ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
আট বছর কোমায় থাকার পর স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে পরিবারে ফিরছে বব (অভিষেক)। স্ত্রী (চিত্রাঙ্গদা সিং) বা সন্তানরা আজ তার কাছে অচেনা। মুছে গিয়েছে অপরাধের স্মৃতিগুলোও। কিন্তু ওই যে মানুষ যাকে ‘নিয়তি’, ‘ভাগ্য’ বা ‘ভবিতব্য’ বলে, সে ববকে ফের টেনে আনে অপরাধের পথে মানে নরমেধ যজ্ঞে। ছায়াকে তো মানুষ এড়িয়ে চলতে পারে না। আর মানুষ খুন যেন তার কাছে সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালানোর মতো। সব ভুলে গেলেও ‘কাজে ফিরতে’ কোনও সমস্যা হয় না। আসলে ‘নৃশংসতা’ই যেন বব চরিত্রটার সাবলীলতা। তাই একটা বাচ্চাকে হুমকি দিতে নিরীহ খরগোশকে ঘাড় মটকে সে অবলীলায় মেরে দিতে পারে! যদিও উচিত-অনুচিতের দ্বন্দ্বে বার বার ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে চরিত্রটি। এটা না থাকলে হিন্দি ছবির মার্কমারা ভিলেন ছাড়া ববকে আর কিছুই মনে হতো না। তার সঙ্গে গল্পে এসেছে সর্বনাশা ড্রাগের নেশায় যুবসমাজের বিপথে যাওয়ার অনুষঙ্গ।
চিত্রানট্য, অভিনয়, আবহসঙ্গীত, ক্যামেরা প্রথাগত আলোচনার আগে বাংলার দর্শকদের জন্য এই ছবি নিয়ে একটা অতিরিক্ত অনুচ্ছেদ যুক্ত না করলে অনুচিত হবে। সেটা হল— বাংলা তথা কলকাতার প্রাপ্তি। পুরো ছবিটিই কলকাতায় শ্যুটিং। হাওড়া ব্রিজ বা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে বাদ দিয়েও যে কল্লোলিনী তিলোত্তমাকে তুলে ধরা যায়, তা করে দেখিয়েছেন পরিচালক। এর জন্য তাঁর বাবা সুজয় ঘোষেরও নিঃসন্দেহে প্রশংসা প্রাপ্য। পাটুলির ভাসমান বাজার, উড়ালপুলের উপর দিয়ে ছুটে চলা মেট্রো রেল বা সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল— টুকরো চেনা ছবিগুলো দেখলে এখানকার দর্শক নিজের শহরটাকে রিলেট করতে পারবেন। কৌশিক চক্রবর্তী, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রজতাভ দত্ত, দিতিপ্রিয়া রায়, কাঞ্চন মল্লিক, বরুণ চন্দ, নিমাই ঘোষ— একঝাঁক টলিউড শিল্পীকে একটি হিন্দি ছবিতে পেয়ে বেশ ভালোই লাগবে। সকলেই নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। টুকরো টুকরো বাংলা সংলাপ বিশেষ করে কালীদার (পরাণ) মুখে বাংলা-হিন্দি মেশানো ডায়লগের মজা বাংলা জানা দর্শক বেশ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতে পারবেন।
ছবিটি ‘কাহানি’র বব বিশ্বাস চরিত্রটিকে নিয়ে স্পিন অফ। তাই অবধারিতভাবে অরিজিনাল বব মানে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই ছবির বব অভিষেক বচ্চনের তুলনা চলে আসবেই। হয়তো অনেকে আশাহতও হবেন। তবে, বিষয়টিকে সেভাবে না দেখে এই ছবিটিকে ইন্ডিভিজ্যুয়াল একটি ছবি ভেবে অভিষেকের অভিনয়টা উপভোগ করা যায়। এ ক্ষেত্রে চরিত্রের দ্বন্দ্বটা অনুভব করার মতো। টান টান থ্রিলার যাঁরা আশা করবেন, এই ছবি কিন্তু তেমন নয়। ক্লাইম্যাক্সও খুব সাদামাটা। বরঞ্চ, গোটা ছবি জুড়ে যে, মজার মুহূর্ত বা সংলাপগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, সেটা সত্যিই উপভোগ্য। আর এক টুকরো কলকাতাকে পেতে হলে ‘বব বিশ্বাস’ দেখাই যায়।