প্রেম-প্রণয়ে কিছু নতুনত্ব থাকবে যা বিশেষভাবে মনকে নাড়া দেবে। কোনও কিছু অতিরিক্ত আশা না করাই ... বিশদ
পুলিস জানায়, স্রেফ সম্পত্তির লোভে সুপারি কিলার লাগিয়ে শ্বশুর ও শাশুড়িকে সে খুন করিয়েছে। পুলিস মৃত দম্পতির ছোট জামাই বান্টি সাধু ও সুপারি কিলার অজয় দাসকে বুধবার রাতে হাবড়ার জয়গাছি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত নাইন এমএম পিস্তলটিও পুলিস উদ্ধার করেছে। ধৃতদের এ দিন বারাসত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পত ১৬ সেপ্টেম্বর ভোররাতে হাবড়ার টুনিঘাটা মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা তথা সেনাবাহিনীর প্রাক্তন কর্মী রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী লীলা মণ্ডল খুন হন। রামকৃষ্ণবাবুর বড় মেয়ে ও জামাই বেশ কয়েক বছর আগে পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। নাতনিকে তাঁরা নিজেদের কাছে এনে রেখেছেন। ছোট মেয়ের বিয়ে হয়েছে হাবড়ার জয়গাছি এলাকায়। জামাইয়ের নাম বান্টি সাধু। বান্টির সঙ্গে রামকৃষ্ণবাবুর সম্পর্ক ভালো ছিল না। কারণ, বান্টি নানা অছিলায় প্রায়শই তাঁর কাছে টাকা চাইত। সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য অনেকবার চাপও দিয়েছিল। কিন্তু রামকৃষ্ণবাবু তাতে কর্ণপাত করেনি।
ওই মণ্ডল পাড়ার বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন রামকৃষ্ণবাবুর ভাই জ্যোতির্ময়বাবু। তিনিও প্রাক্তন সেনা কর্মী। জ্যোতির্ময়বাবুর নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশ পালানো স্থানীয় যুবক তন্ময় বরের সঙ্গেও মণ্ডল পরিবারের সম্পর্ক ভালো ছিল না। বর্তমানে তাঁদের মধ্যে ডিভোর্সের মামলা চলছে। তন্ময় আগে মণ্ডল বাড়িতে অ্যাসিড হামলাও করেছে। সম্প্রতি ব্যর্থ দাম্পত্যের কারণে সে মণ্ডল বাড়ির সদস্যদের খুন করার হুমকি দিয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই কারণে দম্পতি খুনের পর মণ্ডল বাড়ির সদস্যদের পাশাপাশি পুলিসেরও সন্দেহ পড়ে তন্ময়ের উপর। পুলিস তন্ময়কে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
পুলিস প্রাথমিক তদন্তে বুঝতে পারে, তন্ময় এই খুনের ঘটনায় জড়িত নয়। এরপর অপর জামাই বান্টিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায়। প্রথমে পুলিসকে সে বোকা বানানোর অপ্রাণ চেষ্টা চালায়। কিন্তু টানা জেরায় সে ভেঙে পড়ে। শেষপর্যন্ত সে সুপারি কিলার লাগিয়ে খুনের কথা স্বীকার করে। জেলা পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বান্টির মুদিখানার দোকান রয়েছে। বাজারে তার সাত থেকে আট লক্ষ টাকা দেনা হয়েছিল। সেই দেনা শোধ করার জন্য শ্বশুরের কাছে একাধিকবার টাকাও চায়। আগে একাধিকবার টাকা দিলেও এ বার রামকৃষ্ণবাবু টাকা দেননি। যা নিয়ে বান্টির আক্রোশ বেড়েছিল। সে একবার সম্পত্তির ভাগ চাইতেও এসেছিল। এরপর থেকে জামাইয়ের সঙ্গে নিহত দম্পতির সম্পর্ক ভালো ছিল না। শেষপর্যন্ত সম্পত্তির লোভে শ্বশুর ও শাশুড়িকে খুনের চক্রান্ত করে। সে স্থানীয় গাড়িচালক অজয় দাসকে সুপারি কিলার হিসেবে কাজে লাগায়। অগ্রিম হিসেবে অজয়কে সে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল। পরবর্তী কালে আরও সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। পরিকল্পনামাফিক সে পিস্তলও কিনেছিল।
জ্যোতির্ময়বাবু বলেন, ‘আমরা প্রথমে তন্ময়কে সন্দেহ করেছিলাম। কারণ, সে ওই ধরনের ছেলে। পরে জামাই বান্টিকেও সন্দেহ হয়। কারণ, দাদার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো ছিল না। দাদা ও বৌদি যেদিন মারা যায়, সেদিন সে আমাদের ঘরের সামনে দিয়ে হাসতে হাসতে যাচ্ছিল। এখন তো শুনছি, সে পুলিসি জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে। এমন নরপিশাচদের কঠোর সাজা চাই।’