প্রেম-প্রণয়ে কিছু নতুনত্ব থাকবে যা বিশেষভাবে মনকে নাড়া দেবে। কোনও কিছু অতিরিক্ত আশা না করাই ... বিশদ
বেঁচে থাকলে আগামী বুধবার শতবর্ষ পূর্ণ করতেন ভানু জেঠু। বাবা শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের কল্যাণে প্রবাদপ্রতীম শিল্পী ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় আমার কাছে ভানু জেঠুই। অভিনয় সম্পর্কে যতটা বুঝি, কোনও অভিনেতাকে দেখে যদি মনে হয় তিনি অভিনয় করছেন, তবে তিনি অভিনয়টাই জানেন না। অভিনয়ের প্রাথমিক শর্ত হল, স্বাভাবিক-সাবলীল আচরণ। যিনি ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়কে মাত্র পাঁচ মিনিটের অভিনয় দেখেছেন, তিনিও বুঝবেন ভদ্রলোক কী জাতের অভিনেতা ছিলেন। কাজটাকে ভালো থেকে আরও ভালো করার একটা অদ্ভুত খিদে ছিল ভানু জেঠুর মধ্যে। শুনেছি, রেডিওর অনুষ্ঠান হোক বা থিয়েটার... লাইভ পারফরম্যান্স থাকলেই সাধারণ টেনশনটাও তাঁর বদলে যেত প্যানিকে। বেশ কয়েক বছর অভিনয়ের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝি, ওটা করতেন বলেই এমন স্তরে পৌঁছেছিলেন... যার ধারেকাছ দিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। খুব ভালো মনে আছে, থিয়েটার করার সময় সেকেন্ড বেল বাজলেই মনে হতো, একবার বাথরুম থেকে ঘুরে আসি। এখন বুঝি, যতদিন ওই টেনশনটা আছে, আরও ভালো করার খিদেটাও থাকবে।
কমেডি বা কমিক চরিত্রদের ছবির ফ্রেমে দেখে আমরা হেসে কুটোপুটি যাই... একবার ভেবে দেখবেন তো, সেই অভিনেতাদের সঠিক কদর কি আমরা করি? মুশকিলটা এখানেই। অভিনয়ের অন্যতম সেরা ফর্ম কিন্তু কমেডিই। কারণ, কমেডি পুরোটাই নির্ভর করছে টাইমিংয়ের উপর। ধরুন একটা দারুণ সংলাপ, কিন্তু ডেলিভারির টাইমিংটা একটু এদিক-ওদিক করে ফেললেই জল পড়ে গেল। দর্শকের সেই কমেডি দেখে কান্না পাবে। আবার কাতুকুতু দিয়ে লোক হাসানোর চেষ্টা করলেও মুশকিল। কমপ্লিট অভিনেতা হতে গেলে কমেডিটা সঠিকভাবে উতরে দিতে জানতে হবে। ভানু জেঠু সেটা পারতেন। ঠিক সেই কারণেই তিনি একজন কমপ্লিট অভিনেতা। এ ব্যাপারে তর্কের অবকাশ নেই। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অভিনয় গুণে প্রতিটি চরিত্রকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতেন। চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যেতেন। এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রতিষ্ঠা পেতে তাঁর শারীরিক কাঠামো কতটা সাহায্য করেছে? আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে, প্রথম জীবনে তাঁর হাড়গিলে চেহারাটাই কি ইউএসপি ছিল? কিছুটা হয়তো ছিল। তবে তিনি তা ধরে বসে থাকেননি। চেহারা দিয়ে প্রথম দু’-চার ধাপ এগনো যায়। কিন্তু তারপর যখন দর্শকরা চেহারা চিনে ফেলেন! আর নিস্তার নেই। তখন কিন্তু অভিনয়টা করতেই হবে। না হলে অভিনেতা ‘এক্সপোজড’ হয়ে যাবেন। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম ছবি ‘জাগরণ’-এ অবশ্য কাজ পেয়েছিলেন তাঁর চেহারার জন্যই। পরিচালক বিভূতি চক্রবর্তী তাঁকে দেখে বলেছিলেন, ‘আমার ছবিতে দুর্ভিক্ষপীড়িত চিমসে চেহারার একটা চরিত্র আছে, সেটা তুমি করবে।’ আমার মনে হয়, চেহারাটাকে বাড়তি সুবিধা হিসেবে কাজে লাগিয়েছেন তিনি। আবারও বলছি, এই কারণগুলির জন্যই ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় কমপ্লিট অভিনেতা।
