প্রেম-প্রণয়ে কিছু নতুনত্ব থাকবে যা বিশেষভাবে মনকে নাড়া দেবে। কোনও কিছু অতিরিক্ত আশা না করাই ... বিশদ
সম্প্রতি নদীয়া জেলার একটি ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় চলছে শিক্ষকমহলে। সেখানকার একটি স্কুলে এক সহ শিক্ষকের অভিযোগ, টিচার ইনচার্জের দায়িত্ব নিতে তাঁর উপর রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু তিনি মোটেও রাজি নন সেই দায়িত্ব নিতে। এব্যাপারে অভিযোগ গিয়েছে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে। তা নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার এক দফা শুনানিও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু দায়িত্ব নিতে কেন এত অনীহা সহ শিক্ষকদের? শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, ‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক’ তকমাটি শুনতে বেশ রাশভারি। কিন্তু আদতে শুধু দায়িত্বই বাড়ে। বেতনবৃদ্ধি হয় না। উপরন্তু কাজে কোনও ভুলভ্রান্তি ধরা পড়লে আর কথাই নেই! তার দায় বর্তায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের উপর। এখন স্কুলকে কেন্দ্র করে সরকারের একগুচ্ছ প্রকল্প চলে। সেগুলি সঠিকভাবে রূপায়ণের দায়িত্বেও থাকেন তাঁরা। ফলে, স্কুল শেষ হলে দায়িত্ব ফুরোয় না। যাঁরা ছড়ি ঘোরাতে কিংবা অনৈতিক সুবিধা নিতে পছন্দ করেন, তাঁরা এই প্রস্তাবে সানন্দে রাজি হয়ে যান। আবার স্কুলের স্বার্থে দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক শিক্ষকদের সংখ্যাও বহু। তবু দায়িত্ব নিতে অনিচ্ছুক কিংবা অন্য কোনও স্বার্থে রাজি হয়েছেন, এমন শিক্ষকদের তুলনায় তাঁরা নেহাতই হাতে গোনা।
নদীয়ার করিমপুর (পশ্চিম) সার্কেলের একটি স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সম্প্রতি স্ত্রীবিয়োগ হয়েছে। মানসিক কারণে তিনি আর সেই পদে থাকতে রাজি হচ্ছেন না। কিন্তু তাঁর স্কুলের স্থায়ী শিক্ষক বলতে দু’জন। তিন বছর হল তিনি কাজে যোগ দিয়েছেন। কয়েকদিন আগে তাঁকে সেই দায়িত্ব নিতে বলা হয়। তিনি রাজি হননি। ওই শিক্ষক বলেন, তাঁর অভিজ্ঞতা কম। এছাড়া স্কুল থেকে বাড়ির দূরত্বও অনেক বেশি। তার উপর তাঁর মা পঙ্গুত্বের শিকার। বাবা হাঁপানির রোগী। তাই তিনি সবরকম সহযোগিতা করবেন। কিন্তু কিছুতেই ওই দায়িত্ব নিতে পারবেন না। যদিও ওই সার্কেলের স্কুল পরিদর্শক সোমদেব মজুমদার জানিয়ে দেন, এক্ষেত্রে শিক্ষকের রাজি-অরাজি হওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। তিনি তা নিতে বাধ্য। ওই শিক্ষক তখন তাঁকে নিয়ম অনুযায়ী ছ’মাসের জন্য দায়িত্ব দেওয়ার আর্জি জানান। অথচ, স্কুল পরিদর্শক তাঁকে অর্ডার কপি দিতে অফিসে তলব করেন। যদিও সময়সীমা উল্লেখ না থাকায় সেই শিক্ষক তা নিতে অস্বীকার করেন। এরপর স্কুল পরিদর্শক সেই অর্ডার কপি স্পিড পোস্টের মাধ্যমে ওই শিক্ষকের বাড়িতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পাশাপাশি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানের কাছেও অভিযোগ জানান তিনি। এই ঘটনা নিয়ে অবশ্য দু’জনের কেউই কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে, শিক্ষাদপ্তরের এক আধিকারিকও স্বীকার করে নিয়েছেন, এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। প্রাথমিকের পাশাপাশি মাধ্যমিক স্কুলেও এই প্রবণতা আকছার চোখে পড়ে। তবে বেশ কিছু জেলায় প্রাথমিকে ১০ বছর অন্তর হেডটিচার এইচটি (প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের পোশাকি নাম) নিয়োগ হয়। রাজ্যে এমন অনেক স্কুল রয়েছে, যেখানে ১০ বছর ধরে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক দায়িত্ব সামলে চলেছেন। সম্প্রতি বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজ ও দায়িত্ব বেড়ে যাওয়ায় তাঁরাও এবার বেঁকে বসতে শুরু করেছেন।