প্রেম-প্রণয়ে কিছু নতুনত্ব থাকবে যা বিশেষভাবে মনকে নাড়া দেবে। কোনও কিছু অতিরিক্ত আশা না করাই ... বিশদ
সেই ফেব্রুয়ারি মাসে গুরুজির সামনে শেষ বসেছিলাম তালিম নিতে। তারপর করোনার জন্য বাড়িতে আর গানের তালিম হবে কিনা বুঝতে পারছিলাম না। এপ্রিল মাসে গুরুজি ফোন করলেন। ক্লাস নেবেন অনলাইনে। এত বয়েসেও গুরুজি অনলাইনে ক্লাস নিতে পারবেন ভেবে মনটা খুশিতে ভরে উঠেছিল। শুরু হল তালিম। গান রেকর্ড করে গুরুজি পাঠিয়ে দেন। সেগুলো তৈরি করে অনলাইন ক্লাসে শোনাতে হয়। গুরুজি এত ভালো ভয়েস মেসেজ করেন, যে খুব বেশি প্রশ্ন থাকে না। ওঁর কথাগুলো মন দিয়ে শুনলেই সব বোঝা যায়। কোথায় অসুবিধা হতে পারে সব যেন গুরুজি আগে থেকে জানেন। আর সে ভাবেই নির্দেশ দেন। গানের এক অজানা জগতের সঙ্গে আমার পরিচয় হতে শুরু করেছে গুরুজির হাত ধরে। এমন অনেকের গানের লিঙ্ক উনি মাঝে মাঝে পাঠান, যাঁদের গান আমরা খুব একটা শুনি না। চিনিও না তাঁদের। যেমন ডি ভি পালুসকর, বড়ে গোলাম আলি খান প্রমুখ। শিক্ষক দিবসে আমি তাঁদের সকলকে ও আমার গুরুজিকে প্রণাম জানাই।
অনন্যব্রত সামন্ত, পঞ্চম শ্রেণী
বরানগর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়
স্যারের অনুপ্রেরণায় এগিয়ে চলেছি
শিক্ষক হলেন আমার পথপ্রদর্শক। আমার সব শিক্ষককে পছন্দ ও সম্মান করি। প্রত্যেকেই প্রণম্য। তাঁরা আমাদের জন্য যা করেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি বড় হয়ে একজন শিক্ষক হতে চাই। আমার প্রিয় বিজ্ঞানের শিক্ষক মশায়ের মতো। ক্লাস ফাইভ থেকে আমি স্যারকে অনুসরণ করতে শুরু করেছি। প্রথম যেদিন তিনি আমাদের ক্লাসে এসেছিলেন, সেই দিন থেকে। স্যারের পড়ানো, কোনও কিছু বোঝানো, ওঁর ভালোবাসা ও শাসন সবই খুব নিজের লোকের মতো। স্যার আমাকে খুব অনুপ্রাণিত করেন। শুধু পড়ানো নয়, স্যারের সাধারণ জীবনযাপন, পোশাক, মুখের সহজ সরল কথাগুলো শুনতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি স্যারকে দেখে জীবনে ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখি। আজ শিক্ষক দিবসে আমি তাঁকে আমার প্রণাম জানাই।
মানবরঞ্জন জানা, অষ্টম শ্রেণী
মিত্র ইনস্টিটিউশন (মেইন)
মা আমার প্রিয় শিক্ষিকা
প্রিয় শিক্ষিকা বলতে আমার মায়ের কথা প্রথমে মনে আসে। খেলার ফাঁকে, গল্পের মতো করে কিছু বুঝিয়ে দিতে মায়ের মতো আর কেউ নেই। তবে, সবাই বলে আমি নাকি দুরন্ত ছিলাম। তাই বকুনিও খেয়েছি। রাগ করে পড়া বন্ধ করে দিলে, মা বলত বিকেলে বেড়াতে নিয়ে যাব। রং পেন্সিলের বাক্স কিনতে হবে। আমারও রাগ কোথায় চলে যেত, অমনি বই নিয়ে বসে পড়তাম। আমার মা-ও একটি স্কুলের দিদিমণি। ছোটবেলায়, মা বাড়ি ফিরলে আমি কোনও আঁকা ছবি সামনে ধরতাম, মা আমাকে কোলে জড়িয়ে ধরত। এটা আমার খুব ভালো লাগত। আমাদের বাড়িতে পড়াশোনা নিয়ে কোনও চাপ নেই, উদ্বেগ নেই। নম্বর নিয়ে মাথাব্যথাও নেই। ভুল করলে সংশোধন অবশ্য আছে। শুধু পড়াশোনা নয়, মা আমাকে সবদিক থেকে প্রেরণা জুগিয়ে চলেন। আজকের দিনে তাই মাকে আমার ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা জানাতে চাই।
অদ্রিজা আচার্য, পঞ্চম শ্রেণী
বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাই স্কুল
প্রধান শিক্ষককে আমার প্রণাম
আমি আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক মশাইয়ের মতো হতে চাই। যদিও স্যার অবসর নিয়েছেন। তবুও যেদিন প্রথম তাঁকে দেখি, সেই দিন থেকেই তাঁকে অনুসরণ করতে শুরু করেছিলাম। স্যারের হাঁটা চলা, কথা বলা আমার মনে এক চিরস্থায়ী প্রতিচ্ছবি গড়ে দিয়েছে। স্যার বলতেন, বিদ্যালয় হল দ্বিতীয় বাড়ি। এটাকে বাড়ির মতো ভালোবাসতে হবে, যত্ন করে শিখতে হবে। আর জীবনে কোনও কিছুতে ভয় পাবে না। তাঁর স্নেহের ছায়ায় স্কুলে অনেকগুলো দিন কেটেছে আমার। আমাদের ক্লাস নিতেন যখন, স্যার যেন আমাদের বন্ধু হয়ে যেতেন। আবার স্যারকে দেখেছি, যখন দপ্তরের কাজে ব্যস্ত থেকেছেন, কাছে ঘেঁষতে ভয় হয়েছে। নিবিষ্ট মনে কাজ করছেন। শিক্ষক দিবসে স্যারকে আমার শ্রদ্ধা জানাই।
তনবীর আহমেদ, নবম শ্রেণী
গভঃ স্পনসর্ড মাল্টিপারপাস স্কুল (বয়েজ), টাকিহাউস
মুহূর্তে শিক্ষক-শিক্ষিকারা হয়ে
ওঠেন কাছের মানুষ
আমি অনেক বিষয়ই প্রাথমিকভাবে শিখেছি বাবা-মা আর আমার চারপাশের পরিবেশ থেকে। সে অর্থে তাঁরাও আমার শিক্ষক। একবার স্কুলে অনুষ্ঠিত স্নো হোয়াইট নাটকটিতে আমি দুষ্টু রানির চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা পেয়েছিলাম। বাবার কাছেই আমার প্রথম অভিনয় শেখা। এখন নাটককে ভালোবেসে ফেলেছি। আগামী দিনে আমি নাটক নিয়ে চর্চা করতে চাই। বাবাই আমার অভিনয়ের শিক্ষক। মা শিখিয়েছেন সাহিত্যকে ভালোবাসতে। তিনি আমার সাহিত্যের শিক্ষক। তবে শিক্ষক দিবসের কথা বললে প্রথমেই আসে আমার স্কুলের শিক্ষক দিবসের কথা। প্রতি বছর শিক্ষক-দিবসে আমরা তাঁদের সম্মানে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করি। অনুষ্ঠানে আমরা নাচ, গান, আবৃত্তি করি। কখনও কখনও তাঁরাও গান ও আবৃত্তি করেন। মুহূর্তেই শিক্ষক-শিক্ষিকারা হয়ে ওঠেন অনেক কাছের মানুষ। শিক্ষক দিবস আমার কাছে একটি বিশেষ দিন, যে দিনটা শেষ হলে আগামী বছরের জন্য অপেক্ষা শুরু করি।
অনমিতা নায়েক, ষষ্ঠ শ্রেণী
ডব্লু ডব্লু এ কাশিপুর ইংলিশ স্কুল
অল্প বাকি আছে, এগিয়ে যাও
করোনার কারণে বাড়িতে থেকে থেকে যখন মাঠের ফেরার স্বপ্ন দেখি, তখন দেখি আমার বিদ্যালয়ের প্রিয় শিক্ষিকা সুজাতা ম্যামকে। যিনি ট্রাকের পাশে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে বলছেন, ‘অল্প বাকি আছে, এগিয়ে যাও।’ বিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন মহকুমা, জেলা বা রাজ্যস্তরের কোনও ইভেন্টে গেলে সুজাতা ম্যাম ও আমার মা সবসময়ে আমাদের টিমের সঙ্গে থাকেন। খেলার জন্য অনেক সময় ক্লাসে অনুপস্থিত থাকি বলে লেখাপড়ায় কোনওদিনই প্রথম সারির মেয়ে হতে পারিনি। কিন্তু আমি ভালোবাসি আমার খেলার দুনিয়াকে। ডিসকাস, সটপাট এই সব থ্রোয়িং আমার শেখা সুজাতা ম্যামের কাছে। সব নিয়মকানুন উনি খুব ভালোভাবে বলে দেন ও করে দেখান। আমার খাবার পুষ্টিকর খাবারেও ওঁর সমান দৃষ্টি। আমি ভবিষ্যতে বড় একজন খেলোয়াড় হতে চাই। আন্তর্জাতিক স্তরে খেলতে চাই। সুজাতা ম্যাম, আপনি আমার পাশে থাকুন, প্লিজ। আজ শিক্ষক দিবসে আমি আমার সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাকে প্রণাম জানাই।
জয়িতা ঘোষ, অষ্টম শ্রেণী
বেগম রোকেয়া স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়
তিনি সব সময় আমার পাশে আছেন
আমার জীবনে শ্রদ্ধেয়া রিয়া ম্যামের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর সহজ সরলভাবে নাচ শেখানোর পদ্ধতি নাচের প্রতি ভীতি কাটিয়ে নাচকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে। তিন বছর বয়স থেকে তাঁর কাছে আমি ভরতনাট্যম, রবীন্দ্রনৃত্য ও নজরুলনৃত্য শিখছি। আমাকে ভালো নৃত্যশিল্পী গড়ে তুলতে তিনি সর্বদা আমার পাশে আছেন। তাঁর অকৃপণ শিক্ষাদানের নীতি তাঁকে দ্যুতিময় আলোকপ্রাপ্ত দেবদূতের মতো মানুষে পরিণত করেছে। শিক্ষক দিবসের পূর্ণলগ্নে আমি আমার সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ও আমার পথপ্রদর্শক রিয়া ম্যামকে আমার অন্তরের প্রণাম জানিয়ে এই লেখাটি শেষ করেছি।
স্নেহাসিক্তা বর, নবম শ্রেণী,
বিধাননগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
ভবিষ্যৎ গঠনের কারিগর
আমাদের বিদ্যালয়ে খুব সুন্দর করে শিক্ষক দিবস পালিত হয়। আমরা সবাই নিজস্ব চিন্তাভাবনা ও কল্পনার রং মিশিয়ে আমাদের শ্রেণীকক্ষকে সুসজ্জিত করে তুলি। শিক্ষিকাদের নানা উপহার দিই। দিনটি আমার কাছে অত্যন্ত পবিত্র দিন। মনে আছে, গতবছর আলিপুর প্রাণী উদ্যানে একটি আবৃত্তি প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়েছিল। দিদিমণিরা আমাকে বিদ্যালয়ের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দিয়েছিলেন। আমি সাহস পাইনি। তবে শিক্ষিকারা প্রতি পদক্ষেপে আমাকে উৎসাহ জুগিয়েছিলেন, অনুপ্রাণিত করেছিলেন। আমি সেই প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছিলাম। দ্বিতীয়ত, আমার জীবনে শ্রেষ্ঠ গুরু ও গুরুমা হলেন আমার বাবা-মা। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁরা আমার পাশে ‘বটগাছের ছায়া’র মতো দাঁড়িয়ে আছেন। শিক্ষক দিবসে সব শিক্ষক শিক্ষিকাকে প্রণাম।
অনন্যা পাল, দশম শ্রেণী
আলিপুর বহুমুখী রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়