পরিবারের সদস্যদের পারস্পরিক মতান্তর, কলহে মনে হতাশা। কাজকর্ম ভালো হবে। আয় বাড়বে। ... বিশদ
গঙ্গার স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হওয়ার বিরুদ্ধে, প্রথম দিন থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা আন্দোলন করছেন। ‘ফরাক্কা ব্যারেজ যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল তা সফল হল কি না এবার দেখা হোক। চুক্তিমতো কলকাতা ও বাংলাদেশকে যে পরিমাণ জল দেওয়ার কথা তা কি আদৌ দেওয়া হচ্ছে?’—প্রশ্ন তুলেছেন গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ অ্যাকশন নাগরিক কমিটির মুখপাত্র তরিকুল ইসলাম। তাঁর মতে, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া এই ফারাক্কা ব্যারেজের আর কোনও উপকার দেখতে পাইনি। প্রতিবছর একটু একটু করে গঙ্গা ভাঙছে। বিঘের পর বিঘে জমি-বাড়ি খুইয়ে সর্বহারা হচ্ছেন এলাকার মানুষ। তরিকুলবাবু বলছিলেন, ‘কোনও সরকার জমি-বাড়ির ক্ষতিপূরণ দিতে পারল না। ২৪০ বর্গ মিটার কিলোমিটার জমি ডুবে গিয়েছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর বেশি ভাঙন হয়।’ যদিও গঙ্গার বন্যাকে ভয় পান না তরিকুলরা। উনি বলছেন, ‘বন্যাকে আমরা ভয় পাই না। এতে জমি-ফসল ভালো হয়। কিন্তু যেন ভাঙন না হয়। ফরাক্কা ব্যারেজ চাইছি না, ব্রিজ চাইছি। এখন ব্যারেজ হয়ে গিয়েছে, কিছু করার নেই। স্থায়ীভাবে গঙ্গা ভাঙন রোধ করতে হবে।’
সেখানকার মানুষদের পরিবর্তিত জীবনযাপনের কথা লিখেছেন নদী বিশেষজ্ঞ জয়া মিত্র। জয়াদেবী বলছিলেন, ‘মুর্শিদাবাদ-মালদহ এলাকার লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ-জমি হারিয়ে কোথায় চলে গিয়েছেন কোনও হদিশ নেই। একসময় আম-ডাল-শঙ্খের জন্য বিখ্যাত ছিল। এখন ওখানকার মানুষের একমাত্র কাজ বিড়ি বাঁধা। কারণ, পুরনো জায়গা-জমি সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আমি বলব, এসবরে অন্যতম কারণ ফারাক্কা ব্রিজ।’ মালদহ-মুর্শিদাবাদের মানচিত্র বদলে দিয়েছে। গঙ্গা প্রায় দু’হাজার কিলোমিটার এসে মুর্শিদাবাদে বাধা পাচ্ছে। ফরে অনেক পলি নিয়ে আসছে। মাঝখানে চড়া পড়ে যাচ্ছে। ৫০ বছরে ক্ষতি যা হওয়ার তো হয়েইছে, বিকল্প কী হতে পারে? জয়াদেবীর মতে, ‘জল যাতে দু’পাশ থেকে মাটি নিয়ে ব্যারেজের পিছনে না নিয়ে যেতে পারে, সেটা দেখতে হবে। জলাশয় তৈরি করে বৃষ্টির জল মাটির উপর আটকাতে হবে। এটা প্রধান উপায়। দু’পাশে ঝোপঝাড়-বাঁশবন তৈরি করতে হবে।’ অন্যদিকে, বাংলাকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গার জল চুক্তির নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রবল ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস। রবিবার দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘আসলে বাংলাকে বিক্রি করে দিতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদি। বাংলাকে অন্ধকারে রেখে ফের গঙ্গা চুক্তি করা হচ্ছে। আগের চুক্তির টাকা এখনও মেটানো হয়নি। গঙ্গায় ড্রেজিংয়ের কাজ বন্ধ। তার ফলে প্রায় ফি বছর বন্যার কবলে পড়তে হচ্ছে বাংলাকে। তাই এর বিরুদ্ধে আমরা সংসদে সরব হবই।’ - ফাইল চিত্র