উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
রেবা বাঙালি মেয়েদের খুব কমন নাম। অথচ ইনি উচ্চারণ করছেন রিভা! ব্যাপারখানা কী? একটু চেপে ধরতেই পরিষ্কার হল রহস্যটা। আসলে এক জ্যোতিষীর পরামর্শে নিউমারোলজি অনুসারে নিজের নামের বানান পরিবর্তন করেছেন তিনি। এটা তাঁর ডেব্যু ধারাবাহিক। মায়ের জন্যই অভিনয় জগতে আসা। রিভার মা চাইতেন যে মেয়ে একদিন সিরিয়ালে অভিনয় করবে। অনেকটা মায়ের স্বপ্ন সফল করতেই কলকাতা থেকে মুম্বই আসা মেয়ের। কিন্তু সবটা এত সহজে হয়নি। মুম্বই এসে টুকটাক মডেলিং করলেও ছবিতে কিছুতেই সুযোগ পাচ্ছিলেন না। ক্রমেই হতাশা গ্রাস করছিল তাঁকে। এই বছরের শুরুটাও হয় খুবই খারাপভাবে। জানুয়ারি মাসে রিভার জীবনের সবথেকে বড় সমর্থক মায়ের মৃত্যু হয়। প্রথমে ভেঙে পড়লেও পরে ছবিতে অভিনয়ের আশা ছেড়ে মায়ের কথামতো ধারাবাহিকে নিজের ভাগ্য পরীক্ষায় নামেন। আর শেষমেষ এখানেই তাঁর ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে। রিভা বলছেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম এই বছরটা বুঝি সবথেকে খারাপ বছর হবে। ছোটবেলায় আমি জি উচ্চারণ করতে পারতাম না। আর ভাগ্যের কী পরিহাস দেখুন, এখন সেই চ্যানেলেই আমি লিড চরিত্র করছি’।
কলকাতায় পার্থসারথী ভট্টাচার্যের কাছে অ্যাক্টিং ওয়ার্কশপ করেছেন রিভা। গত চার বছর ধরে মুম্বইতে রয়েছেন। মুম্বইতে এসে অতুল মোঙ্গিয়ার অভিনয়ের ওয়ার্কশপে নিয়মিত যাচ্ছেন। এখানে এসে প্রথমে তার বেশ অসুবিধাও হতো। রিভার কথায়,‘আমাকে সকলেই বলত তুই গান গেয়ে গেয়ে কথা বলিস। বাংলার টানটা ছিল। তারপর নিয়মিত ডিকশন ক্লাস করতাম। আর এখন হিন্দিতে সড়গড় হতে গিয়ে বাংলায় কথা বলা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছি।’ অভিনয়ের জন্য এই ধারাবাহিকের পরিচালকের কাছেও কৃতজ্ঞ রিভা। পড়াশোনা আর্যকন্যায়। হেদুয়াতে নিয়মিত সাঁতার কাটতেন। অভিনয় তাঁর প্যাশন। মা চাইলেও সিরিয়াল করতে তাঁর মন সায় দিত না। ‘কিন্তু ছবিতে যখন হচ্ছে না, তখন ধারাবাহিকে অভিনয় করতে অসুবিধা কোথায়। আর এ তো সর্বভারতীয় চ্যানেল’, সাফ স্বীকারোক্তি রিভার।
‘হামারি বহু সিল্ক’-এর নাতাশা চরিত্রটা বাঙালি। নাতাশা মিত্র। তাই মাঝে মাঝে বাংলা কথাও তাঁর মুখে শোনা যাবে। ‘লোকে কী বলবে’ এটা ভাবতে ভাবতেই অনেক মহিলা পেশা নির্বাচন করতে ভয় পান। একটু অন্যরকম পেশা হলেই পুরুষশাসিত সমাজ তাদের ‘চরিত্র’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। রিভার প্রশ্ন,‘কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল সেটা কে ঠিক করে দেবে? কে-ই বা ঠিক করে দেবে কোন কেরিয়ার অপশনটা বাছা উচিত? এই ধারাবাহিক সেই প্রশ্নগুলোই তুলছে। আর আমার সঙ্গে পাখির একটা অম্লমধুর সম্পর্কও এই ধারাবাহিকের আকর্ষণ।’ এই ধারাবাহিকের আর এক চরিত্র নকস পারেখ (জান খান)। জান, রিভা আর পাখির ভূমিকাভিনেত্রী চাহত পাণ্ডের মধ্যে কোনও ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্ক থাকবে কিনা সেটা অবশ্য এখনই খোলসা করতে চাইলেন না কেউ। তবে মুম্বইতে থাকতে হচ্ছে বলে কলকাতার খাবারকে খুব মিস করেন রিভা। ‘কলেজ স্ট্রিটে বাড়ির বাইরে বেরলেই যা ফুচকা খেতাম, সেরকম টেস্টি ফুচকা এখানে পাচ্ছি না। যাই বলুন বাংলার খাবারের সঙ্গে কারও তুলনা হয় না’, সরল স্বীকারোক্তি মুম্বইতে ভাগ্যান্বেষণে যাওয়া বাঙালি অভিনেত্রীর। আর সিরিয়ালে এখন যতই অভিনয় করুন তাঁর আসল লক্ষ্য যে হিন্দি ছবিতে অভিনয় সেটা জানাতেও ভুললেন না। তবে আপাতত মন দিয়ে অভিনয় করছেন আর বাংলার মানুষ কীভাবে তাঁকে গ্রহণ করেন সেটা জানার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন রিভা। নিজের শহরের মানুষের আশীর্বাদ চাইতে আজ ধারাবাহিকের প্রচারে শহরে উপস্থিত থাকবেন তিনি।