পরিবারের সদস্যদের পারস্পরিক মতান্তর, কলহে মনে হতাশা। কাজকর্ম ভালো হবে। আয় বাড়বে। ... বিশদ
‘আকাশ চুম্বন’-এ মাত্র দু’জন অভিনেতার মধ্যেমে সমাজের চিরায়ত অবক্ষয়, মূল্যবোধের ফোঁপরা দিক, স্বপ্নের পিছনে ধাওয়া করা মধ্যবিত্তের সমাজে আর একটু উঠে আসার আপস— সমাজের মুখে আয়না ধরে। গল্পের দুই চরিত্র, স্বামী ও স্ত্রী। স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অরিন্দম (কাঞ্চন), স্ত্রীর ভূমিকায় তিতাস। দু’জনেই স্বপ্ন দেখে শহরের সম্ভ্রান্ত এলাকায় বহুতল থাকবে তাদের। কিন্তু ছাত্র পড়িয়ে এই উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে ছোঁয়া যায় না। গল্প এগলে দেখা যায়, কোনও এক পরিকল্পনায় তারা পেয়ে যায় সাধ্যাতীত দামের একটি ফ্ল্যাট। গোল বাঁধে গৃহপ্রবেশের রাতে। জানা যায়, ছেলের রেজাল্টে খুশি হয়ে ছেলের শিক্ষককে মোটা টাকা ধার দিয়েছে এক ব্যবসায়ী। সেই টাকাতেই কেনা হয়েছে ফ্ল্যাট। তবে অতিথি-আত্মীয়দের কাছে চলে গেলে একটি ফুলের তোড়া আসে অনাহূত অনামী এক অতিথির তরফে। তোড়াটি স্ত্রীর নামে অসেছে। মুহূর্তে বদলে যায় বেডরুমের পরিবেশ। স্ত্রীকে এত রাতে সকলের অলক্ষ্যে কে ফুল পাঠাল নিয়ে সন্দেহ ঘনীভূত হয়। ধীরে ধীরে মোড়ক খোলে গল্পের। নাটকের শেষভাগে নানা টানাপোড়েন পেরিয়ে জানা যায় স্বামী, স্ত্রী দু’জনেই আপসের পথে হেঁটেছে। অভিনয়ের দিক থেকে নাটকটির উপর সুবিচারই করেছেন পরিচালক তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায় ঠাকুর। তবে আলোকসম্পাতের সময়জ্ঞান নিয়ে আর একটু যত্নশীল হলে দর্শকদের কাছে এই উপস্থাপনা আরও নিখুঁত হয়ে উঠত। বাদল দাসের মঞ্চ পরিকল্পনা, শুভজিৎ দাসের আবহ মানানসই।
পরের ঘণ্টায় ছিল হাল্কা স্বাদের জমাটি নাটক ‘প্রেত পিরীতি’। নামেই মালুম, ভূতপ্রেত নিয়েই এই নাটকে কারবার। দলের ইয়ং ব্রিগেড এই নাটকটিতে অংশ নিয়েছিল। পরশুরামের গল্প ‘ভূশন্ডীর মাঠে’ অবলম্বনে তৈরি এই নাটকের গল্প অনেকেরই জানা। স্ত্রী নেত্যকালীকে মারতে গিয়ে শিবু ভট্টাচার্যই মারা গেল। সোজা চলে এল ভুশন্ডীর মাঠে। ব্রাহ্মণ হওয়ার সুবাদে শিবু থানা গাড়ল বেল গাছে। সেখানেই সে দেখা পেল হরেক কিসিমের ভূতের। তারা অনেকেই শিবুকে পছন্দ করে, বিয়ে করতে চায়। এদিকে শিবুর মন হু হু করে নেত্যর জন্যই। নান্দীরঙ্গ এই গল্প বেছেছে সম্ভবত তাদের দলে একঝাঁক তরুণ সদস্য থাকায়। তাঁরা এই নাটকের মর্যাদা দিয়েছেন। সম্রাট, শিলাদিত্য, আর্যব, অথৈ, রীতাম্ভরা, মৌ ও সোমা— নিজ নিজ ভূমিকায় নজর কেড়েছেন। তবে এই নাটকেও টাইমিং ও আলো নিয়ে আরও কিছুটা ভাবনাচিন্তা করলে ভালো হয়। নাটকটির ভাবনা ও পরিচালনায় ছিলেন বিপ্লাণু মৈত্র। মঞ্চ নির্মাণ ও পোশাক পরিকল্পনাও বেশ উচ্চমানের। এই নাটকে আলাদা করে ভালো লাগবে তালবাদ্য। সঙ্গীতে সুবীর সান্যাল ও তালবাদ্যে অজয় সরকার এই ভৌতিক নাটকের উপযুক্ত আবহ তৈরি করেছেন মঞ্চে।