ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
ছবিতে ইন্দ্র চক্রবর্তী (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়) এতদিন যা ‘কোল্যাটার্যাল ড্যামেজ’ হিসেবে দেখে এসেছিল, তা কি সত্যিই ‘কোল্যাটার্যাল ড্যামেজ’ নাকি সমান্তরাল চলতে থাকা একটা ঠান্ডা মাথার অপরাধ? জীবনের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বোধ হয় সবই গুলিয়ে যায়। ফ্রেডরিশ ডুরেনম্যাটের ‘আ ডেঞ্জারাস গেম’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এই ছবির গল্প। গোটা পৃথিবী জুড়ে এই গল্প নিয়ে অজস্র ছবি হয়েছে। কমলেশ্বর এই গল্পকে মানবিক মোড়কে তুলে ধরেছেন।
একটি স্পঞ্জ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির উচ্চপদে চাকরি করে ইন্দ্র। বিদেশে থাকে। পুজোর ছুটিতে পরিবার নিয়ে কলকাতায় এসেছে। হঠাত্ই যুক্তরাজ্য থেকে কোর্টের চিঠি আসে। বেরিয়ে পড়তে হয় তাকে। বিমানবন্দরে নেমেই নিজে গাড়ি চালিয়ে গন্তব্যে পৌঁছনোর পথে শুরু হয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ফোনে নেটওয়ার্ক নেই। এরই মধ্যে দুর্ঘটনায় পড়ে গাড়িটি। হাতে চোট নিয়ে সামনে একটি বাংলোতে প্রবেশ করে সে। সে এক অদ্ভুত বাংলো। দরজা খোলা, চারপাশে কিম্ভুত আকৃতির স্থাপত্য। সেখানে একটি বাঙালি পরিবার থাকে। এখানে গোটা বিষয়টা কাকতালীয় লাগে। এই পরিবারের সকলে কোনও না কোনওভাবে আইন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত। ইন্দ্রকে নিয়ে তারা একটা খেলা শুরু করে। আদালত আদালত খেলা। বাড়ির কর্তার চরিত্রে জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, তার স্ত্রীর চরিত্রে চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়। তাদের এক ছেলে ঋদ্ধি সেন ও মেয়ে প্রিয়াঙ্কা সরকার। বিচারকের আসনে চূর্ণী, টাইপ মেশিনে জয়দীপ, উকিলের চরিত্রে ঋদ্ধি আর ডিফেন্স কাউন্সিল প্রিয়াঙ্কা। অর্থাত্ নেই শুধু অপরাধী। কাজেই কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয় ইন্দ্রকে। কিন্তু ইন্দ্রর কথায় সে তো কোনও অপরাধই করেনি। প্রশ্নের মারপ্যাঁচে বেরিয়ে আসে কোনও মতে গ্র্যাজুয়েট হওয়া ইন্দ্রের অতীতের কাহিনি। অতীত নিঙড়ে পুরনো ক্ষত যেন বেরিয়ে আসতে থাকে।
সাত বছর যুক্তরাজ্যের মতো জায়গায় থেকে ইন্দ্রের চরিত্রে কোনও সাহেবিয়ানা নেই। এদিকে সে কিন্তু বিদেশের রাস্তায় দিব্য বিলাসবহুল গাড়ি চালায়। কোম্পানিতে তার বসের চরিত্রে রয়েছেন কমলেশ্বর। এই বসের চরিত্রের মধ্যেও নেই কোনও সাহেবিয়ানা। ছবির তারা নিজেদের মধ্যে পেশাদার জগতেও গড়গড়িয়ে বাংলা বলে। তাদের আদব-কায়দাও শুধু ভারতীয়দের মতো নয়, একেবারে বাঙালিদের মতো। এই বিষয়টাই অদ্ভুত লেগেছে। আর ঋদ্ধির অভিনয় দেখে মনে হচ্ছিল, তিনি যেন মঞ্চে রয়েছেন। শাশ্বত, চূর্ণী, প্রিয়াঙ্কা ও জয়দীপ বেশ ভালো। পায়েল সরকারের অভিনয় মন্দ নয়। অনুপম রায়ের গানও ভালো। পরিচালকের অন্যান্য ছবির তুলনায় এই ছবির সংলাপ বেশ চটকদার। একেবারে আর পাঁচটা গতে বাঁধা থ্রিলার থেকে বেরিয়ে এসে মানবিক গল্প বলার প্রয়াস করেছেন তিনি। তার জন্য অবশ্যই কমলেশ্বরের বাহবা প্রাপ্য।