ক মান ছুঁতে পারেনি বা পিছিয়ে রয়েছে তাদের পরিকাঠামো আরও উন্নত করা। সেই লক্ষ্যে এগনোর পথে কেন্দ্রের এই স্বীকৃতি নিঃসন্দেহে উৎসাহ জোগাবে। সেইসঙ্গে এও বলতে হয়, এ রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে যাঁরা ‘গেল গেল’ রব তুলছেন, এরপর থেকে বাংলার স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে সমালোচনা করার আগে অন্তত দু’বার ভাবতে হবে তাঁদের, বিশেষত বিরোধীদের। 
8h 8m ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

শরিকি সম্পত্তি মামলায় ফল অনুকূল হতে পারে। উচ্চশিক্ষা ও বিজ্ঞান গবেষণায় উন্নতির যোগ। অর্থাগম হবে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৩ টাকা৮৪.৯৭ টাকা
পাউন্ড১০৭.৮৭ টাকা১১১.৬৫ টাকা
ইউরো৮৯.৬৮ টাকা৯৩.০৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা