পরিবারের সদস্যদের পারস্পরিক মতান্তর, কলহে মনে হতাশা। কাজকর্ম ভালো হবে। আয় বাড়বে। ... বিশদ
কর্পোরেট পেশাদার হেমের দুই ছেলের কাছে বসার সময় নেই। তাদের ভুলিয়ে রাখার জন্য কেরিয়ার সর্বস্ব মা ছেলেদের হাতে অত্যাধুনিক মোবাইল ধরিয়ে দেয়। ধীরে ধীরে ভার্চুয়াল জগতের বাসিন্দা হয়ে বাস্তব থেকে বিচ্ছন্ন হয়ে যেতে থাকে তারা। গল্পের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বাসবদত্তার স্বগতোক্তি, ‘আমাকে অন্যান্য জায়গায় যেমন স্নেহময়ী মা হিসেবে দেখা যায়, এখানে আমি বাচ্চাকে সময় দিতে না পারা এক মা।’
অনেক অভিনেত্রী সন্তান লালনের জন্য শিল্প জীবন থেকে সাময়িক স্বেচ্ছাবসর নেন। বাসবদত্তা নেননি। তাঁর যুক্তি, ‘আমি যখন ইলেভেনে পড়ি তখন থেকে কাজ করছি। অনেক ছোট থেকে কাজ শুরু করেছিলাম। কাজের অভ্যাসটা অস্তিত্বে মিশে গিয়েছে। দীর্ঘদিন বাড়িতে বসে থাকলে একটা একঘেয়েমি চলে আসবে। সেই একঘেয়েমির প্রভাবটা আমার বাচ্চার উপর পড়বে। বাচ্চার যতরকম কর্তব্য, দায়িত্ব আমি সব পালন করব। পাশাপাশি নিজের জন্যও সময় দরকার। কাজের ক্ষেত্রটা সেই অক্সিজেনটা আমাকে দেয়।’
বাস্তবে মেয়েকে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ভেসে যেতে দেবেন না বাসবদত্তা। ‘মোবাইলে ওর নিজের ছবি ছাড়া আর কিছু দেখতে শেখেনি মেয়ে। শেখাইনি। শেখাবোও না। তার জন্য মেয়ের সামনে আমি নিজে মোবাইল কম ব্যবহার করি’, দৃঢ় গলা মা বাসবদত্তার। ইতিমধ্যেই চারা গাছ রোপণ করতে শিখে গিয়েছে ছোট্ট আদিয়া। কাদামাটি মাখা মেয়ের খুনসুটি দেখেই নিজের ধুলোমাখা শৈশবের কথা মনে পড়ে যায় মায়ের। বলেন, ‘আমরা পুতুলের বিয়ে দিয়েছি। তখন মোবাইল ছিল প্রয়োজনীয়তা। এখন ফ্যাশন। ছবিতে এই দিকটাকেই তুলে ধরা হয়েছে। মোবাইলে অ্যাপের সাহায্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বাচ্চারা নিজস্ব খেলা ঘর তৈরি করছে। সেই ঘরে তাদের বাবা-মায়েদের প্রবেশাধিকার নেই। এর চেয়ে আশঙ্কাজনক আর কিছু হতে পারে না। আমার অনুরোধ বাচ্চাদের সময় দিন। নিজে মোবাইল কম ব্যবহার করুন। সন্তানদের ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ঠেলে না দিয়ে, তাদের কল্পনার জগতে নিজে শামিল হোন। দেখবেন, সবাই ভালো থাকবেন।’
ছবি: দীপেশ মুখোপাধ্যায়