পরপর দু’টি আলাদা ছবিতে ভানু জেঠুর অভিনয় দেখুন, মনে হবে আলাদা মানুষ। এক বিরল প্রতিভা। এ প্রসঙ্গে ভানু জেঠু অভিনীত দু’ধরনের চরিত্রের উদাহরণ দিই। এক, ‘সাড়ে চুয়াত্তর’-এর কেদার। লিকলিকে চেহারার মেসবাড়ির ব্যাচেলর কেদারের হাসি-ঠাট্টায় মাত হয়েছিল দর্শক। তেমনই ‘নির্ধারিত শিল্পীর অনুপস্থিতিতে’, ‘অমৃতকুম্ভের সন্ধানে’-র মতো ছবিতে দর্শকদের কাঁদিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এর থেকেই বোঝা যায়, অভিনেতা হিসেবে তিনি কোন মাত্রার। তাছাড়া কমিক রোল করা এক অভিনেতা একের পর এক ছবিতে হিরো হিসেবে কাজ করছেন... এমন উদাহরণ আর কটা আছে! মেহমুদ সাহেবও বোধ হয় প্রধান চরিত্র হিসেবে অত ছবি করতে পারেননি, যতগুলি ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় করেছিলেন। অনেকেই হয়তো জানেন না, পাশের বাড়ি রিমেক হওয়ার সময় ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে আশীর্বাদ নিয়ে গিয়েছিলেন মেহমুদ সাহেব।
‘সাড়ে চুয়াত্তর’-এর প্রসঙ্গ যখন উঠলই, তখন আরও দু’চার কথা না লিখলে অন্যায় হবে। আচ্ছা ভাবুন তো, ছবির সংলাপ যে ‘মাসিমা মালপোয়া খামু’ হবে, কেউ ভেবেছিল! পরে শুনেছি, চিত্রনাট্যে সংলাপটাই নাকি ছিল না। পুরোটাই ছিল ভানু জেঠুর ‘ইম্প্রোভাইজেশন’। ভালো কিছু যেমন আমরা পরবর্তী জেনারেশনকে ‘পাস অন’ করি, এই সংলাপটাও কিন্তু আমাদের পরের প্রজন্ম আমাদের থেকেই জানতে পেরেছে। এমনভাবেই যুগ যুগ ধরে প্রাসঙ্গিকতা বজায় রেখে চলেছে তাঁর অভিনয়। স্বর্ণযুগ কি আর এমনি এমনি বলে! আসলে সেই সময় একটা পারস্পরিক আদানপ্রদান ছিল। অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে কলাকুশলী—কাজ ছাড়াও একসঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খোশগল্প করতে পারতেন। তাতে কী হতো, একটা ‘ভালো’-কে কীভাবে আরও ভালো করা যায়, মিলত তার রসদ। এখন তো আমাদের শিল্পীদের মধ্যে একসঙ্গে বসে গল্পগুজব ব্যাপারটাই উঠে গিয়েছে। আড্ডা মারতে বসলেও বেশিরভাগেরই হাতের আঙুল আর চোখ আটকে থাকে মোবাইলের স্ক্রিনে। ফলে আদানপ্রদানটা ‘ডাউনলোড-আপলোড’-এ বাঁধা পড়েছে। শুধু কিন্তু অভিনয়ের প্রতি ডেডিকেশন বা প্যাশন নয়, তখনকার শিল্পীদের মধ্যে পড়াশোনারও একটা চল ছিল। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী সত্যেন বসুর ছাত্র। কলকাতায় আসার আগে বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে নিত্য ওঠাবসা ছিল। সংগঠনের জন্য টিফিন বাক্সে রিভলবারও পাচার করতেন শুনেছি। এখনকার শিল্পীদের মতো তাঁরা উপরচালাক ছিলেন না। একটা চরিত্রকে কীভাবে আরও পারফেক্ট করা যায়, তার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিহার্সালেও কোনও অনীহা ছিল না। ভানু জেঠু নিজেই মারাত্মকভাবে রিহার্সালে বিশ্বাসী ছিলেন। এখন সে সবের আর বালাই নেই! ওঁদের হাতে কাজটার শ্রীবৃদ্ধির জন্য অফুরন্ত সময় ছিল, আমাদের ক্ষেত্রে সময়টারই বড় অভাব। কেন অভাব কেউ জানে না! আমাদের এখন সিরিয়াল-সিনেমার শ্যুটিং হয় যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে। তাহলে আর রিহার্সালটা হবে কখন!
যাক গে প্রসঙ্গে ফিরি... অভিনেতাদের ক্ষেত্রে একটা চালু ধারণা হচ্ছে, মঞ্চ ঘুরে পর্দায় এলে ধরে নেওয়া হয় তিনি অভিনয়টা জানেন। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে কিন্তু বিষয়টা ছিল পুরো উল্টো। শুনেছি, ছোটবেলায় টুকটাক নাটক করলেও সিনেমায় অভিনয়ের আগে কিন্তু তিনি পেশাগতভাবে থিয়েটার শিল্পী ছিলেন না। প্রতিভার বিচ্ছুরণে অবশ্য বায়োডেটায় থিয়েটারের অনুপস্থিতি কাল হয়ে দাঁড়ায়নি। রুপোলি পর্দা হোক কী মঞ্চ, ভানু ছিলেন ভানুতেই। কয়েকটা টুকরো টুকরো অভিজ্ঞতা আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিই...। তখন বাবা থিয়েটার করছেন। মাঝে মধ্যে বাবার সঙ্গে থিয়েটার পাড়ায় চলে যেতাম। বাবাদের শো অনেকবার দেখেছি বলে অন্য শোয়ের জন্য হয়তো ঘুরঘুর করছি। দেখা হয়ে গেল ভানু জেঠুর সঙ্গে। একগাল হেসে তাঁদের শো দেখাতে ডেকে নিতেন। এভাবেই ‘জয় মা কালী বোর্ডিং’ কমপক্ষে পাঁচবার দেখেছি। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ও সেই সময়কার শিল্পীরা অভিনয়ের দোষ-ত্রুটিগুলোও এত সাবলীলভাবে সামলে দিতেন যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দর্শক বুঝতেই পারত না। অভিনয় দিয়ে হিপনোটাইজড করে রাখতে পারতেন যেন। একটা মজার ঘটনা বলি, বাবার সঙ্গে একদিন স্টুডিওপাড়ায় গিয়েছি। ‘নিধিরাম সর্দার’ ছবির শ্যুটিং চলছে। ছবিতে এক পুলিস অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করছিলেন ভানু জেঠু। শ্যুটিং চলাকালীন ফিক করে হেসে ফেলেছিলাম। ছবিটি ডিরেক্ট সাউন্ডে হওয়ায় শট এনজি হয়ে যায়। হয়তো বিরক্তই হয়েছিলেন। ‘কে রে হাসলি’ বলে হাঁক পাড়তেই বাবা আমাকে দেখিয়ে দেন। মুহূর্তে সব বিরক্তি গায়েব। ঠোঁটের কোণে সিগনেচার হাসি। মনে আছে, কোলে বসিয়ে একসঙ্গে ছবিও তুলেছিলেন। জিজ্ঞেস করায় বলেছিলেন, ‘তুই হাসলি মানে তো আমার ছবি রিলিজের আগেই হিট...’।
বাবাকে ভানু জেঠু ডাকতেন ‘শুয়ার’ বলে। ফলে আমায় আর ভাইয়ের ক্ষেত্রে ডাকটা কী হতো বুঝতেই পারছেন। ভাই হওয়ার পর নার্সিংহোমে গিয়ে নাকি বলেছিলেন, ‘শুয়ারটার নাকি বাচ্চা হয়েছে, কোথায় সে?’ এমনই এক অদ্ভুত মজার লোক ছিলেন ভানু জেঠু। ক্যামেরার সামনে হোক কিংবা ব্যক্তিগত জীবন, সর্বক্ষণ মাতিয়ে রাখতেন। তুখোড় ‘সেন্স অব হিউমার’। যেখানে যেতেন, কথার বিচ্ছুরণে আকৃষ্ট করতে পারতেন আট থেকে আশি সবাইকে। সদা হাস্য ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়েরও কিন্তু আক্ষেপ ছিল। তা নিয়ে আত্মকথায় বিস্তারিত জানিয়েছেন স্বয়ং অভিনেতা। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজ করতে না পারার দুঃখ ‘ভানুসমগ্র’তে রয়েছে। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সত্যজিৎ রায় ছিলেন ‘লম্বা মানিক’। আক্ষেপ থাকলেও তা কিন্তু কখনও প্রতিহিংসার আকার নেয়নি। তখন ছয়ের দশক। ‘অভিনেত্রী সংঘ’ ভেঙে ‘শিল্পী সংসদ’ তৈরি করেছেন উত্তমকুমার। আড়াআড়ি বিভক্ত ইন্ডাস্ট্রি। মহানায়কের দলে রয়েছেন বিকাশ রায়, অনিল চট্টোপাধ্যায়রা। এদিকে ভানু জেঠুর পাশে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অনুপ কুমাররা। ‘শিল্পী সংসদ’ তাঁদের কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। সেই সময় জেঠুর কানে আসে, সংগঠনের পক্ষ থেকে সত্যজিৎ রায়ের ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’-এর মুক্তিতে বাধা দেওয়া হতে পারে। নিয়মিত নাকি সহ শিল্পীদের নিয়ে ‘বিজলী’ সিনেমা হলের সামনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পাহারা দিতেন তাঁরা। তখন কিন্তু ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সঙ্গে থেকে যাওয়া শিল্পীদের হাতে একটাও কাজ নেই। তাও অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়াননি। সেই সময়ের জল-হাওয়ায় তৈরি হওয়া মানুষগুলোর মন ছিল দরাজ। মেজাজ ছিল চিকন। সমান অধিকার... সাম্যে বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। নামই যে ছিল তাঁর সাম্য... সাম্য বন্দ্যোপাধ্যায়।
আমি এখনও বাবা-ভানু জেঠুদের ওই সময়টাকে মিস করি। তার একটা কারণ অবশ্যই ইন্ডাস্ট্রিতে একসঙ্গে এতজন গুণী মানুষের উপস্থিতি। ওঁরা তো শুধুমাত্র অভিনয় নিয়ে পড়ে থাকতেন না! রীতিমতো পড়াশোনা করতেন। ফাঁকা সময়ে নানা বিষয়ে আলোচনা। এখন দেখি, সমালোচনা করলেই রাতারাতি শত্রু হয়ে যেতে হয়! তখনকার শিল্পীদের মধ্যে কিন্তু এরকমটা দেখিনি। উত্তমকুমারের ইংরেজি উচ্চারণ নিয়ে লেখালিখি হওয়ায় মহানায়ক মাস্টার রেখে ইংরেজি শিখেছিলেন। একবার ভেবে দেখুন, উত্তমকুমারের মতো তারকা সমালোচনাকে গুরুত্ব দিয়ে খামতি ঢাকার চেষ্টা করছেন! আসলে তখন ‘ইগো’র মাত্রাটা এখনকার মতো ঝাড়েবংশে বৃদ্ধি পায়নি। তাই প্রবাদপ্রতিম হওয়ার সত্ত্বেও স্বর্ণযুগের শিল্পীরা পা মাটিতে রাখতে পারতেন। শুধুমাত্র জনতা বা সংবাদমাধ্যম নয়... দিকপাল ওই শিল্পীদের ভুল-ত্রুটি শুধরে নেওয়ার একটা বড় জায়গা ছিল নিজস্ব বৃত্ত। অর্থাৎ সহ শিল্পী বা সহকর্মীরা। সম্পর্কটা ধান্দা-বর্জিত থাকায় মোসাহেবি আসেনি। ওঁরা একসঙ্গে বাঁচতেন। এখন কোনও শিল্পী কড়া সমালোচনা করলে হয়তো বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কটাই নষ্ট হয়ে যাবে।
ওঁদের তৈরি করা ‘বেঞ্চমার্ক’গুলো এখনও ছোঁয়ার সাহস হয়নি। তবে স্বীকার করতে লজ্জা নেই, ভানু বন্দ্যোপায়কে অনুসরণ করি। আসলে কিছু কিছু জায়গা অন্যরকম করা যায় না। কোনও এক্সপেরিমেন্ট চলে না। গুরুরা যে পথ দেখিয়ে গিয়েছেন, সেই পথে চলাই শ্রেয়। কয়েক বছর আগে সন্দীপ রায়ের ‘যেখানে ভূতের ভয়’ ছবিটিতে আমার অভিনয় নাকি খানিক ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ছিল বলে প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলাম। আমি কিন্তু মনে মনে খুশিই হয়েছি। কিছু অন্তত শিখতে পারলাম!
দৃশ্যটা মনে পড়ছে... মাধুরীর খোঁজে গিয়েছে সিধু। ‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’ হয়ে। বলছে, ‘নন্দীদা, আমার মাধুরী এখানে আছে?’ পায়নি সে...। কিন্তু বলেছে, ‘নাই থাক, খুঁজব... ছাড়ব না...।’ কত সহজ একটা কথা। কিন্তু কী অদ্ভুত ডায়ালগ ডেলিভারি! এখনও যেন বসে আছে মাথার মধ্যে। আর আছেন মানুষটা। সময়ের সঙ্গে চলে গিয়েছেন। কিন্তু রয়ে গিয়েছেন এখানেই কোথাও। বাস্তবের মাটিতে। মঞ্চের শক্ত জমিতে। খুঁজছি যে আমরাও। সেই অভিনেতাকে। সেই শিক্ষাকে... আজও।
...............................................
গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল