ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
মাঝ পুকুরে দুটো টিনের ড্রাম ভাসিয়ে, তাতে কাঠের পাটাতন ফেলে তার ওপর ক্যামেরা দাঁড় করিয়ে মিড-লং শটে গোটা ক্যানভাস (শিল্প নির্দেশক প্রসেনজিৎ হালদার) সহ দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করলেন চিত্রগ্রাহক সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ডাঙায়, বেড়ার বাইরে পুকুরের ধারে দলবল নিয়ে মনিটরের সামনে বসে ‘কাট’ বলে উঠলেন সায়নদীপ।
রামানুজ আসলে মুসলিম বহুরূপীর সন্তান। বাবা হিন্দু দেব-দেবী সেজে উপার্জন করত। আচমকা একদিন সে খুন হয় রাজনৈতিক কারণে। পিতৃহীন শিশুকে কোলে তুলে নেয় গোবিন্দ। সে বাউল। ভিন্ন পরিবেশ ও সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠতে লাগল রামানুজ। সাহসী, সৎ, শিক্ষিত যুবক গানেই খুঁজে পেল আনন্দ। একদিন পেয়ে গেল পরমাকেও। জমিদারের মেয়ে। বাবার আদর্শ বিরোধী, স্বাধীনচেতা। পরমাও মজে গেল রামানুজের সুরে, স্বভাবে। অথচ ভাষাহীন থেকে যায় ওদের এই ভালোবাসা। পিতার মৃত্যুর পঁচিশ বছর পর আবার এক ভয়ঙ্কর বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছে রামানুজ। কে সে? কী তার আসল পরিচয়?কার কী জাত, কী পেশা, কীসের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে পরিচয়? এসবের ঊর্ধ্বে উঠে ছবিতে মনুষ্যত্বের মন্তাজ ধরতে চাইছেন মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জেরই ছেলে সায়নদীপ। শটের ফাঁকে উঠোনে দাঁড়িয়ে পরিচালক বললেন, ‘সব কিছু দিয়ে সবাইকে বেঁধে রাখতে নেই। কিছু জিনিস ছেড়েও রাখতে হয়। বাউল, বহুরূপীদের মতো আপনভোলা মানুষদের খাঁচায় পুরো না। ছেড়ে দাও। জাতের, পেশার, প্রবৃত্তির প্যাঁচে ফেলে ব্যবহার করতে নেই ওঁদের।’‘হীরালাল’ ও আসন্ন মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বিনয় বাদল দীনেশ’ ছবিতে বিনয়ের মতো ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয়ের পর এবার বাউলের চরিত্রে অভিনয় করছেন কিঞ্জল নন্দ। পূর্ব মেদিনীপুরের ছেলে কিঞ্জলের গ্রাম্য চলন-বলনে অসুবিধে না হলেও বাউল সম্প্রদায়ের সামাজিকতা, সৌজন্য, জীবনদর্শন মন দিয়ে রপ্ত করতে হয়েছে। ‘জগতে সত্যি বলে যদি কিছু হয় তা হল প্রেম। মানুষে মানুষে ভালোবাসা। এই চরিত্রটা আমি উপভোগ করছি,’ বললেন তিনি।
পূজারিনী ঘোষ এই ছবির পরমা। বললেন, ‘ছবিতে দুটো সময়কে ধরা হয়েছে। একটা গত শতাব্দীর আশির দশক ও এই শতাব্দীর দু’হাজার তিন-চার সাল। এই দুই সময়ের সেতু হচ্ছে পরমা। এই চরিত্রের মনের ক্ষত ঢেকে রেখে মুখের স্বাভাবিকতা প্রকাশের চ্যালেঞ্জটা আমার কাছে নতুন।’ অন্যান্য ভূমিকায় আছেন দেবদূত ঘোষ, দীপক হালদার, অমিত সাহা, রাহুলদেব ঘোষ প্রমুখ। মোট সাতটি গান রয়েছে ‘আসমানি ভোর’ ছবিতে। লিখেছেন শুভদীপ মজুমদার, প্রিয়াঙ্ক দাস, গম্ভীরা ভট্টাচার্য ও সায়নদীপ নিজে। সবই লোকসঙ্গীত। সুর দিয়েছেন শুভদীপ ও প্রিয়াঙ্ক। নিবেদনে সিনে মাইন্ড ফিল্ম স্টুডিও। ছবিটি তৈরির পর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পাঠিয়ে পেশাদার জীবনে নতুন সকাল আনতে চান পরিচালক।