প্রেম-প্রণয়ে কিছু নতুনত্ব থাকবে যা বিশেষভাবে মনকে নাড়া দেবে। কোনও কিছু অতিরিক্ত আশা না করাই ... বিশদ
এক রাজকন্যার গল্প বলি শোনো। গাড়ি চড়ে স্বপ্নের রাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিল সে। এমন সময় জঙ্গলের মাঝে গাড়িখানা গাড্ডায় পড়ে আটকে গেল। রাজকন্যা তো ভেবেই অস্থির। জঙ্গলের পশু পাখিরা সব জুটল এসে তাকে সাহায্য করতে। এক পরি যাচ্ছিল সে পথে। রাজকন্যাকে দেখে সে বলল, এখান থেকে উদ্ধার পাওয়া বড্ড কঠিন। বরং ফিরে যাওয়াই ভালো। কিন্তু এত সহজে হার মানবে কি রাজকন্যা? নাকি গাড়ি সারিয়ে নতুন করে পাড়ি দেবে সে স্বপ্নের টানে? জানতে ইচ্ছে করছে তো? টম অ্যাঙ্গেলবার্গারের লেখা ‘দা প্রিন্সেস অ্যান্ড দা পিট স্টপ’ গল্প পড়লেই জানতে পারবে কী হল সেই রাজকন্যার।
যদি রূপকথার গল্প ভালো না লাগে, তাহলে রোমাঞ্চ জাগানো গল্পও আছে। এই যেমন ইয়েতির গল্প। হঠাৎ ভীষণ তুষারপাতে তোমাদেরই মতো একদল স্কুল পড়ুয়া স্কুলেই আটকে গিয়েছে। সকলের মুখ ভার। এমন সময় দারুণ এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হল তাদের। স্কুলের মাঠে উপস্থিত এক ইয়েতি! সবাই তো ইয়েতি দেখে সচকিত। তারপর? শুনবে নাকি ইয়েতির সঙ্গে স্কুল পড়ুয়াদের সেই মোলাকাতের কথা? উপায় কিন্তু হাতের মুঠোয়। এই গল্প রয়েছে পামেলা বুচার্টের লেখা ‘দেয়ার ইজ আ ইয়েতি ইন দা প্লেগ্রাউন্ড’ বইটিতে।
আর যদি জন্তু-জানোয়ার ভালো লাগে তাহলে তা-ও পাবে। আর্মাডিলো আর তার খরগোশ বন্ধুর সঙ্গে জীবনের ভালো মন্দ যাচাই করে দেখতে পারো তোমরাও। আর্মাডিলো চিজের ভীষণ ভক্ত। এদিকে বেশি চিজ খেলে শরীর খারাপ হয় তার। প্রিয় বন্ধুকে বাঁচানোর জন্য ছোট খরগোশ দারুণ এক ফন্দি আঁটল। শুনবে নাকি সেই ফন্দির কথা? জেরেমি স্ট্রংয়ের লেখা ‘আর্মাডিলো অ্যান্ড হেয়ার’ গল্পটা পড়ে নাও চট করে।
ভাবছো বুঝি কথায় পাবে এইসব বই? এগুলো সবই ডিজিটাল বই। ছাপার অক্ষরে নয়, বরং কম্পিউটারে বা স্মার্ট ফোনে অথবা ট্যাবে পড়তে পারবে এই সব গল্প। ই-বুক বা ডিজিটাল বুক এক অন্য রাজ্য। সেখানে রূপকথার রাজা-রানি আছে, জংলি পশু-পাখি আছে, বিজ্ঞানের অগাধ ভাণ্ডার আছে, আর আছে হাড় কাঁপানো সব রহস্য।
লুই অ্যান্ড্রুজের ‘দেয়ার ইজ আ জিরাফ ইন বাথ’ গল্পটা দারুণ মজার। খেলনা নিয়ে খেলতে খেলতেই হঠাৎ সেগুলো জীবন্ত হয়ে উঠল। স্নানঘরে তখন জিরাফ, ভল্লুকদের দাপাদাপি। সে এক অদ্ভুতুড়ে কাণ্ডই বটে। এই বইগুলো সবই তোমরা ইন্টারনেট থেকে বার করে নিতে পারো। কিন্ড্ল, গুড রিডস, অ্যামাজন, গুগল প্লে স্টোর ইত্যাদি সাইটে এইসব ডিজিটাল বই পাবে। কোনওটা হয়তো দাম দিয়ে কিনতে হবে, কোনওটা বা পাবে ফ্রিতে।
তা ছাড়াও এই সব হাসি মজা আর রহস্যের ই-বুকগুলো পড়া আর পড়ানোর জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরি এক কর্মশালার আয়োজন করেছে। এই লকডাউনে ঘরবন্দি অবস্থায় যাতে তোমাদের কাজের অভাব না ঘটে সেই জন্যই সাত থেকে বারো বছরের বাচ্চাদের জন্য এই আয়োজন। যদি ভাবো শুধুই বই পড়ার সুযোগ পাবে এখানে তাহলে ভুল করবে। প্রতি সপ্তাহে একগুচ্ছ ই-বুক থেকে বাছাই করে কিছু বই পড়তে দেওয়া হবে তোমাদের লাইব্রেরির তরফে। আর সপ্তাহের শেষে বসবে আলোচনাসভা। সেখানে বইটি নিয়ে তোমাদের মতামত শুনবে লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ। বইটি পড়ে সমালোচনা লিখে জানানোর সুযোগও পাবে তোমরা। কে কটা বই পড়লে তার ওপর থাকবে নানা উপহার। আর কর্মশালার শেষে তোমাদের দেওয়া হবে সার্টিফিকেট।
লাইব্রেরির ডিরেক্টর দেবাঞ্জন চক্রবর্তী বললেন, ডিজিটাল বইয়ের মতো এক অভিনব বই এনে তিনি হাজির করেছেন তোমাদের সামনে। এই ধরনের বই শুধু পড়াই নয়, শোনাও যায়। আর এমন সব বই হাতের মুঠোয় পেলে বইয়ের প্রতি তোমাদের আকর্ষণও ক্রমশ বেড়ে যাবে বলেই মনে করছেন তিনি। যখন তোমাদের অনেকটা সময় কম্পিউটারের দিকে চোখ রেখেই কেটে যাচ্ছে, তখন বই পড়ার বদলে যদি তা শোনার ব্যবস্থা করা যায়, তবে চোখকেও খানিক স্বস্তি দেওয়া যাবে। সব দিক ভেবেচিন্তেই তাই এই অভিনব কর্মশালার আয়োজন।
বই শোনার কথায় যারা অবাক হয়েছ তাদের বলি, ডিজিটাল বইয়ের দুটি ধরন। ই-বুক আর অডিও-বুক। দ্বিতীয়টি কম্পিউটারে চালিয়ে হেড ফোন কানে গুঁজে নিলে শুনতে পাবে গল্পগুলো।
মনিটরে তখন ভেসে উঠবে গল্পের সঙ্গে মানানসই নানান ছবি। অনেকটা সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা হবে তোমাদের।
এই কর্মশালায় যোগ দিতে চাইলে লগ ইন করো britishcouncil.in/library/events সাইটে। লাইব্রেরির সদস্যদের জন্য রেজিস্ট্রেশনের খরচ ৯৫০ টাকা। আর সদস্য না হলে খরচ ১৫০০ টাকা। একটি কর্মশালা এখন চলছে, পরেরটি শুরু হবে ১৪ সেপ্টেম্বর, চলবে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত।