সম্পাদকীয়

সবার আত্মরক্ষার দাবি

২০২৪-২৫ সালের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ৯০,৯৮৮ কোটি টাকা। এক দশকে বাজেট বরাদ্দের অঙ্ক ১৬৪ শতাংশ বেড়েছে জানিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী দেশবাসীর হাততালি কুড়োবার কৌশল নিলেও সচেতন মানুষ তাঁর ডাকে সাড়া দিতে পারেননি। কেননা, মোট বাজেটের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের শতাংশ হার মাত্রই ১.৮৫! স্বাস্থ্য খাতে মোদি সরকার বছরে মাথাপিছু খরচ ধরেছে মাত্র ৬৩৮ টাকা। অন্যদিকে, জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির দাবি, ঘাটতি মেটাতে রাজ্যগুলির মোট বাজেটের অন্তত ৮ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে খরচ করা উচিত। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে দেখা গিয়েছে, রাজ্যগুলির তরফে ওই বাবদ ব্যয় করা হয়েছে গড়ে ৬.২ শতাংশ। এমনকী, এই ব্যাপারে পাঞ্জাব (৪.২ শতাংশ), মহারাষ্ট্র (৪.৬ শতাংশ), কর্ণাটক (৪.৯ শতাংশ) ও তেলেঙ্গানার (৫ শতাংশ) মতো প্রথম সারির রাজ্যগুলির খরচের বহর ছিল গড়পড়তার নীচেই। এই পুরো হিসেবটাই আদর্শ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে। কিন্তু ভুক্তভোগী মাত্রই অনুমান করতে পারেন বৈষম্যমূলক নীতি, স্বজনপোষণ ও রকমারি দুর্নীতির কারণে সরকারি বরাদ্দের কতটুকু নাগরিক পর্যন্ত বাস্তবে পৌঁছয়। আমরা এও জানি, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ভারতে অর্থ বরাদ্দের ছবিটাকে উন্নত দেশগুলির পাশে কোনোভাবেই রাখা যায় না। এমনকী ছবিটা বহু মধ্য এবং নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের পাশেও করুণ দেখায়। 
সব মিলিয়ে ভারতবাসীর জন্য মোদি সরকারের স্বাস্থ্যচিন্তাকে ফাঁকা বুলির উপরে স্থান দেওয়া যাচ্ছে না। এহেন ভারতে নাগরিকের সামনে খোলা দুটিমাত্র রাস্তা—(এক) ভগবানের ভরসায় হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকো, অথবা (দুই) গাঁঁটের কড়ি খরচা করেই চিকিৎসা করো। কিন্তু অত রেস্ত আর ক’জনের আছে? ভরসা কোনও স্বাস্থ্যবিমার পলিসি কিনে রাখা। অর্থাৎ নিজের ম্যাও নিজেই সামলাও। মোদি সরকার অন্তত কিছু করবে না। কিন্তু এই অমানবিক পলিসির কথা দুনিয়া জুড়ে প্রচার হলে যে ‘বিশ্বগুরু’র মুখ মান যায়! তাই দেশের সমস্ত মানুষকেই বিমার আওতায় আনার কথা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে কেন্দ্র। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সেই বিমাতেই সাধারণ মানুষকে ভয়ানক উঁচু হারে (১৮ শতাংশ) কর গুনতে হলে সরকারের লক্ষ্যপূরণ সম্ভব কীভাবে? শেষপর্যন্ত এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ চেয়েছে সরকার। এজন্য গতমাসে তৈরি করা হয়েছে ১৩ সদস্যের মন্ত্রিগোষ্ঠী। তারাই সুপারিশ তৈরি করে দেয় জিএসটি পরিষদকে। শনিবার নয়াদিল্লিতে বসে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক। বিভিন্ন বিমার প্রিমিয়ামে জিএসটি হারের অন্তত চারটি সম্ভাবনা নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে জীবন বিমার টার্ম পলিসির প্রিমিয়ামে জিএসটি শূন্যে নামবে। প্রবীণ নাগরিকদের স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়ামও হতে পারে করমুক্ত। বাকিদের স্বাস্থ্যবিমা করমুক্ত হতে পারে ৫ লক্ষ টাকা বিমামূল্য (কভারেজ) পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে ৫ লক্ষ টাকার বেশি বিমামূল্যে জিএসটি ১৮ শতাংশই বহাল থাকবে। এই প্রস্তাব কার্যকর হলে রাজস্বের উপরে তার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। ধরে নেওয়া হচ্ছে যে, এতে বার্ষিক রাজস্ব আদায় কমতে পারে ২০০ কোটি টাকার মতো। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী হলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিগোষ্ঠীর আহ্বায়ক। বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রত্যেক সদস্য সাধারণ মানুষের সুরাহা চান, বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিকদের। আমরা জিএসটি পরিষদের কাছে রিপোর্ট জমা দেব, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তারাই নেবে।’
প্রসঙ্গত, বিমা থেকে জিএসটি তুলে দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সরব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। লোকসভা ভোটের পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠিও দেন। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিষয়টি সংসদেও উত্থাপন করা হয়। তা 
সমর্থন করে সমস্ত বিরোধী দল বা ‘ইন্ডিয়া’ জোট। এমনকী এই জনস্বার্থবাহী ইস্যুতে বর্ষীয়ান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গাদকারিও চিঠি লেখেন নির্মলাকে। শনিবার মমতা এক্স-এ পোস্ট করেন নির্মলাকে লেখা তাঁর চিঠির ছবি। মুখ্যমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে এক্স-এ লিখেছেন, ‘আমাদের 
দীর্ঘ প্রচেষ্টা সফল হতে চলেছে। কেন্দ্রের উপরে চাপবৃদ্ধির ফলে তারা বিমায় ১৮ শতাংশ জিএসটি প্রত্যাহার বা হ্রাসের দাবি মানতে চলেছে। ... এর সঙ্গে কেন্দ্রের সদিচ্ছার কোনও সম্পর্ক নেই। তবে মন্ত্রিগোষ্ঠীর সুপারিশগুলি তাৎপর্যপূর্ণ।’ মমতার অত্যন্ত মানবিক দাবিতে সিলমোহর পড়লই যখন সমস্ত ধরনের জীবন বিমা ও স্বাস্থ্যবিমা সম্পূর্ণ করমুক্ত করে দেওয়া উচিত। না-হলে শুধুমাত্র চড়া করের (জিএসটি) ভয়ে বেশিরভাগ মানুষ এসব পলিসি ক্রয় থেকে বিরতই থেকে যাবেন। বিমার মূল উদ্দেশ্য দুঃসময়ে সুরাহা। সেই সুরাহা সরকার যখন দেবেই না, তখন মানুষকে আত্মরক্ষার সুযোগটা দিক, তাদের হাত-পা বেঁধে ঠেঙানো অন্তত বন্ধ হোক।
1d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

শরিকি সম্পত্তি মামলায় ফল অনুকূল হতে পারে। উচ্চশিক্ষা ও বিজ্ঞান গবেষণায় উন্নতির যোগ। অর্থাগম হবে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৩ টাকা৮৪.৯৭ টাকা
পাউন্ড১০৭.৮৭ টাকা১১১.৬৫ টাকা
ইউরো৮৯.৬৮ টাকা৯৩.০৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা